চট্টগ্রাম: পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল এককভাবে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পশ্চাদ সুবিধাসহ হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প’ নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিআইডব্লিউটিএর সম্মেলন কক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, নৌবাহিনীর পক্ষে রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) আনোয়ার হোসেন, বন্দরের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, বিআইডব্লিউটিএর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ও তৎসংলগ্ন ৪৮ দশমিক ২৪ একর জায়গা বিআইডব্লিউটিএ থেকে প্রচলিত পদ্ধতিতে লিজ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এককভাবে পরিচালনা করবে।
চুক্তি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ২০৩৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ বার্ষিক নবায়নের ভিত্তিতে ১০ বছর মেয়াদে লাইসেন্স দেবে। তবে চুক্তির মেয়াদ ৩০ বছর বহাল থাকবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৯৫ শতাংশ পণ্য সড়কপথে পরিবহন হয়ে থাকে। এতে সড়কের ওপর অত্যধিক চাপসহ পরিবহন খাতে প্রচুর ব্যয় হয়। নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মূল্যে নদীপথে পণ্য পরিবহনকে উৎসাহিত ও ব্যবসাবান্ধব করার লক্ষ্যে পানগাঁও আইসিটিকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে আলোচ্য চুক্তিটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিআইডব্লিউটিএ থেকে দীর্ঘমেয়াদি সময়ের জন্য জায়গা লিজের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে। এ ছাড়াও বন্দর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পানগাঁও আইসিটিতে একটি ফ্রি কটন জোন গড়ে তোলা হবে যা দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
বন্দর সচিব জানান, বিআইডব্লিউটিএর সভা কক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পশ্চাদ সুবিধাসহ হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প; বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পটি ‘অর্পিত ক্রয়কার্য হিসেবে’ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয় সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পটি লালদিয়া-২ অঞ্চলে বাস্তবায়িত হবে এবং এর দৈর্ঘ্য ২৪০ মিটার ধরা হয়েছে।
দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হওয়া সত্ত্বেও ইতোপূর্বে এ বন্দরে ভারী কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিশেষায়িত/ডেটিকেইটেড কোনো জোট ও সুবিধাদি নির্মাণ করা হয়নি। এনসিটি বার্থ নং-৫ ভারী কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হলেও এটি মূলত কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কার্গো বেশি আমদানি করায় একটি হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। আলোচ্য প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দর ব্যবহারকারী/ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। হেডি লিফট জেটিটি প্রতি বর্গমিটারে ৫ টন ভার বহনে সক্ষম হবে। ইতোপূর্বে ভারী কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ব্যবহৃত এনসিটি বার্থ নং-৫ এর সক্ষমতা ছিল প্রতি বর্গমিটারে মাত্র ৩ টন। কাজের গুণগতমান বজায় রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে প্রকল্পটি নির্মাণে নিযুক্ত করা হয়েছে।
এআর/পিডি/টিসি