পরবর্তী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) কবে শুরু হবে, সেটি এখনও অনিশ্চিত। ডিসেম্বরে আয়োজনের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী বছরের মে মাসে হওয়ার আলোচনা চলছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়া তরুণ এক ফাস্ট বোলারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে আসন্ন বিপিএলে “নির্দেশনা অনুযায়ী” খেলার জন্য। প্রস্তাব দেন ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে তাঁরই সাবেক এক সতীর্থ।
প্রস্তাব পাওয়ার মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় বিষয়টি বিসিবিকে জানান ওই তরুণ ক্রিকেটার। পরে বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী বিভাগ (আকু) তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্ত ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি অভিযোগ সাফ অস্বীকার করেছেন বলে বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে।
নতুন অভিযুক্তের সঙ্গে পুরনো এক ক্রিকেটারকেও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যিনি বিপিএলের সর্বশেষ আসরে একাধিকবার জেরার মুখে পড়েছিলেন এবং স্পট ফিক্সিংয়ে তাঁর সম্পৃক্ততার অল্পবিস্তর প্রমাণও মিলে ছিল। তবে অদৃশ্য চাপের কারণে আকু সেই তদন্ত চালিয়ে যেতে পারেনি। স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে শ্রীলঙ্কা সফরে জাতীয় দলে খেলা ওই ক্রিকেটারের নামও উল্লেখ রয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, বিপিএলের নতুন মালিকানা কারা নিচ্ছে—সে ব্যাপারে খোঁজখবরও নিচ্ছেন তিনি। গত জুন থেকে তাঁর নানা তৎপরতা নজরদারিতে রেখেছে আকু। অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২০ জুলাই তিনি ওই তরুণ ক্রিকেটারকে বিপিএলে একটি দল পাইয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বাইরের নির্দেশনায় খেলে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের লোভনীয় প্রস্তাব দেন। তরুণ ক্রিকেটার ২৫ জুলাই বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবিকে জানান।
এদিকে, অভিযুক্ত বাঁহাতি স্পিনার, যিনি গত বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালস দলে ছিলেন, তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। প্রায় ৩০ মিনিট তাঁকে জেরা করে আকু।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতিবিরোধী বিভাগে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এমন সময়ে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্নীতিবিরোধী বিভাগের সাবেক প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল। যদিও বিসিবি জানিয়েছে, তিনি সরাসরি তদন্তে যুক্ত হবেন না। বরং বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের গতি বাড়ানো, জনবল কাঠামো এবং কর্মকর্তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
তবে বিসিবির ভেতরেই সংশয় রয়েছে—শুধু প্রশিক্ষণ দিয়ে কি অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ দাঁড় করানো সম্ভব? এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সর্বশেষ বিপিএলের সময় দুজন হাই প্রোফাইল ক্রিকেটারের জড়িত থাকার আলামত পাওয়া গিয়েছিল। এমনকি একজন জাতীয় দলের ডানহাতি পেসার ও শ্রীলঙ্কা সফরে খেলা আরেকজন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধেও প্রমাণ জোগাড় করেছিল আকু। কিন্তু বোর্ডের শীর্ষ পর্যায় থেকে তদন্ত থামিয়ে দেওয়ার পরামর্শ আসায় পুরো প্রক্রিয়াই থেমে যায়।
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ
এমএইচএম