ঢাকা, শনিবার, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৯ জুলাই ২০২৫, ২৩ মহররম ১৪৪৭

ক্রিকেট

বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্ট কাণ্ডে কোহলির দায় দেখছে কর্ণাটক সরকার

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৫৬, জুলাই ১৮, ২০২৫
বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্ট কাণ্ডে কোহলির দায় দেখছে কর্ণাটক সরকার

বেঙ্গালুরুতে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিরাট কোহলির সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ প্ররোচনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে কর্ণাটক সরকার।

গত ৪ জুন এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদদলিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু এবং অর্ধশতাধিক মানুষের আহত হওয়ার ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে, পুলিশের অনুমতি ছাড়াই আয়োজিত হয়েছিল আরসিবির বিজয় মিছিল।

অথচ সেই মিছিলের ডাক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন কোহলি নিজেই। সরকারি রিপোর্ট বলছে, এই পোস্টগুলো ব্যাপক সাড়া ফেলায়, অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রাজ্য সরকারের ‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট’-এ এই তথ্য উঠে আসে। এর দুই দিন আগে কর্ণাটক হাই কোর্ট সরকারের ‘রিপোর্ট গোপন রাখার’ আবেদন খারিজ করে রিপোর্টটি প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়।

সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, আরসিবি ম্যানেজমেন্ট, তাদের ইভেন্ট পার্টনার ডিএনএ নেটওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেড এবং কর্ণাটক রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (কেএসসিএ) পুলিশের সঙ্গে কোনও পূর্ব পরামর্শ ছাড়াই ও প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়েই বিজয় উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।

৩ জুন সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে কেএসসিএ-র সিইও শুভেন্দু ঘোষের পক্ষ থেকে কাব্বন পার্ক থানায় একটি ‘ইন্টিমেশন’ পাঠানো হয়, যাতে বলা হয়— যদি সেদিন আরসিবি আইপিএল ফাইনাল জেতে, তবে তারা পরদিন বেঙ্গালুরুতে বিজয় মিছিল করবে।

কিন্তু পুলিশ এই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়, কারণ এতে উপস্থিত জনসমাগমের পরিমাণ, নিরাপত্তা পরিকল্পনা বা আয়োজনের বিস্তারিত কিছুই উল্লেখ ছিল না। তার ওপর সময়টাও ছিল খুবই কম।

তবে এর পরও ৪ জুন সকাল ৭টা ১ মিনিটে আরসিবির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেওয়া হয়— যেখানে লেখা হয়, ‘বিধান সৌধ থেকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিজয় মিছিল হবে’।

একটি ভিডিও পোস্টে বিরাট কোহলিও সমর্থকদের সঙ্গে উদযাপনের আমন্ত্রণ জানান, যা ব্যাপক সাড়া ফেলে।

‘লিসেন্সিং অ্যান্ড কন্ট্রোলিং অব অ্যাসেম্বলিস অ্যান্ড প্রোসেশনস (ব্যাঙ্গালোর সিটি) অর্ডার, ২০০৯’ অনুসারে আরসিবি কর্তৃপক্ষ আইনগত প্রক্রিয়া মানেনি বলেই অভিযোগ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “কেবল একটি ইন্টিমেশন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নির্ধারিত ফর্মে কোনও পারমিশনের আবেদন করা হয়নি, বা প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়নি— যাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো প্রস্তুতি নিতে পারে। ”

এই ঘটনার পর আইপিএস অফিসার বিকাশ কুমারসহ চার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। কিন্তু সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (CAT) সেই বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে।

এ নিয়ে সরকার আদালতে যুক্তি দেয় যে, মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে এত বড় জমায়েত সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। সরকার পক্ষের প্রশ্ন, “ওই কর্মকর্তা কী করছিলেন? তিনি কি কোনও পদক্ষেপ নিয়েছিলেন? পুলিশের অ্যাক্ট অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি না করে বরং উদযাপনের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা করছিলেন!”

এদিকে, ঘটনার আলাদা তদন্ত করছে সিআইডি। আরসিবি ও ডিএনএ-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে রায় ঘোষণার দিন এখনো ঠিক হয়নি।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।