ঢাকা, শনিবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৩১ মে ২০২৫, ০৩ জিলহজ ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিসিবি সভাপতির বিরুদ্ধে ৮ পরিচালকের অনাস্থা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৭, মে ২৯, ২০২৫
বিসিবি সভাপতির বিরুদ্ধে ৮ পরিচালকের অনাস্থা বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাঠিয়ে চিঠি দিয়েছেন বোর্ড পরিচালকরা/সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের ওপর অনাস্থা জানিয়েছেন বোর্ডের ৮ জন পরিচালক। তারা ইতোমধ্যেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে এ বিষয়ে একটি লিখিত চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

পরিচালকদের কেউ কেউ সন্ধ্যার দিকেও এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি কিছু বলতে চাননি। কেউ কেউ ‘নো কমেন্টস’ বলে এড়িয়ে গেছেন।  এক পরিচালক অবশ্য স্পষ্ট করেই বলেন, “নো কমেন্ট মানেই বুঝে নেন, এমন কিছু হয়েছে। আকরাম খান ছাড়া আমরা বাকি সবাই অনাস্থা জানিয়েছি। ”

পরে সেই আলোচিত চিঠিটি প্রকাশ্যে আসে, যেখান থেকে জানা যায়, বোর্ড পরিচালকদের মধ্যে অনাস্থা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন- নাজমুল আবেদীন ফাহিম, ফাহিম সিনহা, মো. সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, মাহবুব উল আলম, ইফতেখার রহমান মিঠু, কাজী ইনাম আহমেদ, মো. মনজুর আলম ও মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী। একমাত্র আকরাম খান স্বাক্ষর করেননি।

পদত্যাগে অনড়, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ফারুকের

তবে এই অনাস্থা বা রাজনৈতিক চাপের মধ্যেও পদত্যাগ করতে নারাজ ফারুক আহমেদ। তার যুক্তি, তিনি একজন নির্বাচিত সভাপতি, আর কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যর্থতা না দেখালে পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না।

“আমাকে আমার ব্যর্থতার কথা বলতো, তাহলে বুঝতাম কোথায় ভুল করেছি। কিন্তু কিছুই তো বলা হয়নি। শুধু বলা হচ্ছে, ওপরমহল আমাকে চায় না। তাহলে আমি কেন পদত্যাগ করব?” —বলেন ফারুক।

তিনি আরও দাবি করেন, তাকে সরাতে ষড়যন্ত্র চলছে এবং এই ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বোর্ডে হস্তক্ষেপ করার পর থেকেই। ফারুকের ভাষায়, “তৃতীয় বিভাগের বাছাই ক্রিকেটে অনিয়মের তদন্তে বোর্ড পরিচালকদের একাংশের সম্পৃক্ততা প্রমাণ হয়েছে। বিপিএলে নতুন টিকিট বিক্রির পদ্ধতিতে অপচয় রোধ করেছি, অথচ বোর্ডের একজন পরিচালক আবার পুরনো দুর্নীতিপূর্ণ পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। আমি বাধা দিয়েছি। এখন তারাই ষড়যন্ত্র করছেন। ”

সরকারের অনিচ্ছা, কিন্তু ফারুকের সায় নেই

গত বুধবার রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর ফারুক আহমেদ প্রথম বুঝতে পারেন যে সরকার তাকে আর সভাপতি হিসেবে রাখতে চায় না। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পিছনে সরকার কোনো নির্দিষ্ট ব্যর্থতা বা ক্রিকেটীয় কারণ দেখায়নি।

ফারুক বলেন, “স্বাভাবিকভাবেই আমার প্রশ্ন ছিল—কেন আমাকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে সরকার? ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, আমাকে নাকি সরকারের ওপরমহল আর পছন্দ করছে না। এখন ওপরমহল মানে কারা, সেটা আপনারাই বুঝে নিন। ”

তবে সরকার বা পরিচালকদের চাপ থাকলেও নিজের অবস্থান থেকে সরছেন না তিনি, “আমি তো এই পদ চাইনি, কারো দরজায় যাইনি। আমাকে ডেকে এনে সভাপতি করা হয়েছিল। এখন সরাতে হলে সুনির্দিষ্ট কারণও বলা উচিত। ”

বোর্ডের কয়েকজন পরিচালকের ইঙ্গিত অনুযায়ী, শনিবার বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু সিদ্ধান্ত হতে পারে। সেখানে যদি নতুন কারো নাম প্রস্তাব করা হয় এবং বোর্ডের অধিকাংশ সদস্য তাতে একমত হন, তাহলে ফারুক আহমেদকে সভাপতির পদ ছাড়তে হতে পারে।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।