ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

শেষ সময়ে উপহারের বই সংগ্রহ করছেন আগতরা

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
শেষ সময়ে উপহারের বই সংগ্রহ করছেন আগতরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ধীরে ধীরে বিদায়ের সুর বেজে ওঠছে অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। করোনা পরিস্থিতিসহ সব মোকাবিলা করে পাঠক-দর্শনার্থীদের আগমনে সন্তুষ্ট প্রকাশকরা।

শেষ সময়ে বইমেলা উপলক্ষে পরিচিতদের বই উপহার দেওয়ার জন্য তালিকা ধরে ধরে বই কিনতে দেখা যাচ্ছে অনেককে।

রোববার (১৩ মার্চ) গ্রন্থমেলার ২৭তম দিনে ছুটির দিনের তুলনায় পাঠক-দর্শনার্থীদের কম আসলেও যারা আসছেন তাদের অধিকাংশই বই কিনছেন। বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে নিজেদের বুক রিভিউ দেখে পছন্দ করা বইয়ের খোঁজ করছেন তারা।

মেলায় এসেছেন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম। নতুন চাকরিতে যোগদানের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরিচিতই বইয়ের আবদার করেছেন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের বই খোঁজ নেওয়ার বড় সুযোগ থাকে মেলায়। কিছু বইয়ের তালিকা করে এনেছি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাইদের পছন্দমতো বই কিনে উপহার দিচ্ছি। আমাদের সবার লক্ষ্য থাকা উচিত প্রতি বইমেলা উপলক্ষে অন্তত পাঁচটা বই উপহার দেওয়া। তাহলে পাঁচজন পাঠক তৈরি হবে।

পরিচিতদের বই উপহার দেওয়ার পাশাপাশি অনেকে বিভিন্ন গ্রন্থাগারে উপহার দেওয়ার জন্যও বই কিনছেন। ঢাবি ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামে একটা লাইব্রেরি করেছি। সেখানে আমি প্রতিবছর ১০টা বই উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। যেন গ্রামে তথ্য-প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক থেকে বিরত থাকে তরুণ প্রজন্ম।

কথা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ইউনুছ বাংলানিউজকে বলেন, বইমেলায় অনেক ধরনের পাঠক আসেন। অনেকে নিজের জন্য, আবার অনেকে উপহার দেওয়ার জন্য একই বইয়ের একাধিক কপি সংগ্রহ করেন।

অপরদিকে মেলার শেষ দিকে আসেন অনেক পাঠক। এমনটাই জানালেন বইপ্রেমী রাকিবুল ইসলাম। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রতিবার শেষদিকে মেলায় আসি। কারণ অনেকে মেলার প্রথমদিকে আসে না। আর শেষ দিকে আসলে বেস্ট সেলার বইগুলো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

অমর একুশে বইমেলার ২৭তম দিনে নতুন বই এসেছে ৬৮টা। বিকেল ৪টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া: নির্ভীক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দেলওয়ার হাসান। আলোচনায় অংশগ্র নেন মোফাকখারুল ইকবাল, মো. মিনহাজ উদ্দীন এবং শেখ আদনান ফাহাদ। সভাপতিত্ব করেন আবেদ খান।

প্রাবন্ধিক বলেন, উপমহাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এক অবিস্মরণীয় নাম। মানিক মিয়া ছিলেন এ দেশের সাংবাদিকতার দিকপাল এবং চল্লিশ-পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের পূর্ববাংলার সংবাদপত্র জগতের পুরোধা, মধ্যমণি এবং নির্ভীক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। একজন ধীমান, নির্ভীক, সাহসী, সৎ এবং নিবেদিত সাংবাদিকতার সব গুণই তিনি অর্জন ও ধারণ করেছিলেন সহজ-অনায়াসে। সারাজীবন স্বদেশপ্রেম ও সংবাদ-সেবিতায় তার সুস্পষ্ট প্রয়াস এবং প্রতিফলন ছিল লক্ষ্যণীয়।

আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের গণমুখী-প্রতিবাদী সাংবাদিকতার নির্ভীক পথিকৃৎ ছিলেন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম ছিল তার সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অগ্রযাত্রায় অন্যতম সঙ্গী ছিলেন তিনি। তাই মানিক মিয়াকে মূল্যায়ন করতে হলে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ অনিবার্যভাবে চলে আসে।

সভাপতির বক্তব্যে আবেদ খান বলেন, উদার, অসাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক চেতনাসম্পন্ন নির্ভীক একজন সাংবাদিক ছিলেন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। তার সাংবাদিকতার ভাষা ছিল গণমানুষের ভাষা। তিনি শুধু একজন সাংবাদিকই ছিলেন না, একজন রাষ্ট্রনায়কসুলভ প্রজ্ঞাও তার ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, ১৩ মার্চ, ২০২২
এসকেবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।