ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

প্রকাশকদের গলার কাঁটা লকডাউন, স্টল বন্ধের সিদ্ধান্ত অনেকের

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২১
প্রকাশকদের গলার কাঁটা লকডাউন, স্টল বন্ধের সিদ্ধান্ত অনেকের ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পাওয়া বইমেলা এখন প্রকাশকদের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। চলমান লকডাউনে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেলা সচল রাখায় বইপ্রেমী শূন্য হয়ে পড়েছে মেলা প্রাঙ্গণ।

আর নিজেদের আর্থিক ক্ষতির কথা ভেবে প্রতিবাদী প্রকাশকরাই এখন মেলা বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন।

প্রকাশকরা বলছেন, একদিকে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় জনমনে শঙ্কা, অন্যদিকে লকডাউনে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। এত প্রতিকূলতা নিয়ে মানুষ মেলায় আসবে না এটাই স্বাভাবিক। মানুষই যদি না আসে তাহলে মেলা চালু রেখে লাভ কী?

ক্ষোভ প্রকাশ করে অবসর প্রকাশনীর মাসুদ রানা বলেন, আমাদের ১২ জন স্টাফকে আমরা মানা করে দিয়েছি। কারণ এই পরিস্থিতি তাদের আমাদের সঙ্গে রাখা সম্ভব নয়। গত ২৪ বছর মেলা করছি, এরকম পরিস্থিতিতে আর কখনো পড়িনি।

পারিজাত প্রকাশনীর শওকত হোসেন লিটু বলেন, এমনিতে করোনা বাড়ছে বলে মানুষ ভয় পাচ্ছে, তারপরও যারা আসতো লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে তারাও আসতে পারছে না। মানুষই যদি না আসে তাহলে আমরা কার কাছে বই বিক্রি করবো।

এদিকে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ১৫ লাখ বর্গফুট ছিল প্রায় দর্শনার্থীশূন্য। হাতে গোনা যে কয়েকজন মেলায় এসেছেন তা উল্লেখ করার মতো নয়।

এই পরিস্থিতিতে নিজেদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ অংশের ২০ জন প্রকাশক ব্যক্তি উদ্যোগে মঙ্গলবার তাদের স্টলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই স্টলগুলো হলো- ইন্তামিন, ইছামতি, শৈলী, গৌরব, স্বরবৃত্ত, একরঙা এক ঘুড়ি, রাবেয়া, গতিধারা, বটেশ্বর, নিমফিয়া, বাবুই, নওরোজ, নৃ, সুলেখা, শিল্পতরু, হাসি, দেশজ।  

ক্ষতিগ্রস্ত এসব প্রকাশকদের পক্ষে প্রকাশনা সংস্থা ইন্তামিন এর মালিক এএসএম ইউনুছ বলেন, এবারের মেলা এমনিতে জমেনি। যখন মেলায় জমে উঠতো তখন বন্ধ করা হচ্ছে। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নতুন সময়সূচির প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু বাংলা একাডেমি তাদের খেয়াল খুশি মতো কাজ করছে। আর লকডাউন দেওয়ার পরে মেলাতো মুমূর্ষু অবস্থায় চলে গেছে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় মেলায় যখন মানুষই আসতে পারছে না তখন মেলা করে লাভ কী?

তিনি বলেন, প্রতিদিন যে যাতায়াত ভাড়া ও খাবারের খরচ হয় সেই টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে বুধবার থেকে গণপরিবহন চালু হলে স্টলগুলো খোলার সম্ভাবনা আছে বলেও জানিয়েছেন অনেক প্রকাশনী।

এদিকে মঙ্গলবার মেলায় নতুন বই এসেছে ২৮টি। এগুলোর মধ্যে উপন্যাস-৪টি, প্রবন্ধ-১, কবিতা-৫, গবেষণা-২, জীবনী-২, রচনাবলি-১, মুক্তিযুদ্ধ-১, বিজ্ঞান-৩, ভ্রমণ-২, রম্য/ধাঁধা-১, ধর্মীয়-১, অনুবাদ-১ এবং অন্য বই ৪টি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২১
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।