ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বইমেলা

উপন্যাস ‘অমরাবতী’ নিয়ে মেলায় রাসেল রায়হান  

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
উপন্যাস ‘অমরাবতী’ নিয়ে মেলায় রাসেল রায়হান  

ঢাকা: একুশে বইমেলায় প্রকাশ পেয়েছে রাসেল রায়হানের দ্বিতীয় উপন্যাস- অমরাবতী। 

উপন্যাসটির প্রকাশক- চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী মাসুল হেলাল।

মূল্য ৪০০ টাকা। মেলায় চন্দ্রবিন্দুর ৬০৭ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে উপন্যাস অমরাবতী।  

এ উপন্যাসের প্লট বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেল রায়হান বলেন, এটি একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। গল্পের শুরু ঊনিশশ' সাতষট্টি সালে। বাদল আর নিখিল দুই বন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার। তাদের সামনে একটাই স্বপ্ন, পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলা। তখনকার প্রেক্ষাপটে সেটা ছিল একরকমের চ্যালেঞ্জ। কিন্তু নিখিলের সামনে বাড়তি বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার ধর্ম। এর মধ্যে শুরু হয় দুই বন্ধুর সম্পর্কের টানাপোড়েন। শেষপর্যন্ত তাদের স্বপ্ন ও জীবন--দুই-ই বাঁক নেয় একাত্তুর সালে এসে। কী পরিণতি অপেক্ষা করে তাদের সামনে! 

চট্টগ্রাম সিএমএইচে চিকিৎসা নিতে এসে রহস্যজনকভাবে মারা যাচ্ছে একের পর এক পাকিস্তানি সেনা। একদিন পায়ের পাতায় গুলি লেগে ভর্তি হওয়া এক সৈনিক যখন মারা গেল, নড়েচড়ে বসল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ওবায়েদদের কি কোনো ভূমিকা আছে? থাকলে সেটা কী? কী হতে যাচ্ছে তাদের?

কান্তা নামের এক মেয়ে ভালোবাসে বাদলকে। কিন্তু অমন ভালোবেসেও তাকে দূরে ঠেলে দেয় রহস্যময় মেয়েটি, তার ভালোবাসা অদ্ভুত রকমের। বাদলকে দূরে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে শুরু করে এক দীর্ঘ যাত্রা।  

এ ছাড়া প্রগাঢ় স্বপ্নবাজ ফরহাদ, যে তার নিজের হাতে গড়া স্কুল ধ্বংস করতে ঘুরে বেড়াচ্ছে পথে-অরণ্যে। হঠাৎ বৃষ্টিপুর গ্রামে উদয় হওয়া রহস্যময় নারী রুকাইয়া; স্বর্ণকার হরিপদ, তার পালকপুত্র জামিল; দু'বোন রুবি ও ছবি—অমরাবতী তাদের সবার স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ, আশা-আতঙ্ক, বিশ্বাস-বিশ্বাসহীনতার আখ্যান। সমান্তরালভাবে এগোতে এগোতে গল্পগুলো পৌঁছায় নির্দিষ্ট একটি মোহনায়। প্রতিটি চরিত্রকেই প্রধান মনে হবে। কিন্তু এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র মুক্তিযুদ্ধ। মানুষের ক্ষুদ্রতা আর মহত্ত্ব কীভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিবর্তন করে এমন একটি ব্যাপক ঘটনা- এ উপন্যাসে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।  

অমরাবতী লেখার পেছনে কী ধরনের চিন্তা কাজ করেছে জানতে চাইলে লেখক বলেন, এ বই আমার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে লেখা। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভীতু ধরনের মানুষ। সামান্য মারামারি দেখলেই আরেক দিকে সরে যাই। অথচ বিনা স্বার্থে স্রেফ দেশকে ভালোবেসে ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিলো, এই আত্মত্যাগের কথা ভাবলে আমি এখনো বিস্মিত হই। উপন্যাসটি লেখার স্বার্থেই আমাকে অনেক পড়তে হয়েছে। তাতে বিস্ময়ের মাত্রা বেড়েছে। শিউরে উঠেছি কখনো কখনো। কী আশ্চর্য ছিলেন সেসব মানুষ! আমি সেই মানুষগুলোর মধ্য থেকে কয়েকজনের গল্প বলতে চেয়েছি। এমন কিছু জায়গা ধরার চেষ্টা করেছি, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, সে জায়গাগুলো এর আগে স্পর্শ করা হয়নি। এই বই সামান্য হলেও আমাকে দায়মোচনের প্রশান্তি দিয়েছে।

এর আগে রাসেল রায়হানের প্রকাশিত বইগুলো হলো- উপন্যাস: একচক্ষু হরিণীরা, কবিতা: সুখী ধনুর্বিদ, বিব্রত ময়ূর, তৃতীয় অশ্বারোহী ও ইহুদির গজল।

রাসেল রায়হানের জন্ম ১৯৮৮ সালের ৬ ডিসেম্বর। বর্তমানে তিনি প্রথম আলোতে সম্পাদনা সহকারী হিসেবে কর্মরত।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।