ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩২, ০৪ মে ২০২৫, ০৬ জিলকদ ১৪৪৬

বইমেলা

বইমেলার যে স্টলে ক্রেতা-বিক্রেতা ‘সততা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০৬, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
বইমেলার যে স্টলে ক্রেতা-বিক্রেতা ‘সততা’ সততা স্টলে ক্রেতাদের ভিড়/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের ৫৪ স্টলে কোনো বিক্রেতা নেই। ক্রেতারা নিজ দায়িত্বে বই দেখছেন, পড়ছেন, কিনছেন। পছন্দ হলে বইয়ের গায়ে লেখা দাম দেখে হিসাব করে সামনে রাখা টাকার বক্সে রেখে বই নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এ যেন অন্যরকম বইমেলার চিত্র।

সাজানো বই দেখছিলেন বাড্ডা থেকে আসা বাঁধন সাহা। এমন অভিনব উদ্যোগ অবাক করেছে তাকে।

জিজ্ঞেস করলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিষয়টা আশ্চর্যজনক কিন্তু সুন্দর উদ্যোগ। যে যার মতো বই কিনবে, তালিকা অনুযায়ী নায্যমূল্য পরিশোধ করবে। এমনটাই হওয়া উচিত। এখনও বই দেখছি, পছন্দ হলে কিনবো।

একই স্টলে মা-বাবার সঙ্গে বিদ্যানন্দের বিক্রেতাবিহীন স্টলে বই দেখছিলেন সুমাইয়া কায়সার। তাকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, এই স্টলটি অন্যদের চেয়ে আলাদা। ছোটরা অনেক কিছু শিখতে পারবে এই স্টল থেকে। আমার কাছে মনে হয় এমনই হওয়া উচিত।

স্টল থেকে দূরে অবস্থান করা বিদ্যানন্দের একজন স্বেচ্ছাসেবক আরিফ মাহাদী। তার কাছে এই স্টল সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই মানুষ আসুক, দেখুক, তার বিবেক দিয়ে বিচার করে তারপর বই নিয়ে নিজেই মূল্য পরিশোধ করুক। বিদ্যানন্দ স্কুলের সততা স্টোরের আলোকেই এই স্টল করেছি আমরা।

মেলার বিদ্যানন্দ স্টলবিক্রেতা না থাকা ও বই চুরি হতে পারে জেনেও কেন এমন ব্যতিক্রমী স্টল দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সততা স্টোরে যেমন সবাই দাম দিয়ে কিনে নিয়েছে, নৈতিকতা দিয়ে মূল্য পরিশোধ করেছে, এখানেও তাই করবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো বই চুরি হয়নি। বই বিক্রি থেকে উপার্জিত অর্থ পথশিশুদের জন্য ব্যয় করা হবে।

৫৪ নম্বর স্টলে প্রায় দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায়, প্রত্যেকেই আসছেন, নিজের মতো দেখছেন। ভালো লাগলে বই কিনছেন, টাকাও বক্সে রেখে যাচ্ছেন, তুলছেন সেলফিও।

বিদ্যানন্দ নামে এই শিক্ষা সহায়ক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান আলোচনায় আসে ১ টাকায় পথশিশুদের খাবার দেওয়ার মধ্য দিয়ে। বর্তমানে ৪০ জন কর্মকর্তা ও কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। বর্তমানে দেশব্যাপী সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মৌলিক জ্ঞানে বিকশিত করার লক্ষ্যে ৮টি শাখায় ১২শ এর বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
ডিএসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।