ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

প্রাণের মেলায় তারুণ্যের বই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
প্রাণের মেলায় তারুণ্যের বই (বাঁ থেকে ওপরে) ইশতিয়াক আহমেদ, লুৎফর হাসান, ইমরান মাহফুজ, ফরিদুল ইসলাম নির্জন ও সোহেল নওরোজ<br>(বাঁ থেকে নিচে) নাদিম মজিদ, হাবীবাহ নাসরীন, মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ, শীতল বোরহান ও রিয়াজুল আলম শাওন

প্রজন্মের সঙ্গে প্রজন্মের, সংস্কৃতির সঙ্গে সংস্কৃতির, লেখকের সঙ্গে পাঠকের সেতুবন্ধন তৈরির মাধ্যম বইমেলা। প্রাণের এ মেলাকে সবুজ-প্রাণবন্ত করে তারুণ্য। সে লেখায় অথবা পাঠে। কার্যত এতেই  গড়ে ওঠে আগামীর সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব।

সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব তৈরির এ মেলায় বরাবরের মতোই প্রকাশ হয়েছে প্রজন্মের প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখকদের বই। খ্যাতিমান লেখকদের বইয়ের পাশাপাশি মেলায় বইপ্রেমীদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে তরুণ লেখকদের বই নিয়েও।

এবারের মেলায় বই নিয়ে আসা ১০ তরুণ লেখক-কবির সঙ্গে কথা বলে তাদের খবরাখবর জানাচ্ছেন হুসাইন আজাদ।
 
ইশতিয়াক আহমেদের ‘শিল্পী স্টুডিও’
সময়ের অন্যতম নন্দিত লেখক ইশতিয়াক আহমেদ নিজের প্রধান পরিচয় গল্পকার দিতে ভালোবাসেন। ভালোবাসেন গল্প বলতে। পেশা মূলত সাংবাদিকতা। নেশার কোনো শেষ নেই তার। একেক সময় একেক নেশায় ডুবে যান। নেশা শেষ হলে জীবন মূল্যহীন হয়ে যাবার কথা, তাই নেশা যেভাবে তাকে আকড়ে রাখে, তিনিও নেশাকে সেভাবে আকড়ে রাখেন। মানুষকে জানার চেয়ে বড় আগ্রহ আর কিছুতেই পান না ইশতিয়াক।
   
এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পাঠকদের জন্য তিনি নিয়ে এসেছেন উপন্যাস ‘শিল্পী স্টুডিও’। ইশতিয়াকের মতে, ‘আমার প্রতি বছর একটি করে বই প্রকাশ পায়। মানে আমি লিখতে পারি সর্বসাকুল্যে একটি। এবারও সেরকমই। ’
 
মানুষ এবং তার বিচিত্র জীবনকে উপজীব্য করে রচিত উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। প্রচ্ছদ করেছেন, ধ্রুব এষ। পাওয়া যাচ্ছে মেলার ৫০২-৫০৩ নম্বর স্টলে।
 
ইশতিয়াক আহমেদের প্রথম বই প্রকাশ হয় ২০০৯ সালে। সেটি ছিল গল্পগ্রন্থ, নাম  ‘হোটেল বনলতা আবাসিক’। এরপর ডেথ সার্টিফিকেট, মাফলার, নেইলকার্টার, আপেল শাস্ত্র, আদর্শ লিপি, সিনেমা হলের গলি সহ প্রকাশ হয়েছে মোট ১০টি বই। অবশ্য এর মাঝে একটি বেসরকারি এনজিও থেকে প্রকাশিত হয়েছে আরও দু’টি ছড়ার বই ‘ফুঁ’ এবং ‘আটটি মাছির টিম’। তারও আগে ‘ইশতিয়াক আহমেদ এবং তার ভাইব্রাদারদের গল্প’ ও ‘স্বপ্ন আর ভালোবাসার ক্যাডারদের কবিতা’ নামে দু’টি বই বের হয়।
 
‘শিল্পী স্টুডিও’ নিয়ে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, বই সম্পর্কে আমার মতামত কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আমি আমার মতো লিখেছি। পাঠক এটাকে গ্রহণও করতে পারেন। প্রত্যাখ্যানও করতে পারেন। তবে আমি জীবনকে যেভাবে দেখেছি সেটাকে প্রক্রিয়াজাত করে গল্পের মতো করে দেখানোর চেষ্টা করেছি। এটা আপনার-আমার সবার গল্প।
 
৩ বই নিয়ে লুৎফর হাসান
লুৎফর হাসান, এ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও সুরকার। গলার স্বর আর দরদ তার যেমন শ্রোতাপ্রিয়, দারুণ সমাদৃত তার কলমের ধারও। লুৎফরের কথায়, ‘আমি সারাক্ষণ এটা-সেটা লিখি। পড়ি যতটুকু সম্ভব। লিখতে ভালো লাগে, তাই নিজের আরামের জন্য লিখি। নিজের প্রশান্তির জন্য লিখি। সেটা অন্যেরা পছন্দ করলে বাড়তি পাওনা। গান করি। গানটা করি সবার জন্যই। ’ লুৎফর আগ্রহ পান– পড়তে, লিখতে, গান শুনতে, গান গাইতে। ভ্রমণ তার খুব প্রিয়।
 
লেখালেখির প্রতি আগ্রহ থেকে এবারের বইমেলায় ভক্তদের জন্য তিনি নিয়ে এসেছেন তিনটি বই। নাম- মানিব্যাগ, আয়না ভাঙা রোদ ও সুতো ছাড়া সংসার। প্রথমটি উপন্যাস, দ্বিতীয়টি কবিতাগ্রন্থ, আর তৃতীয়টি বড়গল্প। প্রথম দু’টি এসেছে দেশ পাবলিকেশন্স থেকে। শেষটি এনেছে নাগরী প্রকাশ। তিনটি বই পাওয়া যাচ্ছে স্ব স্ব প্রকাশনী দেশ পাবলিকেশন্সের ৫০২-৫০৩ নম্বর এবং নাগরী প্রকাশের ৬৩৩ নম্বর স্টলে।
 
লুৎফর হাসানের প্রথম বই প্রকাশ হয় ২০০৯ সালে। সেটি ছিল উপন্যাস, নাম হেলেঞ্চাবতী।   এরপর প্রতি মেলায় উপন্যাস প্রকাশ করে আসছেন তিনি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সগৌরবে চলিতেছে, ঝিনাইপাখি, ফেকুয়া, ঘাসফুল ও সন্ধ্যামালতীরা, ঠিকানা রাত্রিপুর, আগুন ভরা কলস, ডাকবাক্সের ডানা, নীল মলাটের গল্প, তোমার খোলা পিঠে আমার আততায়ী মেঘ।
 
নতুন তিনটি বই সম্পর্কে লুৎফর হাসানের মন্তব্য, ‘বরাবরের মতো এবারও পাঠকের হাতে থাকুক বিচারের ভার। ’
 
ইমরান মাহফুজের ৪ বই
ইমরান মাহফুজ সময়ের একজন প্রতিভাবান কবি ও গবেষক। সম্পাদনা করছেন সাহিত্য পত্রিকা ‘কালের ধ্বনি’। সৃজনশীল কাজ করে এরইমধ্যে পেয়েছেন ব্যাপক পরিচিতি। পরিশ্রম আর মেধার স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন আবুল মনসুর আহমদ গবেষণা পুরস্কার ২০১৫। তার প্রথম সম্পাদনা বইটি ‘আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পাঠ্যসহায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।
 
লেখালেখি করছেন ২০০৬ সাল থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের বইমেলায় চারটি বই নিয়ে এসেছেন তিনি। এরমধ্যে প্রথম কবিতার বই ‘দীর্ঘস্থায়ী শোকসভা’। প্রকাশক ঐতিহ্য। প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা। ২০০৬ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মা, মাটি, মানুষ, নদী, নারী, প্রকৃতি, সমাজ ও রাষ্ট্র ও রাজনীতিসহ প্রত্যক্ষ জীবন নিয়ে কবিতাগুলো রচিত। দ্বিতীয়টি সম্পাদনাগ্রন্থ, নাম ‘মুক্তিযুদ্ধ অজানা অধ্যায়’। জাগৃতি প্রকাশনী থেকে মেলায় এসেছে বইটি। প্রথমা থেকেও এসেছে আরেকটি সম্পাদনা বই। নাম ‘আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থ’। আর তৃতীয় সম্পাদনা বই ‘আবুল মনসুর আহমদ জীবন শিল্পী’ প্রকাশিত হয়েছে ডেইলি স্টার বুকস থেকে।
 
নিজের চারটি বই সম্পর্কে ইমরান মাহফুজ বলেন, আবেগের বইমেলাকে কতোটা আবেগ দিয়ে গ্রহণ করতে পারছি এবং সেই বড় উৎসবে কতোটা অস্তিত্ব জানান দিতে পারছি, তার উত্তর একজন লেখক হিসেবে এই বইগুলো।
 
ফরিদুল ইসলাম নির্জনের ‘আজো খুঁজি তারে’
প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের একজন ফরিদুল ইসলাম নির্জন। হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী, চাকরি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু তিনি ধ্যান-মগ্ন যেন সাহিত্য নিয়ে। সে কারণে দেশের প্রধান সারির প্রায় সব দৈনিক পত্রিকায় নির্জনের লেখা নজর কাড়ে সবার। রম্যধর্মী বিচিত্র বিষয়ে ফিচার-নিবন্ধ লিখলেও তার বিশেষ আগ্রহের জায়গা গল্প বলা।
 
এই গল্প বলা থেকেই গতবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নির্জন পাঠকদের উপহার দেন শিশু-কিশোর গল্পগ্রন্থ ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’। প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সাড়া ফেলে দেয় সে বই।
 
সেবারের দায়বদ্ধতা থেকেই এবারের গ্রন্থমেলায় নির্জন নিয়ে এসেছেন প্রেমের উপন্যাস ‘আজো খুঁজি তারে’। আহমেদ ফারুকের প্রচ্ছদে বইটি প্রকাশ করেছে জাগৃতি প্রকাশনী। পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ১৫৮, ১৫৯ ও ১৬০ নম্বর স্টলে।
 
বইটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল জীবন, ক্যাম্পাসে আড্ডাবাজি-খুনসুটি, প্রথম ঢাকায় আসা, মা আর গাঁয়ের প্রতি নাড়ির টানসহ মধ্য ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সমাজ-বাস্তবতা উঠে এসেছে। এরইমধ্যে তরুণ লেখকদের উপন্যাসের মধ্যে নির্জনের ‘আজো খুঁজি তারে’ আলোচনায় উঠেছে।
 
দ্বিতীয় বই ও প্রথম উপন্যাস সম্পর্কের নির্জনের বক্তব্য, গতবারের বই ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’য় বিপুল সাড়া পেয়েই এবার ‘আজো খুঁজি তারে’ লেখা। পাঠক আস্থা প্রকাশ করেছেন, সে আস্থা ধরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে এই উপন্যাস লিখতে। বাকিটা পাঠকের হাতেই থাকুক।
 
সোহেল নওরোজের ২ বই
সোহেল নওরোজ পেশায় সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। ধ্যান-জ্ঞান তার সাহিত্যকেন্দ্রিক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে সোহেল নওরোজের আগ্রহ জন্মে প্রকৃতি, পরিবেশ আর জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়ে। মনের খেয়ালে নিজের মতো করে সেইসব বলতে কলম ধরেন। তারপর থেকে লিখে চলেছেন। জাতীয় দৈনিকগুলোর সাহিত্য ও পাঠক পাতায় সোহেল নওরোজ এখন তুমুল পরিচিত নাম।
 
সোহেল ২০১৫ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সৃজনী থেকে প্রকাশ করেন প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘মেঘবালকের চিঠি’। গতবছর দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশ হয় গল্পগ্রন্থ ‘ডানাভাঙা শালিকের সুখ’।
 
এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার দু’টি বই। সময় ও জীবনকে ধারণ করা ১৪টি গল্প নিয়ে দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশ হয়েছে তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘প্রেমের আলামত পাওয়া যায়নি’। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৫০২-৫০৩ নম্বর স্টলে। আর রম্য গল্পের সংকলন ‘রম্যবাজি’ প্রকাশ করেছে পরিবার পাবলিকেশন্স। বইটিতে মোট ২২টি রম্যগল্প রয়েছে। এ বইয়েরও প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। এটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৩৪৭ নম্বর স্টলে।
 
সাহিত্য নিয়ে সোহেল নওরোজের ভাবনা আছে, কিন্তু আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। কিছু করার পরিকল্পনা থাকলে সেটা বাস্তবায়নের বাড়তি চাপ থাকে। সেটা অনেক সময় ভালো ফল বয়ে আনে না। যেভাবে লিখছেন সেভাবেই লিখে যেতে চান। তার চেনা জীবনের গল্প বলতে চান। গল্প বলায় যে আনন্দ আছে তা যেমন নিজে উপভোগ করেন, পাঠককেও সে আনন্দে সামিল করতে চান।
 
নাদিম মজিদের ‘মহাজীবন এক্সপ্রেস’
পেশায় একটি বেসরকারি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। কিন্তু দেশের প্রধান সারির দৈনিকগুলোর ফিচার পাতা খুললেই চোখে পড়ে তার নাম। নাদিম মজিদ। এ ফিচার লেখকের লেখার আধেয় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফল হওয়া তরুণদের নিয়মিত সাফল্যের গল্প।
 
সেই তরুণদের নিয়েই নাদিম মজিদ প্রায় তিন বছর ব্যয় করে লিখলেন উপন্যাস ‘মহাজীবন এক্সপ্রেস’। এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বইটি প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৫০২-৫০৩ নম্বর স্টলে।
 
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া তিন তরুণী, স্বল্পদৈর্ঘ্যর চলচ্চিত্র তৈরি করে খ্যাতি পাওয়া এক তরুণী এবং সাংবাদিক হতে চাওয়া এক তরুণের পথ চলা নিয়ে এগিয়েছে এ উপন্যাসের গল্প।
 
প্রথম বই নিয়ে নাদিম মজিদ বলেন, ‘মহাজীবন এক্সপ্রেস’ পড়ে পাঠক যেমন উপন্যাসের স্বাদ পাবেন, পাশাপাশি চারপাশে সফলতার শীর্ষে উঠা এক ঝাঁক তরুণ এবং পা পিছলে ব্যর্থ হওয়া এক তরুণী সম্পর্কে জানতে পারবেন।
 
২ বই নিয়ে হাবীবাহ নাসরীন
পেশায় পুরোদস্তুর সাংবাদিক। কিন্তু নিজেকে কবি হিসেবে পরিচয় দিতে আনন্দ পান হাবীবাহ নাসরীন। কবিতায় শক্তি আছে বলেই প্রজন্মের অন্যতম প্রতিভাবান কবি মনে করা হয় তাকে।
 
গতবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ হয় হাবীবাহ’র প্রথম বই 'কবিতা আমার মেয়ে'। সেই উপহারের পর এবারের বইমেলায় পাঠকদের জন্য তিনি এনেছেন দু’টি বই।

একটি উপন্যাস 'তুমি আছ, তুমি নেই'। প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। একজন তরুণীর যাপিত জীবনের খণ্ডচিত্র, কিছু হাহাকার, কিছু প্রাপ্তি নিয়ে লেখা। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। পাওয়া যাচ্ছে ৫০২-৫০৩ নম্বর স্টলে। অন্যটি শিশুতোষ গল্পের বই, নাম 'টুম্পা ও তার বিড়ালছানা'। ছাতা, রিমঝিমের বন্ধুরা, সাগরের মা ফুলপরীসহ মোট সাতটি গল্প রয়েছে এতে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন নাজমুল মাসুম। প্রকাশ করেছে বাবুই প্রকাশনী। পাওয়া যাচ্ছে ৩০ নম্বর স্টলে।
 
হাবীবাহ’র নেশা বই পড়া আর ভালোবাসা। আগ্রহ জীবনের গূঢ় রহস্য উদঘাটনের, হতে পারে তা মানুষের কিংবা ছোট্ট একটি বুনোফুলের।
 
নতুন দু’টি বই সম্পর্কে তিনি বলেন, লেখা নিয়ে ফাঁকিবাজি করিনি। যতটুকু সামর্থ্য ছিল, লেখার চেষ্টা করেছি। বাকিটা পাঠকের অভিমত থেকে জানা যাবে।
 
মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহর ‘অতঃপর বুঝলাম তুমি কত পর’
মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ। প্রতিশ্রুতিশীল এ সাংবাদিক নেশায় পড়ুয়া এবং লেখক। একা সময় কাটানো বা ফেসবুকিংও তার নেশা। আগ্রহ চলচ্চিত্র নির্মাণে।
 
সাংবাদিকতায় পুরোদস্তুর ব্যস্ততা সত্ত্বেও লেখার প্রতি নেশা থেকেই এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে তিনি লিখেছেন ছোটগল্পের বই ‘অতঃপর বুঝলাম তুমি কত পর’। বইটি প্রকাশ করেছে দেশ পাবলিকেশন্স। পাওয়া যাবে বইমেলার ৫০২-৫০৩ নম্বর স্টলে।
 
ছোটগল্পের এই বইয়ে ১৯টি গল্প আছে। এরমধ্যে- কলকাতার রুপা, হলিউডের দিনগুলি, উচ্চশিক্ষা, বনের চাতক মনের চাতক, সুন্দরীর সঙ্গে সহবাস, কৃষ্ণকলি উল্লেখযোগ্য।
 
তার প্রথম বই ‘নোবেল প্রাইজ’। ২০১৫ সালের বইমেলায় রম্যগল্পের বইটি প্রকাশ করে বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড। পরের বছর বের হয় ছোটগল্পের বই 'আসুখের নাম তুমি'। সেটিও প্রকাশ করে বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড।
 
নতুন বই সম্পর্কে প্রতিভাবান এ লেখকের আশাবাদ, ‘ভিন্ন স্বাদের ভিন্ন আবহের গল্পগুলো পাঠককে আনন্দ দেবে আশা করি’।
 
শীতল বোরহানের ‘অন্ধের দিনলিপি’
 ‘সাহিত্যের সংস্পর্শ ছাড়া আমি এক মুহূর্তও বাঁচতে পারবো না’। মন্তব্যটা শীতল বোরহানের। এতেই বোঝা যায় সাহিত্য তার কতোটা ধ্যান-জ্ঞান। একটি কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শীতল কাজ করছেন নিজের একটি প্রকাশনীতে। কিন্তু সাহিত্য, বিশেষত কবিতার বই নিয়েই পড়ে থাকেন তিনি।
 
যেমন শীতল বলেন, ‘আমার কাছে কবিতা হলো, নিদ্রাহীন রাতে নিদ্রাকাতরতা ভুলে থাকার একমাত্র অবলম্বন। প্রিয়ংবদা হাজার লক্ষ মাইল দূরে থেকেও তাকে মুহূর্তেই ভাব-কল্পনায় তুমুল আনন্দ-উৎসবে পাইয়ে দেয়ার একটা হাতিয়ার। আমার কাছে কবিতা মানেই 'দুমুঠো ডালভাত সঙ্গে শুকনো মরিচের আলুভর্তা' আর ‘স্বস্তির শেষ আশ্রয়’।
 
এমনই সাধনায় রচিত ২৯টি কবিতা নিয়ে কবি শীতল বোরহান এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নিয়ে এসেছেন তার প্রথম কাব্য ‘অন্ধের দিনলিপি’। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আল নোমান। বইটি প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী। পাওয়া যাবে বইমেলার ২৫৫-২৫৭ নম্বর স্টলে।
 
শীতল বোরহানের লেখালেখি শুরু ২০০৬ সাল থেকে। জাতীয় দৈনিকে তার কবিতা প্রকাশ হতে শুরু করে ২০০৯-১০ থেকে। এরপর থেকে নিরলস লিখছেন। এখন শূন্য দশকের কবিতাঙ্গনে অন্যতম পরিচিত মুখ তিনি।
 
নতুন কবিতাগ্রন্থ নিয়ে শীতল বোরহান বলেন, এই বইয়ে ২৯টি কবিতা রয়েছে। প্রতিটি কবিতাকেই সন্তান জন্মদানের মতো অনেক কষ্ট-সাধনা করে সাহিত্যাকাশের আলোর মুখ দেখিয়েছি। এখন এই কবিতাগুলোর যদি কোনোটা কালোত্তীর্ণ হয়ে যায় পাঠকের বিচারে, সেটাই সার্থকতা।
 
রিয়াজুল আলম শাওনের ‘একজন সাইকো’
রিয়াজুল আলম শাওন। অল্প সময়েই ভৌতিক, রহস্য এবং রম্য সাহিত্যে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছেন। এ তরুণ লেখক ভালোবাসার গল্পও ভালো লেখেন। ২০১৫ সালে ক্লোজআপ কাছে আসার সাহসী গল্প ‘চিনিগুঁড়া প্রেম’ লিখে বিজয়ী হয়ে সে কথার প্রমাণ রেখেছেন। ২০০২ সাল থেকে জাতীয় পত্রিকায় লেখালেখি শুরু। এরপর বিগত ১৪ বছরে দেশের প্রথম সারির পত্র-পত্রিকা এবং ম্যাগাজিনে লিখে চলেছেন। বিভিন্ন ফান ম্যাগাজিনেও লিখছেন নিয়মিত। পেশাগত দিক থেকে দেশের শীর্ষ একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করছেন।
 
এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় জাগৃতি প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হয়েছে শাওনের রহস্য গল্প সংকলন ‘একজন সাইকো’। বইটিতে ছয়টি ভিন্ন স্বাদের গল্প রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- কুকুরের দৃষ্টি, আলো আঁধারের খেলা, মাওলানা ইসহাক, শ্রাবন্তীর বাবা, ছুটি এবং একজন সাইকো। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মেহেদী হক। এটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ১৫৮, ১৫৯ ও ১৬০ নম্বর স্টলে।
 
শাওনের প্রথম বই ‘কেবিন নাম্বার ৩০৫’। সেবা প্রকাশনী থেকে ২০১৫ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইটি প্রকাশ হয়। এরপর ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয় রম্য উপন্যাস ‘বোকারাই প্রেমে পড়ে’। যেটি বইমেলায় ব্যাপক পাঠকনন্দিত হয়। ২০১৬ সালে সেবা প্রকাশনী থেকে লেখকের ‘সাধনা’ নামে আরও একটি বই প্রকাশ হয়।
 
নতুন বই ‘একজন সাইকো’ সম্পর্কে শাওন বলেন, ‘বোকারাই প্রেমে পড়ে বইটি গত বইমেলায় ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। এবার একজন সাইকোকেও পাঠকরা গ্রহণ করেছেন। আমি আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। একইসঙ্গে দায়িত্বটা বেড়ে গেছে। আরও ভালো লিখতে হবে। সামনে আরও কিছু চমক দিতে চাই পাঠকদের। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।