ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

আবু রেজার ‘দেশি ভূতের গল্প’ এনেছে শুদ্ধস্বর

রোকনুল ইসলাম কাফী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২
আবু রেজার ‘দেশি ভূতের গল্প’ এনেছে শুদ্ধস্বর

রাতে নানী-দাদীদের কাছে শুয়ে মামদো ভূতের গল্প শুনে ভয়ে কুঁকড়ে যেতে যেতে ঘুমের মধ্যে কেঁপে ওঠার শৈশব স্মৃতি কার না আছে। পরদিন আবারও সেই ভূতের গল্প শোনার বায়নাক্কা রাখতে নানী-দাদীরা আমাদের নিয়ে যেতেন নতুন কোনো ভূতের ডেরায়।



এ ছিল শিশু মনস্তত্ত্বের এক অদ্ভুত খেলা। এ যেন ভয়ের মধ্যে লুকায়িত আনন্দের উপকরণ খোঁজার চেষ্টা।

তাই তো ‘ভূত যদি না থাকবে, তবে কোত্থেকে হয় ভূতের ভয়?’ সুকুমার রায়ের এরকম চিন্তার সঙ্গে আমাদের সবার মনের প্রশ্নও তাই। মোটামুটি সব ধর্মকথায় জিন-পরী, ভূত-প্রেতের অস্তিত্ব আছে। আমাদের লোকজ কল্পকাহিনীতে নানান রকম ভূতের দেখা মেলে।

বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের এ সময়ে সায়েন্স ফিকশনও অনেকটা পৌরাণিক ছায়ায় আবর্তিত ভূতাশ্রয়ী গল্প বলে মনে হয়। তাহলে আমরা কী করে উপেক্ষা করি এমন স্বচ্ছ গল্পের জিন-পরী-ভূতকে!

লোকজ ঐতিহ্যের গল্পকার আবু রেজা’র গল্পে একাকার হয়ে গেছে পৌলিবিলের বামনভূত, ভূতের আড্ডা, কাটাখালির মেছোভূত, রাতভর ভূতের খপ্পরে, ক্যমেরাবন্দী আগুনভূত কিংবা মধ্যরাতের লাঠিভূত। মামণি, খালামণি, নানু, দাদুদের রূপকথার গল্প সাত ভাই চম্পা, সুয়োরানি-দুয়োরানি, ডালিম কুমার কিংবা সিন্দবাদের কাহিনীর সঙ্গে ছোট্টমণিরা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনেছে ভূতের গল্পও।

ভয়ে কারো গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছে কিংবা সন্ধ্যাবেলা কেউবা বারান্দায়ই যেতে চায়নি আর। তবু জলেশ্বরী রাজকুমারী জলকুমারের গল্প, নিশিরাতে নিশি পাওয়া মানুষগুলোর গল্প সাজু, বিলু, শাহীন, রতনদের হৃদয় থেকে হারিয়ে যায়নি। বরং তারা বাস্তব ভূতের দর্শন পেয়ে অনেক ঘটনার সমাধান খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে সুকুমার রায়ের মতো।

গ্রামের অভিজ্ঞতালব্ধ ও লোকজ কাহিনী উদ্বুদ্ধ লেখক আবু রেজা’র বর্তমান গ্রন্থ ‘দেশি ভূতের গল্প’ শিশু-কিশোরদের ভূত- আগ্রহী মনকে আন্দোলিত করবে বলে আশা রাখি।

এবারের একুশের বই মেলায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর স্টলে ‘দেশি ভূতের গল্প’ পাওয়া যাচ্ছে ১২৫ টাকায়। অফসেট পেপারে মুদ্রিত বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮০। প্রচ্ছদ এঁকেছেন জাহিদ হাসান বেনু।

আবু রেজা

জন্ম ১৭ ফেব্রুয়ারি , ১৯৭০

মূলত শিশু সাহিত্যিক ও ঐতিহ্যের লেখক। প্রিয় বিষয় লোকসাহিত্য ও লোকঐতিহ্য। লেখালেখির হাতেখড়ি সাপ্তাহিক পত্রিকায় রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে। পাক্ষিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন। শিশু-কিশোর মাসিক ‘টইটম্বুর’-এর সম্পাদকীয় পর্ষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযান-এ কর্মরত।

বয়স্ক সাক্ষরতা প্রাইমার ও অব্যাহত শিক্ষা উপকরণ, শিশু-শিক্ষার পাঠ্যবই ও সহপাঠ উপকরণ, ট্রেনিং ম্যানুয়ালসহ একক ও যৌথভাবে প্রকাশিত শিক্ষা উপকরণের সংখ্যা অর্ধ-শতাধিক।

বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত শিক্ষাবিষয়ক কোষগ্রস্থ ‘শিক্ষাকোষ’-এর ভুক্তি লেখক।

লেখকের প্রকাশিত অন্যান্য বই: আমার পরিচয় আমার সম্পদ (২০০০), সুন্দর পরিবেশ সুস্থ জীবন (২০০২), ভিনদেশি ভূতের গল্প (২০০৯) ও আমাদের লোকঐতিহ্য (২০১০)।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।