ঢাকা: সকালের দিকে যে মেলাটা ছিল অনেকটা শান্ত, বিকেল থেকেই তা যেন রুপ নেয় ভিন্ন চেহারায়। ভিড় আর ভিড়।
শুক্রবার ছুটির দিন বলেই ছিল বইপ্রেমীদের এ ভিড়। ছুটির দিন বলে মেলা খোলা হয় সকাল ১১টায়। লেখক-প্রকাশক সকলেই আজ উচ্ছ্বসিত। কেননা, বইয়ের বিক্রি গত দু’দিনের চেয়ে অনেক ভালো।
মেলায় লোকজনের উপচেপড়া এ ভিড় সকলের সামনে তুলে ধরতে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়াও ছিল ব্যাপক তৎপর। সারা মেলায় যেমন দেখা গেছে অসংখ্য পাঠকের ভিড়, তেমনি দেখা গেছে ক্যামেরা হাতে সাংবাদিকদের ছোটাছুটির দৃশ্য।
এর মধ্যে প্রতিবারের মতো এবারও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যাত্রা-পালার রাজার পোশাক পরিহিত মুক্তিযোদ্ধা বংশীবাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আলী খাঁ। মেলায় ভিড় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এবারের মেলায় পিঁপড়ে হাঁটারও জায়গা হবে না। সবে তো মাত্র তিন দিন। তাতেই যে অবস্থা!’
মেলায় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বেশ কয়েকজন বিদেশি অতিথিও। তাদের মধ্যে যেমন রয়েছেন কোরিয়া থেকে আগত অতিথি, তেমনি রয়েছেন প্রতিবেশি দেশ নেপাল থেকে আসা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র বিশান্ত।
বিশান্ত আজকের মেলার ভিড় দেখে অবাক হয়ে বলেন, ‘এতো মানুষ! মানুষের এতো আগ্রহ বইয়ের প্রতি! নেপালে এ রকম হয় না। ’
মেলায় এসেছিলেন ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, কথাসাহিত্যিক ইমাদাদুল হক মিলন, সুমন্ত আসলাম, রওশন আরা বাচ্চু, ইকবাল হাসান, ড. মাসুদুজ্জামান, কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালসহ অনেক কবি-সাহিত্যিক।
তবে মেলায় এতো পাঠকের ভিড়েও সকলের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক করে ধুলো। গত দু’দিন যে ধুলোর দেখা মেলেনি, আজকের ভিড়ে তাই যেন আচমকা উড়ে বেড়াতে থাকে এদিক-ওদিক। প্রশ্ন জাগে, ‘মেলায় ভিড় বাড়লে ধুলোই যদি রাজত্ব করে তাহলে মেলায় ভিড় বাড়াটা কি আমাদের জন্য হবে আক্ষেপের বিষয়?’
এ বিষয়ে মেলায় আগত কবি ইকবাল হাসান বললেন, ‘আজকের বইমেলা মেলা ধুলিময়। মেলাকে দখল করে ফেলেছে ধুলো। প্রতিবারের মতো এবারও ধুলিময় মেলা। আর একাডেমী কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কখনোই কোনো জবাব পাওয়া যায় না। ’
শুক্রবারও অনেকগুলো বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয় মেলার নজরুল মঞ্চে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, ফ্রেব্রুয়ারি ০৩, ২০১২