ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

পাওনা টাকার অঙ্ক শুনলে মাথা ঘুরে যাবে: শেখ আবদুল হাকিম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
পাওনা টাকার অঙ্ক শুনলে মাথা ঘুরে যাবে: শেখ আবদুল হাকিম

ঢাকা: মাসুদ রানার জনক কাজী আনোয়ার হোসেন হলেও, এর ২৬০টি বই লিখেছেন শেখ আবদুল হাকিম৷ যেখানে তার নাম বা কপিরাইট স্বত্ব কোনোটিই দেননি কাজী আনোয়ার হোসেন ও সেবা প্রকাশনী৷ এ বিষয়ে কপিরাইট অফিস মামলা করে রোববার (১৪ জুন) জয়লাভ করেছেন শেখ আবদুল হাকিম৷

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজকে বলেছিলেন, আমি দারুণ খুশি। মাসুদ রানার ২৬০টি এবং কুয়াশার ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে আমি স্বীকৃতি পেয়েছি।

এখন কপিরাইট আইন অনুযায়ী, আমি আমার প্রাপ্য রয়্যালটির টাকা চাই। আমার এক লড়াই শেষ হয়েছে, আরেক লড়াই শুরু হলো।

সোমবার (১৫ জুন) তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলানিউজকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷ সেখানে তিনি বলেছেন, সেবা প্রকাশনীর কাছে তার পাওনা টাকার অঙ্ক শুনলে মাথা ঘুরে যাবে৷

বাংলানিউজ: রায়ে জেতার অনুভূতি কেমন?
শেখ আবদুল হাকিম: আত্মবিশ্বাস ছিল সত্যের জয় হবে৷ আমি সন্তুষ্ট।  

বাংলানিউজ: এখন তো আপনাকে প্রতি বইয়ের লেখক হিসেবে কপিরাইট স্বত্ব পেতে আবেদন করতে হবে৷ আপনার এই কাগজপত্র কি এখন রেডি?

শেখ আবদুল হাকিম: আমি তৈরি।

বাংলানিউজ: আপনি কবে থেকে সেবায় লেখা শুরু করলেন? কত বছর সেখানে লিখেছেন?

শেখ আবদুল হাকিম: ১৯৬৬-৬৭ সালে কুয়াশা-১০ দিয়ে শুরু। তবে তারও আগে আমার বড় ভাই আমার জীবনের প্রথম লেখা উপন্যাস ‘অপরিণত পাপ’ কাজী সাহেবকে (কাজী আনোয়ার হোসেন) পড়তে দিয়েছিলেন। ওখানে ছিলাম কমবেশি ৪২ বছর।

বাংলানিউজ: আপনি তো আগেই জানতেন আপনার পাণ্ডুলিপি কাজী আনোয়ার হোসেনের নামে ছাপা হবে৷ তখন কেন মামলা বা প্রতিবাদ করেননি?

শেখ আবদুল হাকিম: কাজী সাহেব আমার নিয়োগকর্তা নন, আমি তার চাকরি করিনি। বইয়ের ভেতরে সর্বস্বত্ব প্রকাশকের লেখা থাকলেই সেটা প্রকাশকের হয় না। যেহেতু তিনি নিজেই বারবার বলেছেন তিনি লেখক নন, সে ক্ষেত্রে আমার লেখা বইগুলো কীভাবে তার হলো, কোন ক্ষমতাবলে তিনি এক বই বারবার রিপ্রিন্ট করে সমুদয় টাকার মালিক বনে গেলেন, তা তাকেই প্রমাণ করতে হবে। তিনি কি কপিরাইট অফিস থেকে সব বই কপিরাইট করিয়ে নিয়েছিলেন? তিনি কি জানেন সর্বস্বত্ব প্রকাশকের লেখার পূর্বশর্ত কী? প্রথম কথা, এই দরখাস্তের ১০ বছর আগেও কপিরাইট অফিসে আমি কাজী সাহেবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি, সেখানে আমার লেখা মাসুদ রানা এবং কুয়াশার তালিকা অবশ্যই দেওয়া ছিল। তাছাড়া, আমি হলফনামার মাধ্যমেও তখনকার রেজিস্ট্রার মহোদয়কে সবিস্তারে জানিয়ে ছিলাম কী কী বই আমি লিখেছি।

(এ উত্তরটি শেখ আবদুল হাকিমের পরামর্শ অনুযায়ী, মামলার রায়ের কপি থেকে নেওয়া)

বাংলানিউজ: এতদিন পর কেন মামলা করলেন?

শেখ আবদুল হাকিম: বহু বছর ধরে চেষ্টা করেছি তার সঙ্গে বিরোধটা মিটিয়ে ফেলতে। কিন্তু দেখা গেলো আমার পাওনা পরিশোধ করবার কোনো ইচ্ছে তাদের নেই; অগত্যা ওই প্রকাশনী থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে আমাকে, তারপর কপিরাইট অফিসকে সব জানিয়েছি।

বাংলানিউজ: আপনি বলছিলেন, প্রাপ্য অর্থের জন্য নতুন যুদ্ধ শুরু করবেন৷ আপনি সেবার কাছে কত টাকা পাওনা আছেন?

শেখ আবদুল হাকিম: শুনলে আপনার মাথা ঘুরবে! টাকার অঙ্কটা হিসাব করা হচ্ছে৷

বাংলানিউজ: গুজব উঠেছে, আপনার লেখা মাসুদ রানার বইগুলো আপনি কোনো একটি প্রকাশনীকে দিতে চান, এর সত্যতা কতটুকু?

শেখ আবদুল হাকিম: অনেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমি এখন পর্যন্ত কাউকে কোনো কথা দেইনি।

বাংলানিউজ: আপনার লেখা মাসুদ রানার বইগুলো নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

শেখ আবদুল হাকিম: সময়ই তা বলে দেবে।

আরো পড়ুন
***কাজী আনোয়ার হোসেন নন, মাসুদ রানার লেখক শেখ আবদুল হাকিম
***
আইনের পথে হাঁটবে সেবা প্রকাশনী

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
ডিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।