ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

‘নভেরা: বিভুঁইয়ে স্বভূমে’র মোড়ক উন্মোচন 

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
‘নভেরা: বিভুঁইয়ে স্বভূমে’র মোড়ক উন্মোচন 

ঢাকা: কিংবদন্তী ভাস্কর নভেরা আহমেদ আমাদের শিল্প জগতের এক অনন্য নাম। তার কাজ, শিল্পচেতনার উৎসসহ তার জগত  অনুধাবনের জায়গাগুলোতে সচেষ্ট থেকেছেন কথাশিল্পী ও শিল্পসমালোচক আনা ইসলাম। 

প্রায় দুই দশকের এই অন্বেষণে তিনি রচনা করেছেন ‘নভেরা: বিভুঁইয়ে স্বভূমে’।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো বইটির প্রকাশনা উৎসব।

বই প্রকাশনার এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।  

আলোচনা করেন নভেরা আহমেদের স্বামী গ্রেগোয়া দ্য ব্রনস, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ,  শিল্পসমালোচক মঈনউদ্দীন খালেদ এবং গ্রন্থের লেখক আনা ইসলাম।  

স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অন্যপ্রকাশ-এর প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। সমাপনী বক্তব্য দেন জার্নিম্যান বুকস এর সিইও তারিক সুজাত।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় প্রয়াত নভেরা আহমেদের শেষ সাক্ষাৎকারের তথ্যচিত্র। এই তথ্যচিত্রে নভেরার শিল্প জীবন, ব্যক্তিজীবন, বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা, বাংলা ভাষার জন্য দরদ, নিজের পাখির মতো স্বাধীনতাসহ জীবনের বিভিন্ন দিক উঠে আসে।

তথ্যচিত্রের প্রদর্শন শেষে আলোচনায় জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আমাদের ব্যর্থতা নভেরা বাংলাদেশের সর্বত্র পরিচিত নন। ভাস্কর্য চর্চার ক্ষেত্রে নভেরা পথিকৃৎ। শহীদ মিনারের সঙ্গে তার সংযোগ, তার যে সৃষ্টি, তা ভোলার মতো নয়। নভেরা তার তৎকালীন সময়ের চেয়ে অগ্রবর্তী ছিলেন। সেজন্য ঢাকার সমাজ তাকে গ্রহণ করেনি।  

‘আজ আমরা নভেরাকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি। এটা সম্ভব হয়েছে আনা ইসলামের বইটির কারণে। শ্রমলব্ধ বইটির মধ্য দিয়ে নভেরার জীবন ও কর্মের সবটাই উঠে এসেছে। বইটি নতুন করে নভেরাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। ’

শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, উপমহাদেশে নভেরার মতো ভাস্কর এখনও আসেনি। তিনি যে কতটা প্রাগ্রসর ছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় শহীদ মিনারের নকশায়। ভাষা আন্দোলনে শহীদ মিনারের অনুপ্রেরণাতেই বাংলাদেশের সৃষ্টি।

নভেরার স্বামী গ্রেগোয়া দ্য ব্রনস বলেন, পুরস্কার বা অর্থ, এসবের প্রতি নভেরার আগ্রহ ছিল না। নভেরা জীবনকে ভালোবাসতেন। নভেরা তার সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা মানুষ ছিলেন। শিল্পচর্চার ক্ষেত্রেও তাই। কোনো নিয়ম তাকে বাঁধতে পারতো না।

শিল্পসমালোচক  মঈনুদ্দিন খালেদ বলেন, আধুনিক ভাস্কর্য চর্চায়, শহীদ মিনারের নকশাকার নভেরা আহমেদের জীবনের সত্য জানতে বইটি সহায়ক হবে। এটি একটি সত্যনিষ্ঠ দলিল।

গ্রন্থের লেখক আনা ইসলাম এ সময় শহীদ মিনারের স্থপতি হিসেবে নভেরা আহমেদের নাম ঘোষণার দাবি জানান। একই সঙ্গে নভেরা আহমেদের নামে একটি সড়কের নামকরণের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

'নভেরা: বিভুঁইয়ে স্বভূমে' বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ ও জার্নিম্যান বুকস। বইটির মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার ৫০০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এইচএমএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।