ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল পুরস্কার সনজীদা-সেলিনা ও স্বরলিপির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল পুরস্কার সনজীদা-সেলিনা ও স্বরলিপির

ঢাকা: অষ্টমবারের মতো দেওয়া হলো ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার। এ বছর পুরস্কার পেয়েছেন সঙ্গীতজ্ঞ অধ্যাপক সনজীদা খাতুন, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও কবি স্বরলিপি।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সনজীদা খাতুন তার ‘নজরুল মানস’ বইটির জন্য প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ শ্রেণীতে,  কবিতা ও কথাসাহিত্য শ্রেণীতে সেলিনা হোসেন ‘সাতই মার্চের বিকেল’ বইটির জন্য এবং স্বরলিপ তার ‘মৃত্যুর পরাগায়ণ’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘হুমায়ূন আহমেদ তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার’ বিজয়ী হয়েছেন।

২০১১ সালে দেশের বরেণ্য সাহিত্যিকদের সম্মাননা জানানো এবং তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্র্যাক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। এবারের পুরস্কারে প্রথম দু’টি শাখার প্রত্যেক বিজয়ী পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন দুই লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা। আর তরুণ লেখক পেয়েছেন এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের লেখা থেকে এবং সম্মাননা স্মারক পাঠ করেন অভিনেতা ও বাচিকশিল্পী আল মনসুর, রূপা চক্রবর্ত্তী এবং রুনা খান। সেলিনা হোসেনের ওপর সম্মাননা স্মারক পাঠ করেন আবৃত্তি শিল্পী রুনা খান। অসুস্থতার কারণে উপস্থিত না হতে পারায় তার পক্ষে পুরস্কার নেন তার নাতনি সায়ন্তনী তিশা।

পুরস্কারের জন্য তিন শাখায় এবার ৪৮৭টি বই জমা পড়ে। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত বই পুরস্কারের জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়।

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কবি হেলাল হাফিজ ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক বিচারকের ভূমিকা পালন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন, সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ। বিচারকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন হেলাল হাফিজ ও আনোয়ারা সৈয়দ হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি।

আনিসুজ্জামান বলেন, কোন লেখকই পুরস্কারের জন্য লেখেন না। তবে পুরস্কার তার সৃষ্টি সম্পর্কে তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। যা তাকে আরো মহৎ সৃষ্টির প্রেরণায় প্রাণিত করেন।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের সম্পর্কে তিনি বলেন, সনজীদা খাতুনের যে বইটি পুরস্কৃত হলো, তা কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাদের পরিবারের সম্পর্কে ও তার অসাধারণ বিশ্লেষণে সমৃদ্ধ। সেলিনা হোসেনের ‘সাতই মার্চের বিকেলে’ বইটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুতঅ¡পূর্ণ অংশ হয়ে গেছে। সরল ভাষায় অসাধারণ বর্ণনা ও কল্পনার মিশ্রণে রচিত উপন্যাসটি অমূল্য সৃষ্টি হয়ে থাকবে। স্বরলিপির সৃষ্টিকর্ম জানান দিচ্ছে, তিনি অনেক দূর যেতে পারেন।

বিচারকদের পক্ষে কবি হেলাল হাফিজ বলেন, এ পুরস্কারটি ইতিমধ্যেই বাংলা সাহিত্যের একটি নান্দনিক পুরস্কারে পরিণত হয়েছে। এবার যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তারা নিজের সৃস্টির গুনাবলীর বিচারেই পুরস্কৃত হয়েছেন।

আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, সমকালের প্রয়াত সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা এ পুরস্কার সমকাল এখনও গৌরবের সঙ্গে চালু রেখেছে, এটা আনন্দের। এ পুরস্কার বাংলা সাহিত্যের জন্য মাইলফলক।

পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে সেলিনা হোসেন বলেন, এ পুরস্কার প্রবীণদের স্বীকৃতি দিচ্ছে, একইসঙ্গে তরুণদের অনুপ্রাণিত করছে। বাংলা সাহিত্যচর্চাকে উৎসাহিত করতে এ পুরস্কার বিশেষভাবে অবদান রাখছে।

স্বরলিপি তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, কবিতা আমার কাছে বৃক্ষের মতো। কবিতা অনেক বড় ক্যানভাস। সনজিদা খাতুনের পাঠানো বার্তা পাঠ করেন সায়ন্তনি তিশা। বার্তায় তিনি তাকে সম্মানিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমকালের ফিচার সম্পাদক মাহবুব আজীজ সবাইকে স্বাগত জানান। এর পর নৃত্যের ছন্দে অতিথিদের স্বাগত জানায় পূজা সেনগুপ্ত ও তার নাচের দল তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। এর পর সঙ্গীত পরিবেশন করেন নজরুলসঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস আরা।

এর আগে ২০১১ সালের ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পান সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক ও দ্রাবিড় সৈকত, ২০১২ সালে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বুলবুল চৌধুরী ও শুভাশিস সিনহা, ২০১৩ সালে মঈনুল আহসান সাবের, মাসরুর আরেফিন ও বদরুন নাহার, ২০১৪ সালে হরিশংকর জলদাস, সুস্মিতা ইসলাম ও মুজিব ইরম, ২০১৫ সালে নির্মলেন্দু গুণ, রাজকুমার সিংহ ও স্বকৃত নোমান, ২০১৬ সালে এ পুরস্কার পান ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও মাজহার সরকার এবং ২০১৭ সালে এ পুরস্কার পান অধ্যাপক যতীন সরকার, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও পিয়াস মজিদ।

বাংলাদেশ সময় ২২২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
ডিএন/ওএইচ/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।