ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

আবু তাহের সরফরাজের ৪টি কবিতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১১
আবু তাহের সরফরাজের ৪টি কবিতা

শিঙ্গা 

নীল চাঁদোয়া রাত্রি নাচে কসাইখানার পাশে

বুকের নিচে প্রেতাত্মারা দাঁত খিচিয়ে হাসে।

 

দিচ্ছে টহল রাতের পুলিশ ঘুরছে তাদের পা

মাংস ছিঁড়ে খাচ্ছিল যে, বলল খেয়ে যা।

 

চাঁদ অথবা মেঘের নিচে ঘুম-নগরী

স্বপ্ন ফেরি করে

শিঙ্গা হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে একটা ছায়া

হঠাৎ নড়েচড়ে।

 

শিঙ্গা তুমি ঘূর্ণি তুলে একটা সুরেই বাজো

প্রলয় হবে জেনেও মানুষ স্বপ্ন দ্যাখে আজও।

 

 

গেরস্থ

 

এইখানে যে পর্দা তুলে দিচ্ছে খুবই ঝড়

 সে নাচলে নাচুক শূন্য হাওয়ার ঘর।

 

বাইরে কে, তার মাথার ওপর কাঁপছে আধেক চাঁদ

ঢেউ তুলেছে নীলতোয়া মেঘ, সামনে গিরিখাদ।

 

সাবধানে পা ফেলতে গেলে বুক কাঁপে ধুকপুক

শূন্যে হাওয়া ঘূর্ণি তোলে, ঝড় তবে উঠুক।

 

ময়দানে মেঘ কাশপাতা রঙ আর সবই যা ফিকে

গেরস্থ সে ধানের গোলা রাখল চতুর্দিকে।

 

দুই হাতে যে ঝড় তুলেছে বীজ বুনেছে ঘাসে

তার শরীরে ঘাম ছুটেছে এই না মাঘের মাসে।

 

ঝড় থেমেছে জলপ্রপাতে সিক্ত ঘাসের বন

গেরস্থ সে স্বপ্নে দেখে, তুলছে খেতের শন।   

 

 

ডাকিনী 

 

যে এক ডাকিনী আছে

আমাদের পাতা গাছে

সে যদি ডাকে, কাছে

            যেতে পারব না

চৌকাঠে ফুল তোলা

ধানবীজে ভরা গোলা

চুলের বিনুনি খোলা

            পিছু ছাড়ল না।

 

দিঘিতে শাপলা ফুল

শরীরে হুলুস্থুল

খুলে দিয়ে এসো চুল

            তবু আসলো না

দুপুর এলিয়ে পড়ে

পাতা গাছে ফুল ধরে

ফুলের গন্ধে, ঝড়ে

            ঘুম আসলো না।

 

 

যে ছিল সেও নেই 

 

ওইখানে আছে হাওয়া

এইখানে আছে আগুন

আগুন জ্বালাতে পারে যে

        এমন কাউকে ডাকুন।

 

ওইখানে ছিল মেঘ

এইখানে ছিল চাঁদ

চাঁদের শরীরে লুকনো

     চন্দ্রাবতীর ফাঁদ।

 

কাছাকাছি ছিল কেউ?

নদীতে কেন ঢেউ

        তীরে এসে লাগে

কাছাকাছি কেউ নেই

যে ছিল সেও নেই

        গুণ আর ভাগে।

 

এইখানে আছে স্মৃতি

ওইখানে তার শাড়ি

স্মৃতির ভেতর খুঁড়ে

        তুলে আনতে পারি।

 

বাংলাদেশ সময় ১৭৪৫, নভেম্বর ০৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।