ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গল্প

এই সময়ের গল্প-২

আদিম | আবদুল্লাহ আল ইমরান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৭
আদিম | আবদুল্লাহ আল ইমরান আদিম

জমাট অন্ধকার হাতড়ে এগিয়ে চলেন পয়তাল্লিশ বছরের শামসুদ্দিন।

ভাপানো উষ্ণতা আর দীর্ঘপথ পেরনো ধকলে তিনি ঘেমে ওঠেন। কোঁচকানো পাঞ্জাবি আর ভেতরকার হাতাকাটা গেঞ্জি নোনা পানিতে জবুথবু।

কাঙ্ক্ষিত অনেকটা পথ চলে এসেছেন। ঘাসের মখমল বিছানো মেঠোপথ এড়িয়ে ঘুরপথে তিনি যে জায়গাটিতে যেতে চাচ্ছেন সেটি এখান থেকে দেখা যায়। সাকুল্যে মিনিট পাঁচেক বা তারও কম হাঁটাপথ।

শামসুদ্দিন তবু এইখানে, ঝোপজঙ্গলের মধ্যে একটা বয়সী আম গাছের শরীর স্পর্শ করে ঠায় দাঁড়িয়ে পড়েন। মাইল পেরনো মধ্যবয়সী লোকটির এই প্রথম খুব দুর্বল লাগছে।

হা করে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছেন। নিঃশ্বাসের শো শো শব্দ গাঢ় অন্ধকারের প্রাচীর ডিঙিয়ে আশপাশের আম-কাঠাল-নারকেল গাছসমেত নির্জন বাগানবাড়িতে ঘাই খেয়ে হারিয়ে যায় দূরে।

শামসুদ্দিন ধীরে বসে পরনের লুঙ্গিতে মুখ মোছেন। আতংকগ্রস্ত মানুষের মতো একবার পিছনে তাকিয়ে খুব সতর্কতায় মাজায় হাত বোলান। জিনিসটা ঠিকমত আছে তো! একদলা বাতাস মুখ দিয়ে বের করে আশ্বস্ত হন, জিনিসটা একেবারে লেপ্টে আছে পিঠের সঙ্গে।

শামসুদ্দিনের নিশ্বাসের গতি ফের বেড়ে যায়। অস্থির হয়ে ওঠে শরীর-মন সবকিছু। আবারও দাঁড়িয়ে, নিজের পাতলা শরীর গাছের আড়ালে সাধ্যমত ঢেকে বড় বড় চোখে সামনে তাকান। মনোযোগের পুরোটা ঢেলে আন্দাজের চেষ্টা করেন হলুদ আলোর ঘরে কয়জন আছে।

জায়গাটা খানিক দূরে হওয়ায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। তিনি আরও কিছুটা এগিয়ে যান। শুকনো ডাল-পাতা পায়ের আঘাতে খসখস্ শব্দ তোলে। যে শব্দে নিস্তব্ধতা ভেঙে জেগে ওঠে গাঢ় অন্ধকার।

ঘরটার কাছাকাছি আসতেই সতর্কতার মাত্রা আরও খানিক বাড়িয়ে দেন শামসুদ্দিন। বাগানের মধ্যস্থিত গাঢ় অন্ধকার এখানে কিছুটা পাতলা। শ্যাওলা জড়ানো ঘরটার মধ্যে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলছে। সে আলোয় চারপাশের অনেকটা আলোকিত। শামসুদ্দিনের নিজেকে আড়ালের চেষ্টা এবার বাধাগ্রস্ত হয়। লুকাবার উপযুক্ত স্থান খোঁজায় ব্যস্ত শামসুদ্দিন সেকেন্ড সেকেন্ড অস্থিরতায় ভুগে একটা ঝোপ পেয়ে যান। উবু হয়ে ঝোপের আড়ালে বসে পড়েন।

প্রকাণ্ড শিমুলগাছের নিচে টিনের ছাউনি আর কাঠের দেয়ালের ছোট্ট ঘরের আশেপাশে কোনো ঘরবাড়ি নেই। লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াতে মনুষ্যবিশেষ প্রাণীর আনাগোনা এদিকটায় কম। বিশেষ প্রয়োজন না হলে কেউ এদিকটায় আসে না। শামসুদ্দিনও কোনো কারণ ছাড়া ক্রমশ গভীর হওয়া রাতে এদিকটায় আসেননি। পোকামাকড় আর মশার কামড় সহ্য করে শামসুদ্দিনের এখানে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকার বড়সড় কারণ আছে!

ক্রমেই নিস্তেজ হতে থাকা ধোঁয়া ধোঁয়া আলোয় শামসুদ্দিন মাথা তুলে ক্লাবঘরের দরজার দিকে তাকান। দেখার চেষ্টা করেন ‘সে’ এসেছে কিনা। হাসি-ঠাট্টারত তিন-চারজন ছেলেকে দেখা যায়, বয়স পঁচিশের কোটা পেরোয়নি। তাদেরই একজন, যার পরনে কালো শার্ট আর সাদা চেক লুঙ্গি, এক কপাট খোলা দরজার মুখে বসেছে আর কারণে-অকারণে অনবরত হাসছে, তাকে দেখে শামসুদ্দিনের বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। মাথাটা চক্কর খেলো। অপেক্ষমান চোখজোড়া তড়িৎ সরিয়ে নিয়ে ঝোপের আড়ালে বসে পড়েন শামসুদ্দিন।

‘অবিকল সেই হাসি। একদম হুবহু!’ শামসুদ্দিনের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বাড়ে জ্যামিতিক হারে। ফাল্গুনের শুরুতে খুব নরম শীত শীত একটা হাওয়া বইছে, তবু তিনি ঘামতে থাকেন আর শরীরময় তেল-চিটচিটে ভাবটা ফিরে ফিরে আসতে থাকে। দমিয়ে রাখা প্রতিশোধের নেশাটা অবাধ্য ষাঁড়ের মতো তেড়ে-ফুড়ে বেড়িয়ে আসতে চাইছে!

হ্যাঁ, এমন ঘন অন্ধকারে পাগলের মতো ছুটতে ছুটতে শামসুদ্দিন এখানে এসেছেন প্রতিশোধ নিতে। কঠিন এক প্রতিশোধ নিতে হবে তাকে। বিচারের ভার নিজ হাতে তুলে নিতে যতোটা নিরুপায় আর নির্যাতিত হতে হয় শামসুদ্দিন তা হয়েছে। অবশ্য তাকে এখানে আসতেই হতো না, অপেক্ষা করতে হতো না মোক্ষম সময়ের, যদি না অমন ঘটনা দু’টো ঘটত! বিচার করনেওয়ালা মাতব্বরেরা যদি বিশেষ কারণে মৌনব্রত পালন না করতেন তাহলেও বোধহয় শামসুদ্দিনের প্রতিশোধ স্পৃহা এমনতর প্রকট হতো না। ‘বোধহয়’ বলার কারণ, কাছিবাছা গ্রামের মানুষেরা জানে কতোটা নিরীহ আর নিস্পৃহ একটা জীবন শামসুদ্দিনের।

কেউই যেহেতু এতো বড় ঘটনার জন্য কিছুই করলো না, ‘হচ্ছে-হবে’, ‘ব্যস্ত ক্যান’ বলে এড়িয়ে গেলো, শামসুদ্দিনকে তখন এখানে আসতেই হলো। ভেতরকার একগুচ্ছ তীব্র ঘৃণা তাকে এখানে নিয়ে আসতে বাধ্য করল।

মনে ডুবন্ত শোক আর প্রতিশোধের উত্তেজনা পুষে অপেক্ষা করাটা দুরহ। তবু এ মুহূর্তে আর কিছু করার নেই। যতোক্ষন না ক্লাবঘরের আলো নিভে যায় আর অনবরত হাসতে থাকা ছেলেটি যার নাম ছাব্বির, সে একাকী বাগানবাড়ির পথ ধরে ফিরতে থাকে ততোক্ষণ তাকে অপেক্ষা করতেই হবে।
দীর্ঘসময় এক যায়গায় বসে থাকার ঝক্কি সামলাতে বিঘেতখানেক স্থান পরিবর্তন করে নড়ে-চড়ে বসেন শামসুদ্দিন। মাজায় গোজা জিনিসটা তাকে যন্ত্রণায় ফেলেছে। গুটিসুটি মেরে বসে থাকায় ঠোকাঠুকি খাচ্ছে শরীরে। বিরক্তি মেশানো অনুভূতিতে শামসুদ্দিন ধীরে জিনিসটা বের করে আনেন। ক্লাবঘরের হালকা আলোয় শামসুদ্দিন জিনিসটার দিকে তাকান। অন্ধকার ভেদ করে ধারালো রুপালি অংশটা চিকচিক করে ওঠে অহংকারে। আঙুলের স্পর্শ বোলান তিনি। চেহারায় ফুটে ওঠে তৃপ্তির ছাপ। ‘যাক, আধঘণ্টা বালি দিয়ে ঘষায় শেষ পর্যন্ত এক কোপে ধড় থেকে মাথা আলাদা করার মতো মোক্ষম একটা অস্ত্র তৈরি হয়েছে’।

ছাব্বিরের শরীর থেকে এক কোপে মাথা বিচ্ছিন্ন করার এমনতর ভয়ানক পরিকল্পনা শামসুদ্দিন করেছেন মাত্র ঘণ্টা চারেক আগে। ঘরে ফিরে দেখলেন আমগাছের শক্ত ডালে সবুজ ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস নিয়েছে রূপবতী মেয়েটি। এমন দৃশ্য সইতে না পেরে ছোট্ট উঠোনে ঠায় বসে পড়েন শামসুদ্দিন। হাত খসে চারিদিকে ছড়িয়ে যায় কয়েকটা আলু, পটল আর কাকরোল।  

পুরো জগৎ হঠাৎ অন্ধকারে বিলীন হয়ে গেলো। হতভম্ভ কয়েকটা মুহূর্ত কাটল। বিলাপ করলেন কিছুক্ষণ। তারপর হঠাৎ কী হলো! রান্নাঘর থেকে বের করলেন বড় একটা দা। বালিতে দীর্ঘক্ষণ ধার দিলেন শান বাঁধানো ঘাটে। তারপর টলতে টলতে রওনা দিলেন ক্লাব ঘরের দিকে। প্রতিশোধের দুর্দমনীয় নেশায় একবারও তার মনে হয়নি, মেয়ের লাশ ডাল থেকে নামানো দরকার, দাফনের ব্যবস্থা করা দরকার!

মূল ঘটনাটা আরও দিন কতেক আগের।
বউ মরেছে আরও কয়েক বছর আগে। মা আর বাবা, সংসারে এই দু’টি প্রাণী। এক গভীর রাতে দরজায় দ্রিম দ্রিম শব্দে ঘুম ভাঙলো তাদের। মনে হলো, কেউ দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে চাইছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাঠের দরজার ভেতর থেকে লাগানো সিটকানি খুলে গেলো। ভেতরে ঢুকল চার আগুন্তুক। হাতে লম্বা ছোরা সাদৃশ্য ধাতব অস্ত্র আর চোখের নিচ থেকে গামছা জাতীয় কাপড়ে মুখ বাঁধা। হারিকেনের আবছা আলোয় ঘটে যাওয়া পরের ঘটনাগুলো এরকম-

ক. শামসুদ্দিনকে নাইলনের দড়িতে বেঁধে ফেলা হয়।

খ. টেনে-হিঁচড়ে খুলে ফেলা হয় উনিশ বছরের রুপার শরীরের সব আবরণ। রুপা চিৎকার দিলেও কেউ একজন মুখ চেপে ধরায় তা গোঙানির মতো শোনায়।

ঘ. এরপর চার যুবক রুপার শরীর নিয়ে খেলতে থাকে আদিম খেলা, বিরতিহীন।

ঙ. পৈচাশিক সেই আদিমতা থেকে অসহায় পিতার স্নেহময়ী চোখ লুকাতে প্রাণপণ চেষ্টারত শামসুদ্দিন কষ্টে-ক্ষোভে পাথর হয়ে যেতে থাকেন। বেদনার ঢল নামে। চোখ বোজার আগে তিনি দেখলেন, ধস্তাধস্তিতে হঠাৎ মুখের গামছা খুলে যাকে চেনা গেল সে ছাব্বির। রহমত মোল্লার ছেলে ছাব্বির।

পরদিন আলো ফুটলে প্রতিবেশিরা শামসুদ্দিনের বাঁধন খোলে। জ্ঞানহীন রুপাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। থানা-পুলিশের অভিজ্ঞতা নেই, শামসুদ্দিন ছোটেন চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে। বিচারের আশায়। অপরাধীর শাস্তির আশায়। সবাই উপযুক্ত বিচারের আশা দেয়। অপেক্ষা করতে বলে। মেঘে মেঘে বেলা বাড়ে। ওদিকে গ্রামময় ছড়িয়ে পড়ে, ‘শামসুদ্দিনের সেয়ানা মাইয়েডারে চাইরজন মিলে রাইতভর ধর্ষণ করিছে’।

সপ্তাহ খানেক পর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এলে গ্রামের মানুষেরা পালা করে রুপাকে দেখতে আসে। কারও চোখে সহানুভূতি, কারও চোখে আফসোস। কামনার না করুণার ঠিক বোঝা যায় না! এদিকে, শামসুদ্দিনের দৌড়াদৌড়ি আর জনমত তৈরির চেষ্টা দিন দশেকের মাথায় এসে নিস্তেজ আর অর্থহীন হয়ে পড়ে। কেননা, থানায় মামলা করতে বহু চেষ্টা করা হলেও ওসি গড়িমসি করে। চেয়ারম্যান বৈষয়িক কাজে ঘটনার কয়েক দিনের মাথায় গঞ্জে চলে যায়। ফেরার নাম নেই। মেম্বরের মেয়ের বিয়ে। মহা ধুমধাম। অন্য কাজে সময় নেই।  

এরই মধ্যে ছাব্বিরের বাবা এক বিকেলে শামসুদ্দিনকে বাজারের আড়ালে নিয়ে বলেছে, ‘ও শামছু, ঝামেলায় যাইবা ক্যান, পোলাপান মানুষ একটু না হয় দুষ্টামি করিছে, তার চে’ গোপনে কিছু টাকা দিবানে তা নিয়ে চুপ মাইরে যাও’।

বিস্ময়ের ঘোর কাটে না শামসুদ্দিনের। কথা বলতে পারে না কোনো। অগ্নিদৃষ্টিতে কেবল তাকিয়ে থাকে। শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে এক দলা থুথু ছিটিয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি। মেয়ের সম্মানহানীর ঘটনায় কিছু করতে না পারার নিদারুণ আক্ষেপে দগ্ধ হতে হতে শামসুদ্দিন বাড়ি ফিরে দেখেন, রুপা গাছের ডালে সুতোয় বাঁধা পুতুলের মতো দুলছে!

রাত বাড়ছে। তবু ক্লাব ঘরের বাতি নেভার লক্ষণ নেই। কুণ্ডলি পাকানো ধোঁয়ার মতো নানা দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরছে শামসুদ্দিনকে। এই উত্তেজনার অবসান হওয়া জরুরি। যতোক্ষন না এক কোপে ছাব্বিরের মাথাটা ধড় থেকে আলাদা করতে পারছেন, ততোক্ষণ কোনো শান্তি নেই। স্থিরতা নেই শামসুদ্দিনের।

আরও কিছুটা অস্থির সময় গড়িয়ে বেরিয়ে যায়। অন্ধকারের নিজস্ব গতি তার পরিধি বাড়ায় আর শামসুদ্দিন একটা জানোয়ারকে হত্যার আশায় জ্বলজ্বলে চোখে অপেক্ষা করতে থাকেন।

শামসুদ্দিনের অপেক্ষার প্রহর আরও  দীর্ঘ হওয়ার আগেই ঘটনা একটা ঘটল!

**টান । আকাশ মামুন

**এই সময়ের এক কুড়ি গল্প পড়ুন বাংলানিউজে

হুট করে কোত্থেকে যেনো তিন ব্যাটারির টর্চের আলো এসে পড়ল শামসুদ্দিনের ঘাপটি মেরে বসে থাকা অন্ধকার জায়গাটায়। আলোর তোড়ে ভেসে যেতে লাগল সব। ঘটনার আকস্মিকতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় শামসুদ্দিন। অন্ধকার ফুটো করে সোলেমানী তরবারির মতো তীব্রগতিতে আলো ধেয়ে আসছে পেছন থেকে। ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া দৃষ্টিতে আলোর উৎসমূলে তাকালেন তিনি। এই পরিস্থিতিরি জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। এখন কী হবে, করণীয় কী— এমন নানা চিন্তা অথবা প্রশ্ন শামসুদ্দিনের বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু করল।

শামসুদ্দিন কোনো একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবার আগেই আলোর উৎসে দাঁড়ানো অন্ধকার লোকটি চিৎকার শুরু করল, ‘ওই, তোমরা কোহানে কিডা আছো, বাগানে চোর ঢুকিছে...চোওওওওওওওওওওর’!

শামসুদ্দিন ভিমরি খান। কয়েক মুহূর্তের বিরতিতে সামনে তাকিয়ে দেখেন, ক্লাবঘর থেকে লাঠি-সোটা হাতে বেরিয়ে আসছে ছাব্বির ও অন্যান্যরা। ঘটনা যেদিকে মোড় নিচ্ছে তা অনুমান করতে পারেন শামসুদ্দিন। মুহূর্তেই হাতের রাম দা ফেলে উঠে দাঁড়ান। ধর ধর আওয়াজ ক্রমশ কাছে আসছে।

প্রতিশোধের নেশায় টগবগ করতে থাকা শামসুদ্দিন হঠাৎ কেমন নিস্তেজ হয়ে পড়েন। কী করবেন সহসাই ঠাহর করতে পারেন না। সীদ্ধান্তহীনতায়  ভোগেন। এভাবে কাটে কয়েক সেকেন্ড। তারপর সব ভাবনা ফেলে দৌড় শুরু করেন। ক্রমেই সে গতি বাড়ে। লম্বা লম্বা পা ফেলে তিনি দৌঁড়াচ্ছেন। ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছেন। শামসুদ্দিনের অপেক্ষমান চোখজোড়া ভিজে যাচ্ছে, তিনি কাঁদছেন। আদরের মেয়েটার কথা মনে পড়ে বেদনায় তার বুক ভেঙে যাচ্ছে। হাতের উল্টো পিঠে কান্নার উষ্ণ জল মুছতে মুছতে প্রাণপণ ছুটছেন শামসুদ্দিন। আর আদিম এক ক্ষুধার্ত প্রাণীর মতো পেছনে ছুটছে সমবেগ আওয়াজ, ‘চোর...চোওওওর...’!

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৭
এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।