কিংবদন্তি সোভিয়েত-রাশিয়ান ফিল্মমেকার আন্দ্রেই তারকোভস্কি [৪ এপ্রিল ১৯৩২--২৯ ডিসেম্বর ১৯৮৬]। কবিপুত্র ও অভিনেত্রী মায়ের এই সন্তানকে বিবেচনা করা হয় ফিল্ম ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম কবি হিসেবে।
তারকোভস্কি তার জীবনের নানা বাঁক, আবেগ, অনুরাগ, ক্ষোভ, হতাশা ও ব্যক্তিগত খুটিনাটি অনেক কিছু টুকে রাখতেন ডায়েরিতে। ‘টাইম উইদিন টাইম’ নামে প্রকাশিত সেই ডায়েরিও বিবেচিত হচ্ছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ফিল্ম টেক্সটবুক হিসেবে। সেখান থেকে ১৯৭৩ সালকে হাজির করা হলো এখানে।
৬ এপ্রিল
হাঙ্গেরিয়ানরা ‘রুবলেভ’কে আলাদা ভলিউমে বের করেছে।
কলাম্বিয়া [যুক্তরাষ্ট্র] ‘রুবলেভ’ বের করেছে। তারা আমাকে পনের-বিশ মিনিটের মতো ছোট করে দিতে বলেছে। বেলুন উড্ডয়ন থেকে ধরে সেটা আমি করতেই পারি।
কিছু একটা কারণে এই মুহূর্তে আমার মনে পড়ে গেল ‘রুবলেভ’-এর স্ক্রিপ্ট [তখন আমার কাছে কোনো খসড়াও ছিল না] হারানোর সময়কার কথা। গোর্কি স্ট্রিটের [দ্য ন্যাশনালের বিপরীত দিকে] কর্নারে একটা টেক্সিতে সেটা ফেলে গিয়েছিলাম। টেক্সিটি চলে গিয়েছিল। আমার অবস্থা খুবই যা-তা ছিল, আর মদ খেতে ঢুকেছিলাম। এক ঘন্টা পর দ্য ন্যাশনাল থেকে বেরিয়ে অল-ইউনিয়ন সোসাইটিতে গেলাম। দুই ঘন্টা পর আমি সেই কর্নারে এসে দাঁড়ালাম, যেখানে ম্যানুস্ক্রিপ্টটি হারিয়েছি। তখন একটা টেক্সি এসে থামল [আইন ভেঙে] এবং সেটার জানালা দিয়ে ড্রাইভার আমার দিকে ম্যানুস্ক্রিপ্টটি বাড়িয়ে দিলেন। এ এক অলৌকিক ঘটনা।
১৪ এপ্রিল
ফিল্ম পর্যবসিত হয়েছে তুচ্ছ বস্তুতে। মূলত এর কারণ হলো, তথাকথিত সিনেমাটোগ্রাফাররা এটিকে তাদের নিজ অন্তর্জগত থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। তাদের দৃষ্টিতে, ফিল্ম হলো টাকা কামানো ও বিখ্যাত হওয়ার এক সুখকর উপায়।
আমি আমার ফিল্মকে এতই বাস্তব করতে চাই, যেন এটি লড়াইয়ে সামিল হয়। ‘অবশ্যই এর সবই আমাকে বিরক্ত করবে এবং আমাকে ত্রুশবিদ্ধ করে মারার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে। ’
অভিনেতার খোঁজে লারা, মাশা সি. ও মুরাস্কো গেছেন লেনিনগ্রাদে। এরপর তারা যাবেন পস্কোভ, নভগরদ ও পেত্রোজাভোদস্কে। আর কই যে যাবেন, জানি না...।
বার্নার্ড শ’র লেখা পড়ছি আমি।
‘এটা বিস্ময়কর নয় যে, একজন অভিনেতার সবচেয়ে অমার্জনীয় অপরাধ হলো তার নিজের রূপ ধারণের বদলে যে চরিত্রে অভিনয় করছেন- সেই ব্যক্তি হয়ে ওঠা। ’
১৫ এপ্রিল
‘রুবলেভ’ চলছে হাঙ্গেরি জুড়ে।
২ জুন
হাঁটাচলার শব্দ নেই কোনো, নেই কড়া নাড়া
হলের পাটাতন গাইছে না কিছু
পার্টির নিস্প্রভ বেপরোয়াভাব-
লেগে আছে আমাদের চোখে।
বিশ্বাস কেউ করে না এখন
আমার অর্থহীন ভবিষ্যদ্বাণী
এখন কেবল একটা ফাঁকা বাড়ি
দরজারা বন্ধ আছে আলতোভাবে।
জানালাতে তারা বেঁধেছে লেইসফিতা
আর তাতে ঢেকেছে ফ্রেমগুলো।
নিস্তেজ সূর্য পড়ে আছে পাশে
রাস্তায় আলোর ধূলিকা,
পথের ধূলির চেয়েও আলোকময়।
৩ জুন
আজ তাহলে বিদায় প্রিয়তম,
প্রিয় জন্মগ্রাম আমার।
অনুভূতি- জানালা আমার বাড়ির
মনে পড়ে না।
ঝোপের পেছনে ছুটি
দূরবর্তী নীল দিগন্ত
নিরানন্দের পানে--[ভারাক্রান্ত এক]*
নিরানন্দ হতে--[স্ক্রিন এক। ]
আমি দৌড়াই, না ভেবেই
কোনো এক শেষের দিকে,
অন্যকারো দাসত্ব হতে
জাদুকরি এক মুকুট হতে।
কীভাবে বাঁচব আমি, ভাবব কেমন করে
উৎফুল্ল পৃথিবীর কথা
কীভাবে করব ধারণ
তুমি চাইছ যা যা?
-----------------------------------
তোমাকে ভেবেছিলাম আমার প্রেমিকা
তুমি তো নও তা আসলে।
এই কুয়াশায়- ক্লান্ত আমার ঘোড়া,
কামড়ে পড়ে আছে জিন-বাঁধার বেল্ট।
আনন্দ আমাকে রয়েছে ঘিরে
নেই তো ভয় আমার কোনো।
আমার ভাবনাগুলো আমি এখন
ঠিকঠাক উঠতে পারি বুঝে।
--------------------------------------------
ও বন্ধু, সত্যিকারের বন্ধু আমার,
হৃদয় চাইছে ক্ষমা
এবং আমার আনন্দের নেই কোনো আশা।
আমার বন্ধু আরো, আরো বেশি ঘনঘন আমার কাছে
দিচ্ছে এনে বিমর্ষ ভর্ৎসনা- প্রতিবেলায়ই আরো অধিক যন্ত্রণাময়।
----------------------------------------------
যে কথা না যায় বলা শব্দে
না যায় করা প্রকাশ কোনো ছুতোয়
না যায় করা বর্ণন- ভালোবাসার পথ যে আমার।
বিস্ময়কর-কাজের কোনো সাধু বাঁচাবেন আমাকে
ফসলি জমির ভেতর যাওয়া কোনো হাঁটাপথে।
বৃষ্টি ঝরে পড়ে পৃথিবীর উপর
পৃথিবীকে করছে একাকার- আকাশের সাথে,
নিচ্ছে হিসেব
তোমার অশেষ সৌন্দর্যের
‘আজকের’ মতো উদযাপনে
দীর্ঘদিন হারানো বন্ধুদের স্মরণসভায়
এ মাসের শেষদিকে বাজে এক পর্যায়ে কাটছে জীবন। **
[নোট : * ব্র্যাকেটের শব্দটি দৃশ্যত ছন্দ ঘাটতির ফলে লেখা এবং পরবর্তীকালে কবিতাগুলো সম্ভবত রিভাইজ দেওয়া কিংবা সম্পন্ন করা হয়নি।
** এই খণ্ড খণ্ড পদ্যের পরিমার্জন না করে একে অনুবাদ করা হয়েছে। ]
১৯ জুন
‘রুবলেভ’ এখন সুইডেনে দেখানো হচ্ছে। বিনি এন্ডারসনের কথামতে, বার্গম্যান ‘রুবলেভ’কে এ পর্যন্ত তার দেখা শ্রেষ্ঠতম ফিল্ম হিসেবে অভিহিত করেছেন।
২২ জুন, মস্কো
‘সোলারিজ’ বেশ সাফল্য পেয়েছে লন্ডনে।
বুয়েনোস আইরেসের বিমানঘাঁটিতে গোলাগুলির কারণে আর্জেন্টিনা সফর এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত হয়েছে। তার মানে, ব্যক্তিগতভাবে আমি আদৌ যেতে পারছি না।
আমি চাই ‘টমাস মান’ নামে একটা ফিল্ম বানাতে। পশ্চিম জার্মানিকে তাদের ফেস্টিভ্যালের জন্য এটা করার প্রস্তাব দিতে পারি। যৌথপ্রযোজনায় ভালো কিছু হবে না। অর্থকড়ি পাওয়া সহজলভ্য হবে না এবারো।
‘দ্য ম্যাজিক মাউন্টেন’ পড়তেই হবে আরো একবার। তাস্কেন্ত থেকে খামরায়েভ ফোন করেছিলেন। তার জন্য সাসা আর আমি একটা স্ক্রিপ্ট লিখছি- তিন ঘন্টার ফিল্ম : টি [তাতজিক] ওয়েস্টার্ন। *
[নোট : * ‘স্পাগেটি ওয়েস্টার্ন’- এর অনুরূপ]
১১ জুলাই, মস্কো
৯ তারিখ সোমবার গিয়েছিলাম পাভলিয়োনকের কাছে। অরুচিকর, স্থূল, ‘সন্দেহপ্রবণ’ মানুষ একটা। এরিকা এম. ও কারায়েভের ভীষণ নিন্দা করছিলেন তিনি, এবং তাদেরকে একগাঁট করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি আর ইয়েরমাশ [বরং ইয়েরমাশই] বিস্তারিত নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রেজাল্টটা আমরা কাল শুনেছি, তা হলো- ৬ লাখ ২২ হাজার রুবল এবং সাড়ে ৭ হাজার মিটার কোডাক ফিল্ম- উভয়ই দেওয়া হবে আমাদেরকে।
এগুলো তিনবারে পাওয়া যাবে। কোনোপ্লিয়ভ থেকে আমরা বাকি ৩০০০ মিটার ৪ নেব।
ফেডারেল জার্মানিতে ‘ডক্টর ফস্টাস’ নির্মাণ নিয়ে কথা হয়েছে। ’৭৫ সালের ৬ জুন মানের শততম জন্মবার্ষিকী। দুয়েকদিনের মধ্যে জার্মানিদের সঙ্গে মিটিং করব। সবকিছু তাড়াতাড়ি করতে হবে; কারণ, সেই বিশেষ দিনটি আসতে সময় হাতে আছে দুবছরেরও কম।
৩০ সেপ্টেম্বর, মস্কো
দীর্ঘ অবকাশের পর : এক সপ্তাহ হলো তুচকভো থেকে ফিরেছি আমরা। গ্রীষ্মকালীন আউটডোর দৃশ্যগুলোর শুটিং করেছি। গোসার সঙ্গে কাজ করা মোটেও সহজ ছিল না। লোকজনের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেছেন তিনি। তার এসিস্ট্যান্ট সয়েদভ তো তাকে ছেড়ে চলেই গেছেন।
ম্যাটেরিয়ালগুলো এই মুহূর্তে ভালোই।
স্ক্রিপ্টে প্রচুর পরিবর্তন আনতে হবে। সেটা আরো ভালো হবে।
পশ্চিম জার্মানিতে শুরু করার ব্যাপারে সবকিছু নিশ্চুপ হয়ে গেছে। আমরা এখন অন্য চ্যানেলের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, কিছুটা সাফল্যও পাচ্ছি। দেখা যাক কী হয়।
সাসা মিসুরিন আর আমি ঠিক করেছি খামরায়েভের জন্য একটা স্ক্রিপ্ট লিখব।
৫ অক্টোবর, মস্কো
নোট : দেড় হাজার রুবলের বিনিময়ে বাড়িটির অর্ধেক আলিয়োসা আর্তেমিয়েভকে দিয়ে দিয়েছি।
১৪ অক্টোবর, মস্কো
তুচকভো থেকে ফেরা ও শুটিং শুরু করার মধ্যবর্তী সময়ে চেখভ স্ট্রিটের থিয়েটারের শিল্পনির্দেশক এম. জাখারভের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি চাইলেন, আমি যেন তার জন্য কিছু একটা ডিরেকশন দিই। তার ভঙ্গি আমার পছন্দ হলো না। তার না আছে কোনো প্রোগ্রাম, না আছে থিয়েটার সম্পর্কে ধারণা, না আছে প্রত্যাশা। আরামের চাকরি করা নগণ্য আদর্শের মানুষ তিনি, প্রকাশ্যে সমালোচনা করার মতো সাহস যার নেই। জাহান্নামে যাক। পুঁচকে শয়তান।
লারিসা গেছে মিয়াসনয়ে; বাড়ি মেরামতের কাজ করছে। এটা হয়ে যাবে। সামনের বছর আমাদেরকে কেবল পানি সরবরাহ, শাওয়ার, আউটসাইড টয়লেট বানাতে হবে একটা শেডে [এবং গ্যারেজ?]।
২০ অক্টোবর, মস্কো
চিন্তাটা বাজে : তোমাকে কারোরই দরকার নেই, তুমি তোমার নিজ সংস্কৃতিতে একেবারেই এলিয়েন, এর জন্য কিছুই করোনি তুমি, তুমি একটা গুরুত্বহীন ব্যক্তি।
কিন্তু ইউরোপের কাউকে, কিংবা অন্য যেকোনো স্থানের কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের বেস্ট ফিল্মমেকার কে; উত্তর আসবে- তারকোভস্কি।
আর এখানে কি-না কোনো রা নেই, আমার অস্তিত্ব নেই, শূন্যতায় বাস আমার। দুর্বল এক মুহূর্তে এটা জানা হয়ে গেছে। কারোর জন্যই প্রয়োজনীয় না হয়ে বেঁচে থাকাটা কঠিন। আর নিকৃষ্ট কোনো শক্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকাকে আমি ঘৃণাই করব। আমি চাই পরিপূর্ণভাবে কোনো একজনের কিংবা অনেকের জীবনকে ভরিয়ে দিতে।
নিজেকে বন্দি লাগছে। আমরা আত্মা আমার ভেতরে বন্দি। অন্য কোনো এক পৃথিবীকে প্রয়োজন আমার।
৭ নভেম্বর, মস্কো
কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লিখতে চেয়েছিলাম বলে আমি তাড়াহুড়ো করছিলাম। কিন্তু খুব দেরি হয়ে গেছে। আমি ভুলে গেছি সেটা...।
তারা সবাই কেন আমাকে সেন্ট বানাতে চায়?
ও ঈশ্বর! ও ঈশ্বর!
আমি কাজ করতে চাই। আমাকে সেন্ট বানানোর চেষ্টা থামাও।
১৭ নভেম্বর, মস্কো
বুনিন স্মৃতিচারণ পড়ছি। কী বিষণ্ন, একেবারেই রাশিয়ান গল্প। কী বালসুলভ অসন্তুষ্টিকর উচ্চাকাঙক্ষা। অসুখী, গভীরতর অসুখী মানুষ একটা!
২৬ নভেম্বর, মস্কো
‘ডক্টর ফস্টাস’ পড়তে শুরু করেছি আরো একবার। আমার ধারণা, প্রোডাকশনটি নিয়ে আলোচনা করতে জার্মানরা শিগগিরই আসবে।
২৯ নভেম্বর, মস্কো
সোভেক্সপোর্টফিল্ম থেকে একটা টেলিফোন কল এসেছিল আজ। বড় একটা ফার্ম ‘সোলারিজ’ প্রকাশ করেছে এবং চুয়াত্তরের জানুয়ারিতে রোমের প্রিমিয়ারে আমি আমন্ত্রণ পাচ্ছি।
আমার মনে হয় না, আমাদের স্টুডিও জানুয়ারির জন্য এখনো প্রস্তুত হবে; আমি সম্ভবত ইতালি যেতে পারব।
হাঁ, ঠিকই বলেছিলাম! লেনিন প্রাইজের জন্য গেরাসিমভকেই এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। [কিংবা বলা যায়, তিনি নিজেই নিজেকে এগিয়ে দিয়েছেন। ] সত্যতা যাচাই করব।
২ ডিসেম্বর, মস্কো
‘ডক্টর ফস্টাস’কে নিয়ে টু-শব্দও নয়- তাদের প্রডিউসারের দেখা মেলেনি এখনো।
উপন্যাসটি আবারো পড়ছি। স্বাভাবিকভাবেই, হেসের ‘গ্লাস বিড গেম’-এর প্রতি ভীষণ অনুরক্ত ছিলেন টমাস মান। বইটিতে তিনি রোমান্টিক, আবছা, স্নায়বিক বিষয়আশয় পেয়েছিলেন; তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তিনি এটির মধ্যে সেই নির্যাসেরই দেখা পেয়েছিলেন, যেটি তার নিজের ‘ডক্টর ফস্টাস’-এ আছে।
সব আবরণ খুলে খেলতে হবে তোমাকে, প্রস্তাব করতে হবে সরাসরি, আর তাতে দূরত্ব থাকা যাবে না। সব খোলস ছাড়িয়ে ফেলতে হবে তোমাকে; এটিকে পড়তে হবে তোমার নিজের মতো করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিল্পীর একাকিত্বের ট্রাজেডি, এবং সত্যকে বোঝার জন্য তিনি যে দাম দেন- সেটা।
মার্ক জাখারভ ও তার থিয়েটারের জন্য আমি শেক্সপিয়ারের ‘জুলিয়াস সিজার’-এর দিকে ঝুঁকছি।
জনগণের প্রতি আন্থনির বয়ান ও ফিলিপ্পির যুদ্ধ- জনসমাগমের এই দৃশ্যগুলো কীভাবে কাজে লাগাব, সেটা আমরা এইমাত্র ঠিক করলাম । এক্ষেত্রে সাউন্ড খুবই গুরুত্ববহ হবে। আর্তেমিয়েভ সেটা রেকর্ড করবেন।
৫ ডিসেম্বর, মস্কো
শাসনতন্ত্র দিবস। শিল্পখাত, কৃষি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আমাদের সাফল্য নিয়ে টিভিতে অবিরাম আহ্লাদ চলছে। যদিও খাদ্যের দাম কিছু কারণে বেড়েই যাচ্ছে- মাছের ডিম, মাছ, জুতা। দৃশ্যত, মন্দ অবস্থায় বেঁচেবর্তে থাকাটাই আমাদের জন্য অনেক বিশাল অর্জন।
এর অনেকটাই প্রবাহিত হচ্ছে।
অতিকায় বোঝা নিয়ে কথা বলছি আমি।
মানের ‘ডক্টর ফস্টাস’ তার নিজের অতীত জীবনের, তার চূর্ণবিচূর্ণ স্বপ্নের, হারানো স্বদেশের জন্য ব্যাকুলতা, ভোগান্তির ভাবনা, শিল্পীর নিদারুণ যন্ত্রণা, নিজের ‘পাপময়তা’র বিস্তারিত পারদমিশ্র। একদিকে তিনি [শিল্পী] একজন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে তিনি সাধারণ হতে পারেন না, এবং এর ফলে তাকে তার প্রতিভার দাম তার আত্মা দিয়ে শোধ করতে হয়। মানুষের প্রতিভা কোনো ঈশ্বরপ্রদত্ত জিনিস নয়; বরং নিয়তিনির্দিষ্টভাবে মানুষ প্রতিভাকে বয়ে বেড়ায়। শিল্পী হলেন সেই মানুষ, যিনি চরম সত্যের মাস্টার হওয়ার লড়াই করেন [তবে তা গোপনে কিংবা লুকিয়ে নয়, নয় কোনো বৃত্তে ঘূর্ণনে, নয় বাস্তব্যবিদ্যার কোনো কোটরের প্রশস্ততায়]।
মাস্টার শিল্পী হলেন তিনি, যিনি যে সত্যকে সবসময় সৃষ্টি করেন তাতে নিখুঁত কিছু একটা থাকে, থাকে পূর্ণাঙ্গ কিছু একটা।
তবে এখানে তিনি অন্য হাজারো শব্দে, হাজারো প্রশ্নে জর্জরিত হতে পারেন। যে মানুষটি সত্যের সন্ধান করছেন এবং যে মানুষটি সত্যকে উপেক্ষা করছেন কিংবা এ ব্যাপারে একেবারে আগ্রহী নন-- তাদের মধ্যে তুলনা করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কমিটি সম্ভবত এই কাজটি আমাকে একেবারেই দিচ্ছে না; অতএব, এটির জন্য আমাকে লড়তে হবে।
কোনো কারণে ‘ডক্টর ফস্টার’ যদি বিলম্বিত হয়, সেক্ষেত্রেও আমাকে কিছু একটা করতেই হবে।
‘রিনানসিয়েশন’ নিয়ে কাজ শুরু করবই আমি।
৬ ডিসেম্বর, মস্কো
আজ সন্ধ্যায় দুয়েকদিনের জন্য ইউরেভেজ যাচ্ছি।
এটা খুবই অস্বস্তিকর। ত্রিশ বছর হলো সেখানে যাই না। এটা কেমন হবে? আমার অনুভূতি বলছে, আমার বয়স যখন ১২ ছিল, সেই তখনকার সময়ের চেয়ে এটা একেবারেই বদলে গেছে। সম্ভবত আমার না যাওয়াটাই উচিত ছিল; কারণ, আমার এখনও সেই মায়া কাটেনি?
দেরি হয়ে গেছে। আমাকে এখন উঠতে হবে।
৮ ডিসেম্বর, মস্কো
ইউরেভেজ থেকে ফিরলাম আজ সকালে। কিনেসমা পর্যন্ত ট্রেনে গেছি আমরা, আর বাকিটা গেছি টেক্সিতে।
ঠাণ্ডা ছিল, ছিল সব বরফে ঢাকা। ইউরেভেজ আমার মনে কোনো ছাপ ফেলেনি। যেন এই প্রথমবারের মতো দেখলাম একে। আমি যে স্কুলটাতে যেতাম, আর যুদ্ধের সময় যে বাড়িটাতে থাকতাম আমরা-- সেগুলো চিনতে পেরেছি। স্কুলের পেছনের বালুময় পাহাড়টা লেভেল হয়ে গেছে; আর সেখানে একটা স্কেটিং পন্ড মানিয়ে গেছে। সেন্ট সিমনের গির্জাকে ঘিরে আছে বেড়া, আর মূল চত্বরে তারা দুটি কদাকার দালান বানিয়েছেন-- একটা হলো কনজুমার সার্ভিসেস সেন্টার, আর আরেকটা হলো টাউন হল, ‘স্কুলের প্রতিবেশি’। নদীর পাশের বড় রাস্তার কিছু অংশ ভেঙে গেছে, আসলে পুরোটাই গেছে; আর সড়কের জায়গায় তারা একটা জলাধার বানিয়েছে, যেন ভোলগা নদী হতে উছলে ওঠা পানি থেকে শহরকে বাঁচানো যায় । আপনিও যদি কখনো যেতেন সেখানে...!
১২ ডিসেম্বর, মস্কো
রাষ্ট্রীয় প্রাইজের অ্যাওয়ার্ডের জন্য সিনেমা সেকশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের তালিকা দেখলাম আজ।
‘এস বন্দারচুক, গেরাসিমভ, কুলিদজানভ, সলনৎসেভা, রস্ততস্কি’। হিংসুক ও অদক্ষ-- আর কোনো মন্তব্য লাগে না। যদি এ মানুষেরা তা ঘিরে থাকে, তাহলে আমি কখনোই সেখান থেকে কোনো ধরনের প্রাইজ নেব না। তারা আমাকে প্রচ- অপছন্দ করেন। কেবলমাত্র কুলিদজানভ সম্ভবত আমার শত্রু নন। চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য এখন দুটি জায়গা আছে আমার : ভ্লাদিমির ও ইউরেভেজ।
ম্যারিনা প্রেগন্যান্ট। পাঁচ মাস চলছে। সাসা এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করছেন। তারা কি সত্যি বুঝেন না, এই সময়ে আরেকটা বাচ্চা নেওয়া তাদের জন্য অসম্ভব ব্যাপার? মা অসুস্থ, টাকাকড়ি নেই তাদের-- হাস্যকর। হ্যাঁ, গর্ডন অবশ্যই খুব একটা চালাক নন, কোনোভাবেই বেশি চালাক নন তিনি।
আজকের জন্য ফিল্মটার শিরোনাম-- ‘হোয়াই ডু ইউ স্ট্যান্ড সো ফার অফ?’-ই সেরা।
১৬ ডিসেম্বর, মস্কো
তিনটা রুমেরই সিলিংয়ে ফুটা। সিজভকে চিঠি লিখেছি। স্টুডিও কাছে নতুন ব্লকে আমাদের জন্য একটা ফ্ল্যাটের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনিই একমাত্র ভরসা। এই এক্সচেঞ্জে আমাদের কোনো কপাল নেই।
ফিল্মটির জন্য একটা শিরোনাম লাগে! ভালো, যথাযথ কিছু ভাবতে পারছি না।
খুব খারাপ লাগছে আমার। সারা শরীরে ব্যথা, আর স্নায়ুগুলো চূর্ণবিচূর্ণ। কাল যাব ডাক্তারের কাছে।
একটা ফুটা পয়সাও নেই। তারউপর ফ্ল্যাটের ঝামেলা। তারউপর ফিল্ম। হচ্ছেটা কী?
১৭ ডিসেম্বর, মস্কো
লারিসা গিয়েছিল সিজভের কাছে। মসফিল্মের ব্লকে যে ফ্ল্যাটের সম্পর্কে বলা হয়েছিল, সেটার ব্যাপারে আশাবাদী কিছু আছে বলে মনে হয় না। এমনকি সিজভ নিজেই এটা প্রথমদিকে বলেছিলেন; আর এখন বলছেন, আমাকে ফ্ল্যাট দেওয়া হলে নাকি স্টুডিওতে ‘বিপ্লব হয়ে যাবে’। কী করছেন তিনি? নিজের দেওয়া কথা থেকে সরে যাচ্ছেন? সবমিলিয়ে আমাদের জীবনযাপনের অবস্থা শোচনীয়। তিনটা রুমের সবগুলোতেই পানি পড়ছে।
আমাকে সরে যেতে হবে। গিয়ে থাকতে হবে স্রেতেনস্কি বুলাভার্ডে। এইসব কাজকারবার তাহলে হবে কীভাবে? আমি ক্লান্ত। বয়স শিগগিরই ৪২ হতে যাচ্ছে, আর আমি এখনো নিজের একটা জায়গা বানাতে পারিনি।
২৫ ডিসেম্বর, মস্কো
ইউরেভেজ ভ্রমণে আমি যা ফেলে এসেছি, তা হলো : একটা বিয়ারের মোড়ক।
২৯ ডিসেম্বর
খুবই খারাপ লাগছে। এটা চিকিৎসার জন্য হতে পারে, হতে পারে চিকিৎসার অভাবের কারণে। সারা শরীরে ব্যথা, ভীষণরকম; খুব দুর্বল আমি।
ফিল্মের ক্ষেত্রে-- সবকিছুর অবস্থা অভাবনীয়। ওয়ার্কপ্রিন্ট নিয়ে সবাই অতি উৎসাহী। অলগা সুরকোভা বিভ্রান্ত করেছেন; তিনি বলেছেন, আমি নিজেকে ছাড়িয়ে গেছি। সাসা গর্ডন কয়েকটা সিকোয়েন্স দেখেছেন, তিনিও বিড়বিড় করে কিছু একটা বলেছেন [মসফিল্মের করিডোরে দেখা হয়েছে তারসঙ্গে]। তার মুখ দেখে আমি বুঝতে পারলাম, তিনি বরং হতভম্ব হয়ে গেছেন।
স্ক্রিনিংয়ের সময় এমনকি আলভ ও নাউমভ কাঁদতে লাগলেন, আমাদের লেডি এডিটরদের কথা বাদই দিলাম।
ক্রেমনেভ শিহরিত। আমি আসলেই এর কোনো মানে বুঝি না। এর মধ্যে তারা বিশেষ এমন কী দেখলেন-- বুঝি না আমি। দস্তয়েভস্কির ‘ইডিয়ট’ নিয়ে চাপ দেব। নাস্তাসিয়া ফিলিপোভনা চরিত্রে তেরেখোভা চমৎকার মানাবেন। কমিটি যদি সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে আমি দেমিচভের কাছে যাব।
বসন্ত ও গ্রীষ্মকালের জন্য কাজের বেশ ভালো একটা পরিকল্পনা করেছি : ১. খামরায়েভের জন্য একটা স্ক্রিপ্ট লিখব; ২. ‘দ্য ইডিয়ট’-এর স্ক্রিপ্ট লিখব-- যেন শরৎকালে ফিল্মটি শুরু করতে পারি। এটা হলে, আমি মনে করি না যে জাখারভের জন্য ‘জুলিয়াস সিজার’ করার কোনো পয়েন্ট আছে; এবং এরজন্য কোনোভাবেই সময়ও নেই। আর এই সবকিছুর উপরে আছে এই অভিশপ্ত অসুখ।
‘ডক্টর ফস্টাস’ নিয়ে জার্মানরা একটা কথাও বলল না।
ফ্ল্যাটের ব্যাপারে আরও আশাবাদী হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এক্সচেঞ্জ করে আমরা স্রেতেনস্কি বুলাভার্ডে কিছু একটা পেতে যাচ্ছি; তা না হলে মসফিল্মে দুটি ফ্ল্যাট পাব। জানি না-- কোনটা ভালো হবে। আমরা যখন নিশ্চিত জানি যে, দুটি সম্ভাবনার পক্ষে ও বিপক্ষে নির্দিষ্ট যুক্তি দাঁড়াবে এবং জিনিসটি নিজেই এর ফয়সালা করে নেবে-- তখন ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
স্রেতেনস্কির পক্ষে একমাত্র যুক্তি হলো আর্কিটেকচার; এবং পড়ার ঘরের ফায়ারপ্লেস। আর এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মসফিল্ম ফ্ল্যাটের পক্ষে হলো-- এখানে দুটি বাথরুম, দুটি স্নানাগার, দুটি রান্নাঘর; আরেক কথায় বললে, রুম ছয়টি। একটা উন্মুক্ত গ্যালারি এবং মনোরম বাতাস।
আমরা এখনো জানি না মসফিল্মে কোন প্রস্তাব পাব। স্রেতেনস্কিকে মেরামতবাবদ পাঁচ হাজার রুবলের মতো খরচ পড়বে।
‘দ্য ইডিয়ট’-এর স্ক্রিপ্ট শুরু যেতে পারে ফ্ল্যাশব্যাক দিয়ে : নাস্তাসিয়া ফিলিপোভনার শৈশব এবং টটস্কির সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ।
রগোজিনের সঙ্গে মিসকিনের মিটিং বাতিল হতে পারে; তারা কীভাবে পরিচিত হয়েছিলেন-- সেটা কোনো ব্যাপার নয়। [উপন্যাসটি মহাশূন্যের কিংবা জনসমাগম দৃশ্যের আভাসকে ত্যাগ করে না; অতএব এগুলো বাদ দিতে হবে। ]
কর্তৃত্ব নিয়ে স্টেশনের হট্টগোলকে বাদ দিতেই হবে-- এটি বেশিমাত্রায় বাড়াবাড়ি এবং একটি স্পটেই এর বিচরণ।
উপন্যাস থেকে সবচেয়ে পরিষ্কারভাবে মনে রাখতে পারাটা খুবই ইন্টারেস্টিং-- আর স্পষ্টত তা দৈবক্রমে নয়।
একটা ছোট্ট, অন্তরঙ্গ মাপদণ্ডে।
‘দ্য ইডিয়ট’ নিয়ে একাধিকবার কাজ করেছি।
১. মিসকিন দেখা করে ইয়েপাচিন্সে। মৃত্যুদণ্ড প্রদান।
২. গানিয়ার থাপ্পড়।
৩. ইভলগিন্সে নাস্তাসিয়া ফিলিপোভনা।
৪. নাস্তাসিয়া ফিলিপোভনার জীবনী।
৫. এক লাখ রুবল।
৬. ইপোলিতের স্বপ্ন।
৭. চাইনিজ ফুলদানি।
৮. রগোজিনে [মা] এবং টটস্কি।
৯. আগলায়া ও নাস্তাসিয়া ফিলিপোভনা।
১০. নাস্তাসিয়া ফিলিপোভনার মৃত্যু। রগোজিনে রাজপুত্র।
১১. এবং অবশ্যই স্ক্যাল্স হোটেলে উপযুক্ত; আর রগোজিনের খুন-প্রচেষ্টা।
১২. শিশুদের সঙ্গে রাজপুত্র।
৩০ ডিসেম্বর, মস্কো
স্টুডিওতে কুরোসাওয়ার সঙ্গে দেখা হলো। দুপুরে একসঙ্গে খেলাম। তিনি এক বিতৃষ্ণ পরিস্থিতিতে আছেন : এরা ওনাকে কোনো কোডাক ফিল্ম দেয়নি; এবং ওনাকে নিশ্চয়তা দিয়ে যাচ্ছে যে, সোভিয়েত ফিল্ম চমৎকার। এরা তলিয়া কুজনেৎসভকে ওনার সঙ্গে জুড়ে দিতে চাইছে। তার টিম আতঙ্কিত, গুপ্তচর ও মানসিক প্রতিবন্ধী। ওনাকে যেভাবেই হোক সতর্ক করে দেওয়া দরকার যে, সবাই তাকে মিথ্যে বলছে।
৩১ ডিসেম্বর, মস্কো
অন্যসব আর্টফর্মের মধ্যে ফিল্মকে জায়গা করে দেওয়াই আমার লক্ষ। আর তা এটিকে মিউজিক, কবিতা, গদ্য ইত্যাদির সমান করে দিতে।
আমাদের ‘দ্য ইডিয়ট’-এর ট্রিটমেন্টে কোনো ধরনের হীনমন্যতা থাকতে পারবে না। এটি অবশ্যই প্লটের বিশদ আক্ষরিক রিপ্রোডাকশন হবে না। এর আইডিয়া, মঞ্চ-পরিচালনা, লেখকের [ডিরেক্টরের] চিন্তা-ভাবনাকে আমরা অবশ্যই বাস্তব জগতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাব।
পরিচিতি :
১. স্ত্রুগাতস্কি ভ্রাতৃদ্বয় : ‘আর্কাদি’ [জন্ম : ১৯২৫] ও ‘বরিস’ [জন্ম : ১৯৩৩], বেশকিছু সায়েন্স ফিকশন এবং ‘স্টাকার’ ফিল্মের স্ক্রিপ্টের যুগ্মলেখক।
২. চিঙ্গিস আইৎমাতভ [জন্ম : ১৯২৮] : কিরগিজ লেখক।
৩. এস. জি. লাপিন : চেয়ারম্যান, স্টেট কমিটি ফর টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও, ১৯৭০ সাল থেকে।
৪. ভ্লাদিমির আগেয়েভ : তৎকালীন সময়ে মসফিল্মের ‘কমরেড’ গ্রুপের প্রধান।
৫. মার্তিরোলজি : ‘অ্যা হিস্টোরি অব মার্তিরডম’।
৬. ভেরা প্যানোভা [১৯০৫--৭৩] : সোভিয়েত লেখক।
৭. সার্গেই উরুসেভস্কি [জন্ম : ১৯০৮] : সোভিয়েত ক্যামেরাম্যান।
৮. স্তানিস্লাভ রস্ততস্কি [১৯২২] : সোভিয়েত ফিল্মমেকার; ১৯৬৫ সাল থেকে ছিলেন এক্সিকিউটিভ কমিটি অব ইউনিয়ন অব সিনেমাটোগ্রাফার্স-এর সেক্রেটারি।
৯. নিকোলাই পকরোভস্কি : ইতিহাসবিদ; তারকোভস্কির পারিবারিক বন্ধু।
১০. অ্যাভার : কোকাসাসে বসবাসরত একটি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্য।
১১. সভেচেভ : শিল্প-ইতিহাসবিদ, মেদিয়েভাল রাশিয়া বিশেষজ্ঞ, রিস্টোরেশন এক্সপার্ট।
১২. সাভেলি ইয়ামস্চিকভ : সোভিয়েত শিল্প-ইতিহাসবিদ, ‘আন্দ্রেই রুবলেভ’-এ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
১৩. নিকোলাই স্ত্রাখভ [১৮২৮--৯৬] : রাশিয়ান চিন্তাবিদ, প্রচারক, সমালোচক।
১৪. আলেক্সান্দার গ্রিবয়েদভ [১৭৯৫--১৮২৯] : ‘উ ফ্রম উইট’ নাটকের লেখক।
১৫. মারলেন খুৎসিয়েভ [১৯২৫--৭৩] : সোভিয়েত ফিল্মমেকার।
১৬. গ্রিগরি [ঘিয়া] দানেলিয়া [জন্ম : ১৯৩০] : সোভিয়েত ফিল্মমেকার।
১৭. ভ্লাদিমির মুরাস্কো [জন্ম : ১৯২৫] : ফটোগ্রাফার; ‘সোলারিজ’, ‘মিরর’ ও ‘স্টাকার’-এ কাজ করেছেন।
১৮. নিকোলাই দিভিগুবস্কি [জন্ম : ১৯৩৬] : রাশিয়ান আর্টিস্ট, পরবর্তীতে ফ্রান্সের অভিবাসী।
১৯. মারিয়া [মাশা] চুগুনোভা : ‘সোলারিজ’, ‘মিরর’ ও ‘স্টাকার’-এর এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর।
২০. আলি খামরায়েভ [জন্ম : ১৯৩৫] : উজবেক ফিল্মমেকার।
২১. বরিস পাভলিয়োনক : উপ-প্রধান, গস্কিনো, ১৯৭৩--৮৫।
২২. ওসমান কারায়েভ : ফিল্মমেকার; প্রাক্তন উপ-পরিচালক, মসফিল্ম স্টুডিওজ।
২৩. মার্ক জাখারভ : সোভিয়েত থিয়েটার ডিরেক্টর ও ফিল্মমেকার।
২৪. ইভান বুনিন [১৮৭০--১৯৫৫] : রাশিয়ান লেখক, ১৯১৮ সালে ফ্রান্সের অভিবাসী হন এবং ১৯৩৩ সালে সাহিত্যে নোবেল জিতেন।
২৫. এডুয়ার্ড আর্তেমিয়েভ [জন্ম : ১৯৩৭] : সোভিয়েত কম্পোজার; ‘সোলারিজ’, ‘মিরর’ ও ‘স্টাকার’ ফিল্মে এবং তারকোভস্কির মঞ্চনাটক ‘হ্যামলেট’-এ কাজ করেছেন।
২৬. বরিস ক্রেমনেভ : কমিশনিং এডিটর, মসফিল্ম।
বাংলাদেশ সময় ১৩০০, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১১