ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

ধারাবাহিক উপন্যাস

মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্‌সান (পর্ব- ৩)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৬
মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্‌সান (পর্ব- ৩)

৩.
আপন নেই, শুধুই পর,
ঘুমায় দেখো অজগর।

আস্ত মানুষটাকে গিলে ফেলেছে সাপটা।


রুবি ভয় পায়। বড় বড় হয়ে যায় তার চোখ।
গাইড এটাই চাচ্ছিলো। ওলট-পালট, বানোয়াট গল্প বলে পর্যটকদের ধরে রাখার চেষ্টা। রুবি তার কথায় ভুললেও আমরা ভুলিনি।
ছয় রুপি করে টিকিট। রুবির জোরাজুরিতে আমরা চারজনই এসেছি আজ চিড়িয়াখানায়।
দিনটা ভালো। রোববার। ছুটির দিন।
রুবি ছোট বলে মায়ের সঙ্গে দেখা করা নিষেধ। শুধু ছুটির দিনে শিশুরা রোগীর সঙ্গে দেখা করতে পারে। ফূর্তিতে আছে রুবি। একটু পরপরই খুশিতে বলছে, ‘মাকে দেখবো। কী মজা। কী মজা। ’
আমরা সবাই আসলে মাকে খুব মিস করি। কিন্তু আচার-আচরণে সেটা বোঝাই না। নিজেরা স্বাভাবিক থেকে অন্যদের স্বাভাবিক রাখার বৃথা চেষ্টা করি।
মায়ের সঙ্গে দেখা হবে বিকেলে। তার আগে চলবে ঘোরাঘুরি। বাবার কাছে এই আবদার রুবির। চিড়িয়াখানায় বাঘ, বানর দেখা শেষ করে যাওয়া হবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। পার্ক স্ট্রিটের একটা দামী রেস্টুরেন্টে হবে খাওয়া-দাওয়া।
খোশমেজাজে আছে বাবা ছাড়া সবাই। চিড়িয়াখানায় ঢুকেই ফ্রুট স্যান্ডউইচ আর কোক খেয়ে নিয়েছিলাম আমরা। এতো বড় চিড়িয়াখানাটা চক্কর দিতে দিতে খিদে পেয়েছে আবার।
মায়ের শরীর ভালো তাই সবার মুখে হাসি। মনে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য নয়, বরং কলকাতায় বেড়াতে এসেছি আমরা।
বাবার মুখটা শুকনো। যতোদূর জানি ডলার এনডোর্সের ব্যাপারটা থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। চিন্তায় বাবার মুখটা ছোট হয়ে গেছে। মায়া লাগছে। নিজেকে অসহায় লাগছে। আমার কিছু করার নেই। কিছু করার থাকলে ভালো লাগতো।
আফসোস, এই পৃথিবীতে আমার ক্ষমতা অতি সামান্য।
হাতের টাকা শেষ হয়ে আসছে। মায়ের পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়। এই খরচ বাড়ছেই। দুই হাজার রুপির তিনটে ইনজেকশন দিতে হয় প্রতিদিন। বাবা সামাল দিতে পারছে না। ধার-দেনায় জর্জরিত একদম।
দেশে যাবেন। গ্রামের জমি বিক্রি করা হবে। ওদিকে জমির দাম নেই। শতাংশ হাজার পঁচিশেক। এর আগেও তের কড়া বিক্রি করা হয়েছে। তের কড়ায় মনে হয় ছাব্বিশ কাঠা। আমি এসব বুঝি না। হিসেব-নিকেশে কাঁচা একদম।
আমার ভয় অন্য জায়গায়। বিক্রির তালিকায় ‘আপন ভিলা’-ও না এসে যোগ হয়। বুক কেঁপে ওঠে।
নীল আকাশের ব্যাকগ্রাউন্ডে দাঁড়ানো ধূসর ঘিয়ে রঙের বাড়িটা আমার সবকিছু। অতি যত্নে বাড়িটি পুরনো হবার জো নেই। একদম চকাচক চারপাশটা। নতুনের মতোন! ভালোবাসার বাড়ি।
ছিমছাম উঠোনে দাঁড়ানো প্রিয় ফনিক্স সাইকেল। সপ্তাহে তিন দিন ধোয়া হয়। যত্ন-আত্তি ভরপুর। ব্রেক, হ্যান্ডেলে কোনো সমস্যা নেই। ক্রিং ক্রিং করে মাহবুবার বাড়ি যাওয়া। সোনায় মোড়ানো দিন। দেশে যেতে চাই। খুব করে চাই। হাঁপিয়ে উঠেছি অল্প দিনেই।
‘আকাশের সাথে থাকিস তোরা। ’ বলে বড়মামা।
নতুন এই পাবলিককে ভিনদেশে খুঁজে পেয়েছে সে। কোঠারি হাসপাতালের সামনে দাড়িয়ে সিগারেট খেতে গিয়ে পরিচয়।
বড়মামার দিকে লাইটার এগিয়ে দিয়ে আকাশ মামা বলছিলো, ‘ভাইজান, বাংলাদেশের বুঝি? বোঝা যায় না। যে সুদর্শন, সুঠাম শরীর আপনার! বাংলাদেশের মানুষ হয় প্যাতপ্যাইতা। শরীরে নাই পুষ্টি। হাইট টাইনাটুইনা চাইর থেকে পাঁচ ফুট’।
দেশের মানুষ নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলায় মামার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
নিজের প্রশংসা করা হয়েছে বলেই চুপচাপ হজম করে নিয়েছে ব্যাপারটা। দুই দিনের পরিচয়ে একদম দহরম-মহরম অবস্থা। আমাদের ডেকে বললো, ‘অই শোন, আকাশ এখন থেকে তোদের মামা। আকাশ মামা। আমার চাইতেও তারে তোরা রিসপেক্ট বেশি দিবি। ঠিক হ্যায়?’ মামার কথা শুনে আমরা মাথা নেড়েছি।
বড়মামা আজকাল একটু আধটু হিন্টি বলে। ভারতে আসার ফল।
কথার মাঝখানে মাঝখানে হিন্দি শব্দের ব্যবহার করে অযথাই। হ্যায়, ক্যায়া, কুছ, তুম, হাম, কায়কো এইসব শব্দের ঠুসঠাস ব্যবহার চলে। কানে লাগে। মামা বোঝে না। তিনি বলেই যান। সারাক্ষণ।
আকাশ মামা লোকটা খারাপ না। শুনেছি কোটারি হাসপাতালে তার এক ফুফু ভর্তি আছেন। মুমূর্ষু অবস্থা। বাঁচবেন না।
আকাশ মামাকে দেখে মনে হয় না তিনি ফুফুকে নিয়ে চিন্তিত। ফুরফুরে মেজাজে থাকেন সবসময়। হাতে সোনার ব্রেসলেট। রঙিন শার্ট আর জিন্স। শরীরে সুগন্ধী ভুরভুরিয়ে আসে। ঘামের নোনতা গন্ধের সঙ্গে সুগন্ধী মিলে একটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা হয়। আমাদের বমি চলে আসে। আমি আর রুবি অনেক কষ্টে সামাল দেই বমি করাটা।
আকাশ মামা বলেছেন, তার বাড়ি চট্টগ্রামে। সেখানকার ক্ষমতাবান এক রাজনীতিবিদের ভাতিজা তিনি। ডলার এনডোর্সের বিষয়টা তিনি মিটমাট করে দেবেন সহজেই। এগুলো তার কাছে ওয়ান-টুর ব্যাপার। আকাশ মামার ফুফুকে আমরা দেখিনি। তিনিও নিয়ে যান না।
বাবা লোকটাকে পছন্দ করতো না। বড় মামা আর আকাশ মামার অনুপস্থিতিতে আমাদের বলেছে, ‘সাবধানে থাকিস। তোর মামা তো একটা ছাগল। দুনিয়ার সবাইরে বিশ্বাস করে ধরা খায়। কোন চোর-বাটপার ধরে নিয়ে আসছে এবার কে জানে’!
আমরা সাবধানে নেই। সাবধানে থাকার মতোন কিছু নেই। হোটেল রুমে আছে অল্প কিছু জামা-কাপড়। টাকা ফুরিয়ে এসেছে।
বাবা দেশে গিয়ে জমি বিক্রি করে টাকা পাঠালে আবার সাবধানে থাকবো। এখন আকাশ মামাকে নিয়ে ভয় করছি না।
মা বাসমতি চালের ভাত আর মাগুর মাছ খেতে চেয়েছে। বড়মামা আর বাবা অনেক চেষ্টা করেও ম্যানেজ করতে পারেনি। আকাশ মামা করেছে। তারপর থেকে মুখে স্বীকার না করলেও বাবা আকাশ মামাকে একটু একটু পছন্দ করা শুরু করেছে। যেকোনো কিছুর জন্য বড়মামাকে বাদ দিয়ে গোপনে আকাশ মামার সঙ্গে শলাপরামর্শ করছে।
মামা বিষয়টা জানতো না। রুবি বলে দেওয়ার পর হিংসায় জ্বলে-পুড়ে মরছে। ঠিক করেছে গোপন আলাপের সময় হাতেনাতে ধরবে বাবা আর আকাশ মামাকে। ধরার পর কঠিন ঝগড়া। বাবার সঙ্গে। আকাশ মামাকে কিছু বলবেন না কারণ, তিনিও আকাশ মামাকে খুব পছন্দ করেন।


আকাশ মামাকে পছন্দ করেন মা-ও। মাগুর মাছ আর বাসমতি চালের জন্য নয়। মায়ের অপারেশনের সময় বি পজিটিভ রক্ত লাগবে। বড়মামার বি পজিটিভ। জন্ডিস বলে তিনি রক্ত দিতে পারবেন না। আকাশ মামা দেবেন। কাকতালীয়ভাবে আকাশ মামার বি পজিটিভ রক্ত কমন পড়েছে। রক্ত দেওয়ার পর মা বলেছে, ‘আকাশ, তুমি আমার আপন ভাইয়ের চেয়েও আপন’। এভাবেই পছন্দের শুরু।
বড়মামা এসব নিয়ে যন্ত্রনায় আছে। তার নিজের বোন এই কথা বলতে পারে এটা সে বিশ্বাসই করতে পারে না। রুবিকে বলেছে, ‘হাউ কাম। হাউ? বলতো রুবি, তোর মা বলছে আকাশ নাকি আমার চেয়েও আপন। দু’-ফোঁটা রক্তের জন্য ভাইয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ছি’!

রুবি মামার দুঃখ বুঝেছে। মামার দুঃখ ভোলানোর জন্য ঘুরে বেড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। চালাক রুবি, স্বার্থপর রুবি। মামার পকেটের টাকা খসিয়ে আরামসে ঘুরেছে সে।
হোটেলের সামনের রাস্তায় বসে খেয়েছে লেবুর শরবত, চাওমিন আর লাল রঙের শিক কাবাবের সঙ্গে মোগলাই পরোটা। সবশেষে আমরা এখন যেখানে থাকি সেখানকার সামনেরই এক যুবক সংঘ ক্লাবে গিয়ে রুবি মামাকে শুনিয়েছে ব্যান্ড সঙ্গীতের কিছু দুঃখের গান। এলাকার ছেলেরা এখানে প্রতিদিন বাজায়। গানের বেশিরভাগই দুঃখের। ‘তোমাকে পাইনি, ভুল বুঝেছ, পৃথিবী নিষ্ঠুর,...। ’ এমন সব বিষয়ই উঠে আসে গানের কথায়।
মামার গান শুনে দুঃখ কমেনি। বরং বেড়েছে আরও। রুবি বলেছে, মামা নাকি হোটেলে ফিরে দরজা আটকে ফুঁপিয়ে কেঁদেছে। আমরা কেউ ছিলাম না। রুবি দরজার বাইরে থেকে শুনেছে সব।
আমরা হোটেল ছেড়ে একটা ভাড়া বাসায় উঠেছি। আকাশ মামার বুদ্ধি।
এটাও এক ধরনের হোটেলই বলা যায়। খরচ কম। কলকাতার কোনো এক হোমরা-চোমরার বাড়ি। তিনি এখানে থাকেন না। তার বড়ভাই, যিনি কিনা জীবনে কিছুই করতে পারেননি তাকে এই বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ছোট ছোট রুম হোটেলের মতো ভাড়া দিচ্ছেন।
আকাশ মামার সঙ্গে এই লোকের পরিচয় কিভাবে জানা নেই। লোকটার নাম হিমেল কান্তি। লোক ভালো। ভদ্র। তার স্ত্রী মারা গেছেন। ঘরে আছে দুই মেয়ে আর ভয়ংকর এক কুকুর। মেয়ে দু’টোর নজর ভালো না। ওলট-পালট দুষ্টামি করে। লজ্জার মধ্যে পড়ে যাই। এ নিয়ে কথা বাড়ানো ঠিক হবে না।
রুবি কমিকস্ বইয়ের খুব ভক্ত। চাচা চৌধুরী, বিল্লু, পিংকি সব তার ঠোটস্থ। এদিকে বইয়ের দাম কম। কোঠারি হাসপাতালের নিচতলাতেই দোকান আছে। হালকা খাবার, শো পিস থেকে শুরু করে সব বই পাওয়া যায়। বাবা প্রতিদিন রুবিকে একটা চকলেট বার আর বই কিনে দেন। রুবি শান্ত থাকে।
মেয়েটা পড়ুয়া আছে। কিন্তু পাঠ্যপুস্তক নিয়ে তার রাজ্যের অ্যালার্জি। যে পরিমাণ আউট বই পড়ে সেটা পাঠ্যপুস্তক হলে নির্ঘাত ক্লাসে ফার্স্ট বা সেকেন্ড হতো। একই ক্লাসে দুই-তিন বছর ধরে থাকতে হতো না।
পুরোটা দোষ অবশ্য রুবিকে দেওয়াও যায় না। মায়ের অসুস্থতার কারণে আমরা কেউ ওর খোঁজ নিতে পারি না। কী পড়ছে, কিছু লাগবে কিনা এসব জিজ্ঞেস করা হয় না। আমাদের অগোচরে মেয়েটা একা একাই বড় হয়ে উঠছে।
আকাশ মামা থাকলে জম্পেশ খানাপিনা হয়। আজও হয়েছে। নান রুটি, মাংস, গোলাপ জাম দিয়ে দুপুরের খাবার।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল দেখা শেষ করে গাইডকে বিদায় করে যাওয়া হয় ফেন্সি মার্কেটে। মামা কেনাকাটা করেন। ঠাণ্ডা তেল, সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর, কলম দানি এসব হাবিজাবি কেন কিনছেন বুঝি না!
দুপুরের পিঠে সওয়ার হয় বিকেল। রুবি, বাবা, বড় মামা, আকাশ মামাসহ আমরা মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাই।
‘মন ভালো তোর?’ মায়ের কেবিনে ঢোকার আগে রুবিকে বলি। বাবা, বড় মামা, আকাশ মামা আগেই ঢুকেছেন। রুবির ঢোকার জন্য অনুমতি লাগবে। অনুমতি পেলে ঢোকা হবে। এর আগ পর্যন্ত রুবি আমার সঙ্গে আছে।  
‘খুব ভালো। শপিং করছি। ঘুরছি। ’ রুবি হাসতে হাসতে বলে। সে যেনো উড়ছে খুশিতে।
‘পড়াশোনা না থাকলেই তো তোর মন ভালো থাকে। ’ কলকাতা আসার জন্য রুবির ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে না। এই নিয়ে তার আনন্দ ধরে না। পড়াশোনা নিয়ে কথা বলে আমি একটু বড়ভাইসুলভ আচরণ করার চেষ্টা করি।
‘সারাদিন পড়া পড়া করবা না তো। ’ রাগ করে বলে রুবি।
‘আচ্ছা করবো না। মায়ের সঙ্গে দেখা করবি আজকে। খুশি?’
‘খুশি আবার খুশি না। ’ মুখ ভার করে বলে রুবি।
‘কেন? মানে?’ অবাক হই আমি।
এমন সময় ডাক পড়ে। আকাশ মামা অনুমতি এনেছে। মায়ের রুমে ঢুকি। মাকে চেনার উপায় নেই। শুকিয়েছে শরীর। চোখের নিচে কালি। হাতের রগগুলো কালো কালো হয়ে খুব বেশি চোখে পড়ছে। কিছু অচেনা, অজানা নল-সূচ ঢোকানো শরীরে।
‘তোরা বস এখানে। ’ মা আস্তে করে বলেন। কথা বলতেই তার কষ্ট হয়। মনে হয় অনেক পরিশ্রমের কাজ।
আমরা দু’জন তার দু’পাশে বসি। মা, রুবি আর আমার কপালে চুমু খান। তারপর বড়মামাকে বলেন আমাদের খেয়াল রাখতে। বাবা চলে যাবে দেশে এটা মাথায় আছে মায়ের।
সবশেষে মা কাঁদেন। শুধুই কাঁদেন। কান্নায় কোনো আওয়াজ নেই। চোখের দু’কোণ গড়িয়ে শুধু পানি পড়ে।
আমরা অনেক বোঝাই, বলি, ‘মা, কাঁদবা না। কাঁদলে শরীর খারাপ করবে আরও। ’ মা শোনে না।
নার্স বিরক্ত হয়। একটু পরেই বলে, এভাবে থাকলে রোগী অসুস্থ হয়ে যাবে। বাইরে যান আপনারা।
মা আমাদের যেতে দিতে নারাজ। বাবা মাকে ধমক দিয়ে বলে, ‘এইজন্যেই আনতে চাই না ওদের। বাচ্চাগুলার মন খারাপ হয় না? রেস্ট নাও। ’
আমি আর রুবি বের হই। বাবা, বড় মামা, আকাশ মামাকে কেবিনের ভেতরে রেখে হাসপাতালের করিডরে হাঁটাহাটি করি।
‘ভাইয়া, মাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে আবার দেখলে খুশি হতে পারি না। এই জন্যেই পারি না। মায়ের কান্নাকাটি ভালো লাগে না। ’ এ কথা বলে আমার হাঁসের ছানার মতোন ছোটবোনটা ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে।
আমি তাকে বুকে টেনে নেই।
আহারে ছোটবোনটা আমার।
কতো কষ্ট তার! কতো কষ্ট আমাদের।
আচ্ছা, মেয়েটা কি জানে সামনে আরও অনেক কষ্ট তার জন্য অপেক্ষা করে আছে?
না। জানে না।
চলবে...

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৬
এসএনএস

আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন-
**মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্‌সান (পর্ব- ১)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্‌সান (পর্ব- ২)

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।