ঢাকা, শুক্রবার, ১ কার্তিক ১৪৩২, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিল্প-সাহিত্য

একগুচ্ছ হাইনরিশ হাইনে | অনুবাদ : সৈয়দ তারিক

অনুবাদ কবিতা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৩০, এপ্রিল ২২, ২০১৫
একগুচ্ছ হাইনরিশ হাইনে | অনুবাদ : সৈয়দ তারিক

সাইকি
___________________________________

      হাতে তার জ্বলে ছোট লণ্ঠন
      প্রেমাবেগ তার সারা বুক জুড়ে,
      সাইকি গোপনে শয্যাপ্রান্তে
      দ্যাখে প্রিয় তার ঘুমায় কী করে।

      লজ্জায় লাল হয়ে কেঁপে ওঠে
      দেখে অপরূপ তার দেহখানি,
      সুবিদিত সেই প্রেমের দেবতা
      জেগে ওঠে আর পালায় তখনই।



      প্রায়শ্চিত্তে আঠারো শতক!
      সাইকি কষ্টে হলো ক্ষীণকায়,
      শাস্তি নিল সে যেহেতু দেখেছে
      নগ্ন শরীরে প্রেম চমকায়।


গাছ
___________________________________

      হেমলক গাছ একাকী দাঁড়িয়ে থাকে
      উদীচীর পারে এবড়ো খেবড়ো পাহাড়ে;
      ঝিমায় সে আর বরফ, তুষারপাত
      ঢেকে দেয় তাকে শৈত্য ও শাদা বাহারে।

      স্বপ্নে দ্যাখে সে যুবতী খেজুর গাছ
      সঙ্গবিহীনা বাঁচে নিরাশার সাথে;
      সুদূর প্রাচ্যে সে-গাছ বিলাপময়ী
      সূর্য-গ্রাসিত শিলাময় ঢালু পথে।


ধীবর-যুবতীকে
___________________________________

      ওহে সুন্দরী ধীবর-যুবতী,
      তীরে নিয়ে এসো তরণী তোমার,
      আমার নিকটে এসে বসো পাশে
      হাতে হাত রাখো সুখে নির্ভার।

      আমার এ-বুকে রাখো তুমি মাথা,
      আমার জন্য পেয়ো না গো ভয়—
      যেহেতু নিত্য বিশ্বাসে ঘোরো
      চির অবাধ্য সমুদ্রময়।

      আমার হৃদয়ও সাগরের মতো
      আছে তাতে ঝড় ভাঁটা ও জোয়ার,
      এবং রয়েছে সুশ্রী মুক্তা
      সুগভীর তলে—অগণ্যতার।


রূপক
___________________________________

      কুচকুচে কালো পাল তুলে দিয়ে ছেড়েছি জাহাজ
      উত্তাল এই সাগরের বুকে,
      তুমি তো জানোই গাঢ় বেদনায় আছি বিমর্ষ—
      যন্ত্রণা দাও তবু কৌতুকে।

      বাতাসের মতো তোমার হৃদয়ও অবিশ্বাস্য :
      ঝাপট মারে সে পিছনে-সমুখে;
      কুচকুচে কালো পাল তুলে দিয়ে ছেড়েছি জাহাজ
      উত্তাল এই সাগরের বুকে।


বিপর্যস্ত আবহাওয়া
___________________________________

      জলবাতাসের দুর্দশা এ কী!
      বৃষ্টি ও ঝড় এবং তুষার,
      জানালার পাশে বসে বসে দেখি
      নিচেই জমাট কী অন্ধকার!

      সঙ্গীবিহীনা ঝিকমিকে আলো
      ধীর পায়ে যায় সরণি বেয়ে,
      লণ্ঠন হাতে বৃদ্ধা জননী
      টলে টলে হাঁটে শিথিল পায়ে।

      বুঝি সে কিনেছে ময়দা ও ডিম
      এবং মাখন, সে চায় বানাতে
      আরেকটি কেক, আজকে রাতেই,
      প্রিয় সে ডাগর মেয়েকে খাওয়াতে।

      দোলনায় মেয়ে আলুথালু শুয়ে
      ঘুমঘুমে আড়চোখে দ্যাখে আলো,
      সতেজ মধুর মুখটিকে ঘিরে
      স্বর্ণাভ চুল বাঁকা, জমকালো।

________________________________________________________

আরও পড়তে পারেন:

** হায়াৎ মামুদের অনুবাদে ফেদেরিকো গার্থিয়া লোরকার কবিতা


** জুয়েল মাজহারের অনুবাদে মাহমুদ দারবিশের কবিতা

** বর্ণালী সাহার অনুবাদে পাবলো নেরুদার কবিতা

** সৈয়দ তারিকের অনুবাদে বরিস পাস্তেরনাকের কবিতা



বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।