ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বিশ্বকাপের প্রভাবে এ এক অচেনা বইমেলা

সালাম ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১১
বিশ্বকাপের প্রভাবে এ এক অচেনা বইমেলা

ঢাকা: ছুটির জোয়ারে আগেই অনেকটাই ফাঁকা ঢাকা। তার ওপর বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই ঘরমুখী হতে থাকে মানুষজন।

কিছু সময়ের জন্য হলেও তাই বই প্রেম হার মানে ক্রিকেট প্রেমের কাছে।

প্রতিদিন বিকালে বাংলা একাডেমীর পথে যে ঢল নামতো তা এদিন মোড় নিয়েছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দিকে। স্টেডিয়ামের টিকেট যাদের ভাগ্যে জোটেনি তারা ভিড়ছিলেন নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসানো বড় বড় পর্দার সামনে। আর বাকিরা আশ্রয় নিয়েছিলেন নিজেদের ঘরে, টিভির সামনে।
 
সব মিলিয়ে তাই বৃহস্পতিবারের মেলা ছিল কিছুটা ফাঁকা। মেলা শুরুর পর এদিনই প্রাত্যহিক চিত্রের ঠিক উল্টো দৃশ্য ছিল। পাঠক-ক্রেতার অভাব, নতুন বই কম আসা, মোড়ক উন্মোচনে ভাটাÑসব মিলিয়ে এ এক অচেনা বইমেলা।

এরপরও যে একেবারে ফাঁকা ছিল বইমেলা তা কিন্তু নয়। অন্যান্য দিন যেখানে স্বাভাবিক হাঁটা চলা ব্যাহত হতো এদিন তা ছিল না। অনেকটাই নিরিবিলি ছিল মেলা প্রাঙ্গণ।

আরও এক দিক দিয়ে মেলায় বিশ্বকাপের প্রভাব লক্ষ করা গেছে। ক্রিকেটপ্রেমী শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ, এমনকি মাঝবয়সী অনেক ক্রেতা-দর্শক এদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে মেলায় আসেন।

বেশ ক’জন প্রকাশক-বিক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেল, এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য তারা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। তাই বিক্রি কম হওয়াতে তাদের কোনও আক্ষেপ নেই। তাদের প্রত্যাশা, শুক্রবার থেকে আবারও আগের চেহারা ফিরে পাবে বইমেলা।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সপ্তদশ দিনে মাত্র ৫৩টি বই এসেছে মেলায়, যা এ বারের মেলার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংখ্যা। আর মোড়ক উন্মোচন হয়েছে মাত্র চারটি বইয়ের।

বিকেলে মূলমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও দর্শক পায়নি তেমন।

শুক্রবার আসবেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা
শুক্রবার অমর একুশে বইমেলায় আসবেন শ্যামলীর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রের বেশ ক’জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট সাহিদা বেগমের লেখা ও সাহিত্য প্রকাশ প্রকাশিত ‘মুক্তিযুদ্ধের নির্বাচিত গল্প’ বইটির মোড়ক উন্মোচনকে ঘিরে সমাগম ঘটবে এ মুক্তিযোদ্ধাদের।

এতে প্রধান অতিথি থাকবেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও একই সঙ্গে বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মো. গোলাম মোস্তফা।

মূলমঞ্চে আলোচনা অনুষ্ঠান
মূলমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে ‘রবীন্দ্রনাথের রূপাকুল গান’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক আবদুশ শাকুর।

ভারতের বরেণ্য গবেষক, সংগীতশিল্পী শামসুল হুদার সভাপতিত্বে এতে আলোচনায় অংশ নেন কবি
নজরুল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফজলে এলাহী চৌধুরী।

শুক্রবার দু’টি বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো- ‘আমাদের সাংস্কৃতিক জীবনে ভাষা-আন্দোলনের প্রভাব’ ও ‘প্রকৃতি, শ্যামা ও চিত্রাঙ্গদা’।

এতে পৃথক বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সেলিনা আখতার জাহান ও মনজুরে মওলা।

কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, মিজারুল কায়েস, লিলি ইসলাম ও শুভাশিষ সিনহা।

সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে আবৃত্তি সংগঠন ‘আবৃত্তি একাডেমী’।

পরিচালনায় ছিলেন গোলাম রসুল মারুফ।

মীর মো. ইকবালের পরিচালনায় দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যসংগঠন ‘নূপুর একাডেমী’।

রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী মেজবাহুল আযম মঞ্জু, সামিয়া নাজ, কাবেরী সেনগুপ্তা, সাগরিকা জামালী, সুস্মিতা আহমেদ, নন্দিতা সরকার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।