ঢাকা: শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বাংলার সাংস্কৃতিক চেতনার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছেন। আমরা ব্যাপকভাবে তার গান-নাটক-গল্প চর্চা করছি।
মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত ফোকলোরবিদ শামসুজ্জামান খান রচিত ‘রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক প্রবন্ধের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন বাংলা একাডেমীর কর্মকর্তা সায়েরা হাবীব।
জিল্ল্রু রহমান সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘পূর্ববঙ্গে বসবাস রবীন্দ্রনাথের দীর্ঘ কবি জীবনের অত্যন্ত উর্বর সময়, যা তার সৃষ্টিকর্মে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এই সময়কার কবিতা-গান-ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথকে আমরা এতটা আপন করে পাই, যা আমাদের হৃদয়কে ব্যাপকভাবে আলোড়িত করে। ’
প্রাবন্ধিক বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান প্রবন্ধে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ বিশ্বমানবতার কবি, ঔচিত্যবোধের শ্রেষ্ঠসাধক এবং বাঙালির সাংস্কৃতিক ঋদ্ধি ও সূক্ষ্ম সৌন্দর্যবোধের শীর্ষদেশস্পর্শী প্রতিভা। ইউরোপে গ্যেটে যেমন সংস্কৃতির সামগ্রিকতার প্রতীক, প্রাচ্যে রবীন্দ্রনাথও তেমনি। ’
তিনি বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক ও মানবিকতাবাদী কবি-শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা এবং তাদের অনুসারী নতুন প্রজন্মের বাঙালি মুসলিম শিতি মধ্যবিত্ত উগ্র ডান ও বাম উভয় পন্থার বিকৃতিকে উপো করেই রবীন্দ্রনাথকে তাদের জীবনে এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যথাযোগ্য মর্যাদায় বরণ করে নিয়েছেন। ’
শামসুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রবীন্দ্রনাথ এখন আর শুধু বাংলা সাহিত্যের বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ নন, আমাদের জীবন সাধনারই অপরিহার্য অঙ্গ। এক কথায় রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে আমাদের জীবনযাত্রা অপূর্ণাঙ্গ। ’
রবীন্দ্র একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি শাহেদ রহমান তার আলোচনায় বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের জন্য পূর্ববঙ্গে বসবাসের সময়টা ছিল নিজেকে আবিষ্কার করার স্বর্ণপ্রসারী যুগ। পূর্ববাংলার নৈঃসর্গিক অপরূপে অবগাহন না করলে বাংলাসাহিত্য ও বিশ্বসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের অভ্যুদয় ঘটতো না। আমাদের জাতীয় সংগীতের মতো দেশপ্রেমের এমন দৃষ্টান্ত অন্য কোনও সংগীতে পাওয়া যায় না। ’
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোরশেদ শফিউল হাসান ও প্রাবন্ধিক-গবেষক-শিশুসাহিত্যিক আহমাদ মাযহার।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১১