ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাবি এলাকা নিয়ে সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১১
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাবি এলাকা নিয়ে সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির আন্দোলন সংগ্রাম ও সাংস্কৃতিক জাগরণের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমী, শিল্পকলা একাডেমী ও শিশু একাডেমী ঘিরে একটি সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তুলবো আমরা। এখানে বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতির শিক্ষা, অনুশীলন ও গবেষণা করবেন সবাই।

মঙ্গলবার বিকালে বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সরকার বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি সংরক্ষণে একে একে সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। এরই মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ এবং সেখানেই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক জাদুঘর তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাদুঘরে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সব আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস সংরক্ষিত থাকবে। ’

এ সরকারের আমলেই এর কাজ শেষ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সাল থেকে শুরু হওয়া সংগ্রামের প্রথম সাফল্য আসে ৫২ সালে, ভাষার জয়ের মাধ্যমে। ৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করলেও বেশি দিন টিতে থাকতে পারেনি। পরে ৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস ঘোষণা করা হয়েছে, নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছিল তখন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে প্রবাসী বাঙালিদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মান অর্জন করেছি। পৃথিবীর সব ভাষা সংরক্ষণ, মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও গবেষণার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। সেসময় আমরা এ কাজ শেষ করে যেতে পারিনি। পরে সরকার পরিবর্তন হলে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এবার আমরা এর কাজ ব্যাপকভাবে শুরু করতে যাচ্ছি। এর পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ ও আইন পাস করে এটি পরিচালনার ব্যবস্থা করা হবে। ’

উপমহাদেশের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও জ্ঞানভিত্তিক উদার সমাজব্যবস্থার রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনো আশ্রয় থাকবে না। তাই শিক্ষাকে প্রসারিত করতে, নতুন প্রজন্মের কাছে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা তুলে দিতে তথা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে এমন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ’

প্রধানমন্ত্রী অমর একুশে বইমেলা সাফল্য ও সার্থকতা কামনা করে বলেন, ‘বইমেলা আমাদের চিন্তাকে শানিত ও মনকে উদার এবং হৃদয়কে করে মানবিকতাবোধে উজ্জীবিত। তাই আজকের এ আয়োজন শুধু আনুষ্ঠানিক ব্যাপার নয়; এর পেছনে রয়েছে আমাদের চেতনাকে পরিশীলিত করার তাগিদ, নিজেদের মহৎ ও কল্যাণধর্মী চিন্তায় নিয়োজিত করার প্রেরণা। শুধু পাঠক-লেখকই নয়, শিক্ষা-সংস্কৃতির সঠিক চর্চা করতে পারছে না এমন জনগণের দিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। ’

বাংলা একাডেমীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন অর্থনীতিতে নোবেলবিজয়ী বাঙালি অমর্ত্য সেন।

এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

এসময় অন্যদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্যসহ দেশের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী মেলা ঘুরে দেখেন এবং বর্ধমান হাউসে স্থাপিত জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘর উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।