বিশিষ্ট মার্কসীয় তাত্ত্বিক, রাজনীতিবিদ ও চিন্তক বদরুদ্দীন উমর-এর রচনাসংগ্রহ ২০ খণ্ডে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে শ্রাবণ প্রকাশনী। তাঁর রচনাসংগ্রহের প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে।
আড্ডায় প্রধান অতিথি ছিলেন কথাশিল্পী শওকত আলী। প্রাবন্ধিক, গবেষক নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বই আড্ডায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, অধ্যাপক হাসিবুর রহমান, ফয়জুল হাকিম, রচনা সংগ্রহের সম্পাদক মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবীন আহসান।
বদরুদ্দীন উমরের এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় নব্বই। এ গ্রন্থগুলির অধিকাংশই আজ আর বাজারে পাওয়া যায় না। তিনি বাংলা এবং ইংরেজি দু-ভাষাতেই অক্লান্তভাবে লিখেছেন এবং লিখছেন। দু-ভাষাতেই তাঁর সমান দখল।
আড্ডায় বক্তরা বলেন, বদরুদ্দীন উমর একালের একজন অগ্রগণ্য মার্কসীয় রাজনীতিবিদ এবং শীর্ষস্থানীয় চিন্তক। বিনা তর্কে এ কথা মেনে নেওয়া যায়। তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক তৎপরতা প্রবহমান। সেই সঙ্গে নানামুখী চিন্তার প্রকাশ তাঁর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। তাঁর রাজনীতি এবং চিন্তা দুইই পরস্পর সম্পর্কিত ও অবিচ্ছেদ্য। তিনি মানুষের চিন্তার সঙ্গে মানুষের রাজনৈতিক চরিত্র বিচার করতে আগ্রহী। কারণ মানুষের রাজনৈতিক চরিত্র তার চিন্তাকে প্রকাশ করে; আবার মানুষের চিন্তাভাবনাও তার সামাজিক রাষ্ট্রিক ও রাজনৈতিক চরিত্রকে তুলে ধরে। বদরুদ্দীন উমরের সমস্ত চিন্তাভাবনার গোড়ায় রয়েছে এইরকম এক মৌল নীতি। চিন্তাক্ষেত্রে, তিনি ইতিহাসের সমস্ত ঘটনার মধ্যে রাজনীতির শক্তিকে স্পষ্ট করতে চেয়েছেন। দর্শনগত এই মৌল নীতি তাঁর চিন্তাভাবনার প্রধান কথা।
বদরুদ্দীন উমরের সমস্ত লেখালেখির সঙ্গে আমাদের সবার পরিচয় সমান নয়। বিশেষত, আজ যাঁদের বয়স ত্রিশ, তাঁদের চেষ্টা থাকলেও বদরুদ্দীন উমর তিন-চার দশক আগে কী লিখেছেন, সেটা তাঁদের জানার কোনো উপায় নেই। অন্তত এই বিবেচনাতেও তাঁর রচনাবলী আরো দশ বছর আগে থেকে প্রকাশ হওয়া উচিত ছিল। তাঁর রচনাবলীর ঐতিহাসিক ও সামাজিক গুরুত্ব, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব, সাংস্কৃতিক ও সমকালীনতার গুরুত্ব আজ কারো অজানা ব্যাপার নয়। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় ও মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য ব্যাখ্যায় তাঁর অতুলনীয় অবদানের কথা জানতে হলে তাঁর সমস্ত রচনা পাঠকদের সামনে থাকা দরকার।
বাংলাদেশ সময় ১২৫৮, এপ্রিল ১৬, ২০১২
সম্পাদনা : ফেরদৌস মাহমুদ, শিল্প-সাহিত্য সম্পাদক