ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

সমালোচনার কেন্দ্র গ্যুন্টার গ্রাসের একটি কবিতা !

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১২
সমালোচনার কেন্দ্র গ্যুন্টার গ্রাসের একটি কবিতা !

বেশ কয়েক দিন ধরেই কড়া সমালোচনার মুখে রয়েছেন ৮৪ বছর বয়সী নোবেলজয়ী জার্মান-সাহিত্যিক গ্যুন্টার গ্রাস। আর এসবই ঘটছে সম্প্রতি তার লেখা একটি কবিতাকে কেন্দ্র করে।

কবিতাটি ৪ এপ্রিল একইসঙ্গে সর্বাধিক প্রচারিত জার্মান দৈনিক ‘সুড্ডয়েশে জাইটুং’ (Süddeutsche Zeitung)-এর সাহিত্য পাতাসহ  অন্যান্য ইউরোপীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়।

কবিতায় গ্যুন্টার গ্রাস ইসরায়েলের ইরান-নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন । লিখেছেন ইরান নয় বরং ‘ভঙ্গুর’ বিশ্বশান্তি আরো ‘বিপন্ন’ করবে পারমাণবিক শক্তিধর ইসরায়েল।

কবিতাটি ছাপা হওয়ার পর অনেকে যেমন তার বিরোধিতা করছেন আবার কেউ কেউ তার পক্ষে কলমও ধরেছেন কবিতায় সত্য উচ্চারণের জন্য।

গ্যুন্টার গ্রাসের বিরোধীরা তাকে বলছেন ইহুদি-বিদ্বেষী। সমালোচনায় টেনে আনা হয়েছে তার অতীতকেও। ১৭ বছর বয়সে গ্রাস ছিলেন নাৎসি বাহিনী `ভাফেন-এসএস`র সদস্য। নোবেলজয়ী সাহিত্যিক গ্যুন্টার গ্রাস প্রায় ৬ বছর আগে এই তথ্যটা ফাঁস করে দেন তারই আত্মজীবনীতে। তখনও তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। অনেকে বলেছিলেন, এরপরে গ্রাসকে আর `নীতিপরায়ণ` বলা যায় না।

২০১২ সালে আবার ঝড় তুলেছেন তিনি। অশীতিপর এই সাহিত্যিকের ওপরে আবার খেপেছে তার দেশবাসীরই একাংশ। উপলক্ষ, তার ওই কবিতা। অনুবাদে কবিতাটির শেষের কিছু লাইন এরকম:
 
যে কথা বলতেই হবে
ভঙ্গুর বিশ্বশান্তিকে আরো বিপণ্ণ করছে
পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত ইসরায়েল,
এসব কথা আমি এখন কেন বলছি,
এই বার্ধক্যে এবং কলমের শেষ কালিতে?
কারণ এ কথা বলতেই হবে,
আগামীকালের অপেক্ষা অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে,
(বলতেই হবে) কারণ আমরা- জার্মানরা পূর্বাভাসযোগ্য
এক অপরাধে অনেক সহায়তা দিয়েছি, এ দুষ্কর্মে
সহযোগিতার শাপমোচন হবে না, কোনো সাধারণ অজুহাতেই।

এবং হ্যাঁ, আমি আর চুপ থাকবো না
পশ্চিমের ভণ্ডামিতে
আমি ক্লান্ত, এবং আশাবাদীও
অনেকেই নিরবতা ত্যাগ করবে।
আসন্ন বিপদের কারণ প্রতিরোধ করুন,
সহিংসতার নিন্দা করুন, আহ্বান করুন এবং
জোর দিয়ে বলুন,
দুই দেশের সরকার অনুমোদন করবে এমন
আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইসরাইলের
পরমাণু অস্ত্রের ও ইরানের পারমানবিক কর্মসূচির
বাধাহীন ও স্থায়ী নজরদারি করা হোক।

[অনুবাদ : এম মামুন হোসেন]

তবে নিজের লেখা কবিতা নিয়ে নানামুখি সমালোচনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন গ্যুন্টার গ্রাস। একটি জার্মান টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কবিতাটির প্রচণ্ড সমালোচনা হবে জেনেই তিনি তা লিখেছেন। এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক করার এখনই সময়। এই বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে হবে। জার্মান দৈনিক ‘সুড্ডয়েশে জাইটুং’-এর সাহিত্যপাতায় যেখানে ৪ এপ্রিল কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল, সেই পত্রিকাতেই পুরো বিষয়টি তিনি আরও বিশদভাবে লিখবেন।

এদিকে এ কবিতার কারণে সাহিত্যে নোবেলজয়ী জার্মান লেখক গ্যুন্টার গ্রাসকে  অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ইসরায়েলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসরায়েল সরকার

বাংলাদেশ সময় : ১৮৪৫, এপ্রিল ৯, ২০১২
সম্পাদনা : ফেরদৌস মাহমুদ, শিল্প-সাহিত্য সম্পাদক;

জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।