অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সেতুর উত্তরে বারোঘরিয়া প্রান্তে রেলিংয়ে নতুন রং ঠিকই আছে, তবে মরচে লেগে লোহার পাত ছিদ্র ছিদ্র হয়ে খসে পড়েছে। ব্রিজের ফুটপাতের যে স্লাব রয়েছে তা ভেঙে গর্ত তৈরি হয়েছে।
যেকোনো সময় ফুটপাতে পড়ে গিয়ে বা রেলিং ভেঙে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অথচ কোটি কোটি টাকা আয় হচ্ছে সেতুর টোল থেকে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে স্থলপথে দেশের বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর যুক্ত থাকায় প্রতিদিন পণ্যবাহী শত শত ট্রাক বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে।
স্থানীয় ব্যক্তি আশিক আহমেদ জানান, তারা প্রতিদিন বিকেলে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে ব্রিজ চত্বরে এসে রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে নদীর মুক্ত ও নির্মল বাতাস উপভোগ করেন। তবে গত এক মাস ধরে তারা ভয়ে ব্রিজের রেলিং ধরেন না। কারণ এখন রেলিংয়ের পাশে যেতেই ভয় করে ভাঙা রেলিং ধরলেই হয়তো ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র-টিটিসির একজন শিক্ষক বলেন, বসবাস করি শহরে, কিন্তু কর্মক্ষেত্র নদীর অন্য প্রান্তে হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন হেঁটে ব্রিজ পার হতে হয়। সম্প্রতি ফুটপাতের একটি জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই এত ব্যস্ততম সেতুতেও প্রচুর যানবহনের মধ্যে ফুটপাত ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। আমার মতো এমন হাজারো মানুষের এটি প্রতিদিনের দুর্ভোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা বলেন, জেলার রাজনীতিতে ব্যাপক গ্রুপিং লবিং এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণ এ অবস্থার জন্য দায়ী। তিনি দাবি করেন রাজনৈতিক গ্রুপিং এর কারণে দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি টোল ফ্রি এবং সংস্কারের দাবিতে জনসাধারণের আন্দোলন ও স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন করা হলেও এর ফলাফল শূন্য।
গত কয়েকদিনের বৃষ্টির মধ্যে সেতুর ফুটপাতটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই সেতুর দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে নানা মন্তব্য লক্ষ্য করা গেছে সচেতন মহলের।
গত ২৯ জুন মাহমুদ নিরব নামের এক ব্যক্তি মহানন্দা সেতুর এমন দুরাবস্থার কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন তার ওয়ালে। এবি জাব্বার লিখেছেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগ একদম নিশ্চুপ, এরা শুধু ছোটখাটো রাস্তার সংস্কার করে।
অন্যদিকে মোহাম্মদ রাইহানুল ইসলাম লিখেছেন, ব্রিজটার পাশেই সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস থাকলেও ব্রিজের সংস্কার হয় না।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ জেড এম ফারহান দাউদ জানান, ব্রিজটি ২০-২৫ বছরের পুরোনো হওয়ায় রেলিংয়ের কিছু অংশে মরচে ধরেছে। একসঙ্গে সবগুলো পরিবর্তন করা যাবে না, তাই মরচে পড়ে খসে যাওয়া অংশ খুব শিগগিরই মেরামত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কিছু জায়গায় দেবে গর্ত তৈরি হয়েছে। সেগুলোও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২০
আরএ