ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘রেড জোনে লকডাউন বাস্তবায়ন করলে দেশে সংক্রমণ কমবে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৪ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
‘রেড জোনে লকডাউন বাস্তবায়ন করলে দেশে সংক্রমণ কমবে’

ঢাকা: রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের রেড জোন চিহ্নিত এলাকাগুলো সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে পুরোপুরি লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশে সংক্রমণ কমবে বলে মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, রেড জোন চিহ্নিত হলো, সাধারন ছুটি ঘোষণা করা হলো, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা গেলো না। তখন দেশে সংক্রমণ কমবে না। বরং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা এলাকাগুলোতে অব্যবস্থাপনার কারণে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিহ্নিত রেড জোনগুলোতে লকডাউন বাস্তবায়নের আগে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টার প্রস্তুত রাখেত হবে। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষা করতে হবে ব্যাপক হারে।

নমুনা পজিটিভ এলে ওই ব্যক্তিকে আইসোলেশেন রাখতে হবে। আর আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিকে রাখতে হবে কোয়ারেন্টিনে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সুষম খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালনে বাধ্য করলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে আসবে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় অপ্রস্তুত থেকে বললো আমরা প্রস্তুত। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় প্রতিদিন ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করতে পারলে আমাদের ভোগান্তি কিছুটা কমতো। বর্তমানে আমাদের কিছুটা সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এ সক্ষমতা যদি শুরুর দিকে থাকতো তাহলে আমরা পিক (চূড়া) টাইম পেয়ে যেতাম। এবং সেটা বর্তমানে নিচের দিকে নামতে থাকতো।  

‘আমাদের কিছু ব্যর্থতার কারণেই পিক এখনো পাওয়া যায়নি। পিক উপরের দিকে উঠছে। এটা আরো এক মাস উঠতে থাকবে। জুলাইয়ের শেষের দিকে কিংবা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে থাকলে আমরা বলতে পারবো পিক টাইম পেয়েছিলাম। ’

তিনি বলেন, আমরা যদি বর্তমান সময়ে রেড চিহ্নিত এলকাগুলোতে সঠিক নিয়মে সাধারণ ছুটি দিয়ে পুরোপুরি লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে এই পিক টাইম আমরা আরও ১০ দির আগে পেয়ে যাবো। আগস্ট মাসে আমাদের সংক্রমণ নিন্মমুখী থাকবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, পিক বা চূড়ায় নির্ভর করে আমাদের সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা কেমন কাজ করছি তার উপর। সে ক্ষেত্রে আমরা যত বেশি টেস্ট করতে পারবো তত বেশি করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা নির্ণয় করা যাবে। শনাক্ত ব্যক্তিদের যদি বাড়িতে আইসোলেশনে রেখেও আটকে রাখা যায় তাহলেও নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমবে। এবং আমাদের সফলতাও আসবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাজধানী ঢাকাতেই ৫৬ শতাংশ ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত। বাকি ৪৪ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তি সারা দেশে। ঢাকার কোন এলাকার কোন রোডে কোন বাড়িতে কত রোগী তার সঠিক তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর কাছে নেই। নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে তথ্য গোপন করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই সমস্যায় পড়ছে। তাই রাজধানী ঢাকার রেড জোনের ম্যাপিং করতে সময় লাগছে। কিছু সমস্যার কারণে চিহ্নিত রেড জোনগুলোতে লকডাউন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।  

জানা যায়, সবশেষ মঙ্গলবার (২৩ জুন) দেশের চার জেলার ৭টি এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়। এরও আগে গত ২১ জুন মধ্যরাতে ১০ জেলার ২৭টি এলাকা ও পরদিন ২২ জুন পাঁচ জেলার ১২ এলাকাকে রেড জোন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু করোনায় সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি ঢাকায় থাকলেও সেখানে ৪৫টি রেড জোন চিহ্নিত করা হলেও রেড জোন ঘোষণা করা হয়নি। তবে পরীক্ষামূলকভাবে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারকে রেড জোন ঘোষণা করে সেখানে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
পিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।