ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর হত্যা মামলায় ৪ জেএমবি সদস্যের ফাঁসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর হত্যা মামলায় ৪ জেএমবি সদস্যের ফাঁসি পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর হত্যা মামলায় ৪ জেএমবি সদস্যের ফাঁসি। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: পঞ্চগড়ের সোনাপাতা এলাকার শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ ও প্রধান পুরোহিত মহারাজ যজ্ঞেশ্বর হত্যা মামলায় চার জেএমবি সদস্যের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অপর দু’টি মামলায় তাদের চারজনকে যথাক্রমে ৫ ও ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে।

একই ঘটনায় নিহত পুরোহিতের সেবককে গুলি ও শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। এতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় চার জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে আলাদা রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

এর মধ্যে একটি মামলায় অভিযুক্ত চার আসামিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপর মামলায় ওই চারজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রোববার (১৫ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি ও বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত অপর এক আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী, জেএমবি সদস্য রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ওরফে বাঁধন, আলমগীর হোসেন ও রমজান আলী। এর মধ্যে রাজিবুল ইসলাম বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দিয়েছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।


এছাড়া একই মামলায় অভিযোগ প্রামাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি হারেজ আলী ও রানাকে বেকসু খালাস দিয়েছেন আদালত।

রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু বাংলানিউজকে বিষযটি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের চীন-মৈত্রী সেতু সংলগ্ন সোনাপাতা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জেএমবির অস্ত্রধারী সদস্যরা শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ মহারাজ যগেশ্বর রায়কে (৫০) গলা কেটে হত্যা করে।

ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন ওই মঠের আরেক সেবক। এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই রবীন্দ্রনাথ রায়।

পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আরও দু’টি মামলা দায়ের করে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনালে আসার পর এ মামলায় মোট ৩৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরে আদালতে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।

এই মামলার অভিযুক্ত আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী, জেএমবি সদস্য আলমগীর হোসেন ও রমজান আলী কারাগারে বন্দি ছিলেন।  

এছাড়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ১০ আসামির মধ্যে চারজন বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু। আর আসামিপক্ষে ছিলেন- অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
এসএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ