ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কাঁচামরিচের গুঁড়া উদ্ভাবন, রয়েছে পুষ্টিগুণও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৯
কাঁচামরিচের গুঁড়া উদ্ভাবন, রয়েছে পুষ্টিগুণও কাঁচামরিচের গুঁড়া উদ্ভাবন করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মনজুর হোসেন

রাবি: হলুদের গুঁড়া, শুকনা মরিচের গুঁড়া হয় এটা সবারই জানা। কিন্তু কাঁচামরিচেরও যে গুঁড়া হয় সেটা নিশ্চয়ই অনেকেরই অজানা। খাদ্য তালিকায় রান্নার কাজে অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় কাঁচামরিচ। যেকোন ধরনের তরকারি, সালাদ কিংবা অন্য কোনো খাদ্যে কাঁচামরিচ অপরিহার্য একটি উপাদান।

নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল হওয়ায় কাঁচামরিচ প্রায় প্রতিদিনই বাজার বা দোকান থেকে কিনতে হয়। মানুষ এখন যান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত।

বাজার থেকে কাঁচামরিচ কিনে রান্না পর্যন্ত প্রক্রিয়াটা অনেকেই ঝামেলা মনে করেন। এসব বিবেচনা থেকেই শুরু হয় গবেষণা।

প্রায় দুই বছর গবেষণা শেষে কাঁচামরিচের গুঁড়া উদ্ভাবন করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক অধ্যাপক মনজুর হোসেন।

উদ্ভাবিত এ গুঁড়া কাঁচামরিচের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এতে সরাসরি কাঁচামরিচ না খেয়েও এর পুরো পুষ্টিগুণ পাবে মানব শরীর। কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়াই এ গুঁড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্রিন চিলি পাউডার’। এ পাউডারের রং কাঁচামরিচের রঙের মতোই।  

রাবি অধ্যাপক মনজুর হোসেনের নেতৃত্বে ও জাপানি অধ্যাপক মিস্টার কিনজি টিসুজি তত্ত্বাবধানে দুই বছর আগে এ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। রাজশাহীর কাটাখালী এলাকার ক্যান্সার হাসপাতাল সংলগ্ন আলো আশার স্কুলে চলে এ গবেষণার কাজ। তাদের গবেষণায় সঙ্গে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান।  

কোন ধরনের কেমিক্যালের ব্যবহার না করায় কাঁচামরিচের গুঁড়ার রং, গন্ধ, স্বাদেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর এটা মানবদেহের জন্যও ক্ষতিকর নয় বলে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কর্তৃপক্ষ। তরকারি রান্নার সময় অন্যান্য গুঁড়ার মতো নির্দিষ্ট পরিমাণ ছিটিয়ে দিলেই কাজ শেষ। কাটাকাটির কোনো ঝামেলাই নেই।

উদ্ভাবিত কাঁচামরিচের গুঁড়ায় ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান। গবেষকদের একটি টিম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সার্ভে করে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন। এ গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করা গেলে দেশের জিডিপিতেও ভালো অবদান রাখবে বলেও তিনি আশাবাদী।

গবেষক ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমার জানা মতো বিশ্বে এ প্রথম আমরাই কাঁচামরিচের গুঁড়া উদ্ভাবন করেছি। এটি নিশ্চয়ই আমাদের জন্য আনন্দের। বাণিজ্যিকভাবে কাঁচামরিচের গুঁড়া ছড়িয়ে দেওয়া গেলে আমরা যেমন লাভবান হবো, তেমনি দেশের রপ্তানিতে এটি ভালো অবদান রাখবে। বিশেষ করে এ কাঁচামরিচের গুঁড়াকে কেন্দ্র করে যদি কোনো কোম্পানি বা নতুন মার্কেট গড়ে উঠে তাহলে অনেক কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।

অধ্যাপক মনজুর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শুকনা মরিচের গুঁড়া খেলে অনেকের আলসারের সমস্যা হয়। তাছাড়া শুকনা মরিচের গুঁড়ায় তেমন কোনো পুষ্টিগুণ থাকে না; যেটা কাঁচামরিচের গুঁড়ায় থাকে। কাঁচামরিচকে আমরা ডি হাইড্রেশন করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এ পাউডার তৈরি করেছি।  

এটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি-৬’ রয়েছে। উপরন্তু এর উচ্চশক্তির ক্যাপসাইসিন মেদ কমায় এবং কোলেস্টরল বৃদ্ধি কমিয়ে হৃৎপিন্ডকে সুরক্ষা করে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।