সোমবার (২৯ আগস্ট) সকাল থেকেই স্টেশনটিতে কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। ভিড়ের কারণে অনেক যাত্রী টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে না পারাসহ সময়মতো ট্রেন চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব মানুষ।
বিমানবন্দর স্টেশনে অবস্থান করে সেখানে অপেক্ষামান যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
জানা যায়, নির্ধারিত সময় অনুসারে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে ঢাকা স্টেশন ছেড়ে আসার কথা, কিন্তু এটি ছেড়েছে সকাল ৯ টায়। এ কারণে ভোর থেকেই বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেনে ওঠার জন্য যাত্রীরা আসতে শুরু করেন। যাত্রীদের চাপ এতো বেশি যে অনেকে অগ্রিম টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে পারেননি।
খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে উঠতে না পারা যাত্রী রিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, সাতটার কিছু আগে বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেন আসার কথা। আমরা কয়েকজন মেয়ে তার আগেই এসেছিলাম। এখানে এতো ভিড় যে ট্রেনে উঠতে পারলাম না। আমাদের সিটের টিকিট কাটা ছিলো।
‘আমাদের সঙ্গে লাগেজ আছে আর আমরা সবাই মেয়ে। পুরুষদের সঙ্গে ধক্কাধাক্কি করে পেরে উঠতে পারিনি। যে কোনো বগিতে উঠতে পারলেই হতো। এখন বিকল্প ভাবছি। ’
শুধু রিমা-ই নয়, তার মতো ভোগান্তির এ চিত্র আরো অনেক যাত্রীর।
এদিকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন সূত্র বলছে, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী প্রায় সব ট্রেনই কমপক্ষে এক ঘণ্টা সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে চলাচল করছে।
ট্রেনের বিলম্ব যাত্রা মেনে নিতে পারলেও টিকিট ট্রেনে ওঠতে না পারাকে মেনে নিতে পারছেন না অনেক যাত্রী। অনেকে এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠতে বাঁধা দিতে দেখা গেছে স্টেশনে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীদের। যদিও তারা সবাইকে বিরত রাখতে রাখতে পারছেন না ছাদে ওঠা থেকে। অনেকে ঝুঁকি নিয়েই ছাদে চড়ছেন।
কেউ কেউ ট্রেনে জায়গা না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে কমলাপুর স্টেশন থেকেই ছাদে চড়েছেন। তবে অনেকেই ট্রেনের ইঞ্জিনের পাশে ও গেটে ঝুলে ঝুলে, কিংবা ছাদে চড়ে রওনা দিয়েছেন বাড়ির পথে।
ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠা যাত্রী আসিফ বাংলানিউজকে জানান, স্ট্যান্ডিং (আসন ছাড়া) টিকিট পেয়েছি। ট্রেনের ভেতরে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। তাই ছাদে ওঠেছি। এর আগেও অনেকবার ছাদে গিয়েছি। সমস্যা হয় না। অসতর্ক থাকলে বা অনেকে ঘুমিয়ে পড়ে এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।
নজরুল ইসলাম নামে বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত আজিজুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ভিড়ের কারণে ট্রেনে যেতে কষ্ট হলেও বাসের চেয়ে শান্তিদায়ক। যদিও এবার শুনতেছি যানজট কম। পরিবারকে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন শুধু নিজে একা যাচ্ছি।
এদিকে সোমবার ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস হওয়ার কারণে বিকেল থেকে যাত্রীর চাপ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন রেল সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দর স্টেশনে কর্মরত এক কবর্মকর্তা জানান, ঈদ আর ইজতেমার সময় যাত্রীদের ছাদে ওঠা থেকে বিরত রাখা খুবই কঠিন। কারণ ওই সময়টায় যাত্রীর প্রচণ্ড চাপ থাকে।
‘তাছাড়া সবাই তো বাড়ি যেতে হবে, সে অনুযায়ী পরিবহনের ব্যবস্থাও নেই। সবাই তো ট্রেনের ভেতরে জায়গা দেওয়া সম্ভব না। ’
তিনি দাবি করেন, প্ল্যাটফর্মে টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রী ঢুকতে পারছে না। সঙ্গে সঙ্গে হকারও কম। এ কারণে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীদের ভোগান্তি কিছুটা কম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৮
এমএএম/এমএ