ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বেলাল চৌধুরীকে শহীদমিনারে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা বুধবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
বেলাল চৌধুরীকে শহীদমিনারে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা বুধবার

ঢাকা: একুশে পদকপ্রাপ্ত সদ্যপ্রয়াত কবি বেলাল চৌধুরীর মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বুধবার (২৫ এপ্রিল) শহীদমিনারে নেওয়া হবে।

আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের কাস্টমার ম্যানেজার রাজীব কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, কবি বেলাল চৌধুরীর মরদেহ কিছুক্ষণ পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হবে। সেখানে হিমাগারে মরদেহ রাখা হবে।

বুধবার সকালে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদমিনারে নেওয়া হবে।

এর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১২টা পর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রখ্যাত এ কবি।  তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর।

কবির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার বড় ছেলে আবদুল্লাহ প্রতীক চৌধুরী।

আরও পড়ুন> 

**কবি বেলাল চৌধুরী আর নেই
**বেলাল চৌধুরী সব সময় প্রগতির পক্ষে কথা বলেছেন

বেলাল চৌধুরী ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, রক্তশূন্যতা, হাইপোথাইরোটিজসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলোতে কবি মূত্রনালির সংক্রমণজনিত ‘সেফটিসেমিয়া’ রোগেও ভুগছিলেন।

আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, কবি বেলাল চৌধুরীর মরদেহ গোসল করানোর জন্য প্রথমে মোহাম্মদপুর আল মারকাতুলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে পল্টনের নিজ বাসভবনে নেওয়া হবে। তারপর বিএসএমএমইউ'র হিমঘরে মরদেহ রাখা হবে।

বুধবার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর গ্রামের বাড়ি ফেনীতে জানাজা শেষে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।

হাসপাতালে বেলাল চৌধুরীর মরদেহ দেখতে এসেছেন, কবি কামাল চৌধুরী, অন্য প্রকাশনীর মাজহারুল ইসলাম, কবি তারেক সুজাত প্রমুখ।

দীর্ঘ চার মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার। গত বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। শুক্রবার (২০ এপ্রিল) কবির অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিশালী এই কবি কবিতা ছাড়াও সাহিত্যের অন্যসব শাখায়ও সক্রিয় ছিলেন। প্রাবন্ধিক ও  অনুবাদক হিসেবেও তিনি ছিলেন বিশিষ্ট। একদা সাংবাদিকতার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বেলাল চৌধুরী। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রকাশিত ‘ভারত বিচিত্রা’র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। রূপালী গ্রুপের ‘সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ’ পত্রিকাটিও তিনি সম্পাদনা করতেন। বেশ কয়েক বছর কলকাতায় অবস্থানকালে তিনি কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত সাহিত্য পত্রিকা ‘কৃত্তিবাস’- এ চাকরি করেন।

তার কলকাতাবাসের সময়ে সেখানে আধুনিক বাংলাকবিতার দিকপাল কবিদের সঙ্গে তার পরম সখ্য গড়ে ওঠে। বন্ধুভাগ্যের দিক থেকে তার জুড়ি মেলা ভার। শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ, লরেন্স ফার্লিংঘেট্টিসহ দেশ-বিদেশের বহু কবির সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব, চলাফেরা, আড্ডা ও নিবিড় যোগাযোগ ছিল বেলাল চৌধুরীর। দুই বাংলার কবিদের সেতুবন্ধ রচনার সূত্রধর ছিলেন তিনি। শক্তি চট্টোপাধ্যায় আর বেলাল চৌধুরী ছিলেন এককথায় হরিহর আত্মা। তাদের বন্ধুত্ব ও আড্ডার নানান কাহিনী আজো দুই বাংলার কবিদের আড্ডার খোরাক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।