ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজীবের দুই ভাইয়ের পড়ালেখার দায়িত্ব নেবে সরকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
রাজীবের দুই ভাইয়ের পড়ালেখার দায়িত্ব নেবে সরকার রাজীবের ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আব্দুল্লাহ

ঢাকা: রাজধানীতে দুই বাসের পীড়াপীড়িতে বাসের চাপায় পড়ে হাত হারিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের দুই ভাইয়ের পড়ালেখার দায়িত্ব সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

বুধবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, রাজীব অতিকষ্টে লেখাপড়া করে তার দুই ভাই মেহেদি ও আব্দুল্লাহর লেখাপড়া চালাচ্ছিলো।

এতিম ছেলেটির চিকিৎসার পূর্ণ দায়িত্ব সরকার নিয়েছিল, কিন্তু আমরা তাকে রক্ষা করতে পারিনি। তার দুই ভাই অসহায় অবস্থায় আছে। তাদের দু’জনই একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছে।

“আমাদের ডিজি (সমাজসেবা অধিদফতর) তাদের পরিবারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। এই দু’জনের পরিবার ও তারা যদি সম্মত থাকে তাহলে তাদের মিরপুরে শিশু পরিবারে স্থানান্তর করবো। তাদের কেবল এসএসসি নয়, পরবর্তী পর্যায়ে লেখাপড়া চালানোর দায়িত্বও নেবো। পাশাপাশি কম্পিউটার, দর্জির কাজসহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষিত করে পুর্নবাসিত করবো। ”

একইসঙ্গে রাজীবের পরিবারের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ৫০ হাজার টাকা ছাড় করানো হয়েছে বলেও জানান রাশেদ খান মেনন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রীগত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে বিআরটিসির একটি বাসের সঙ্গে স্বজন পরিবহনের একটি বাসের পীড়াপীড়িতে দুই বাসের চাপায় পড়ে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাজীবের।  

তাৎক্ষণিকভাবে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সরকারের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিলো।  

সোমবার (১৬ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজীব হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ’র চিকিৎসকরা।  

বাউফল উপজেলার বাসিন্দা রাজীব তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াকালে মা এবং অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালে বাবাকে হারান। এরপর মতিঝিলে খালা জাহানারা বেগমের বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন।

এরপর তিতুমীর কলেজে স্নাতকে ভর্তি হয়ে যাত্রাবাড়ীতে মেসে থেকে পড়াশোনা করছিলেন রাজীব। পাশাপাশি তিনি একটি কম্পিউটারের দোকানেও কাজ করতেন। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট দুই ভাইয়ের খরচও চালাতে হতো তাকে। ছোট দুই ভাই একটি মাদরাসায় পড়ে।

ফুটপাতের শিশুটির পড়ালেখার দায়িত্ব নিলো মন্ত্রণালয়
রাজধানীর ধানমন্ডির ফুটপাতে বিধবা মায়ের সঙ্গে থাকা শিশু ফাতেমাতুজ্জোহরার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। প্রতিবন্ধী বিধবা মা কোহিনুর বেগম ও তার কন্যা পথশিশু ফাতেমাকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দৃষ্টি আকর্ষণের পর এ উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়।  

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিচ্ছি। ডিগ্রি পর্যন্ত তার দায়িত্ব নেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধী হিসেবে তার মায়ের প্রতি মাসে ৭০০ টাকা হিসেবে গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ছয় হাজার তিনশ’ টাকা হস্তান্তর করেন মন্ত্রী।

সমাজে যারা এভাবে পড়ে আছেন তাদের দায়িত্ব নেওয়া কেবল দাফতরিক কাজ নয়, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলেও জানান মন্ত্রী।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার আতিয়ার, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কলেজছাত্র রাজীবের দাফন সম্পন্ন

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮/আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad