ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘শহীদ জিয়া’ সরিয়ে শুধু ‘শিশুপার্ক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
‘শহীদ জিয়া’ সরিয়ে শুধু ‘শিশুপার্ক’ সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আকম মোজাম্মেল হক

ঢাকা: এক সপ্তাহের মধ্যে ‘শহীদ জিয়া শিশুপার্ক’ এর নামফলক সরিয়ে নতুন নামফলক ‘শিশু পার্ক’ স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। 

বুধবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রকল্প সম্পর্কে অবহিতকরণ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

১৯৭৯ সালে ‘শহীদ জিয়া শিশুপার্ক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

শিশুদের বিনোদনের জন্য পাবলিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম এই শিশুপার্কটি ১৯৮৩ সাল থেকে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের উদ্যোগে ১৫ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত পার্কের তত্ত্বাবধান করে সিটি করপোরেশন।

শহীদ জিয়া শিশু পার্কের নাম পরিবর্তন করা হবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে শিশুপার্কের নাম আমরা পরিবর্তন করেছি। আপনারা অনেকেই হয়তো এটা জানেন না। পার্কটি একটু সরিয়ে নতুনভাবে করা হবে।

নামফলক এখনো সরানো হয়নি বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে ফেলা হবে।  

‘শিশুপার্কটি একটু স্থানান্তর করা হবে। ওই পার্কটি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের জায়গায় করা। তাই সরিয়ে ফেলা হবে। পার্ক স্থাপনের পর জিয়াউর রহমানকে যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন যেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে, সেখানে শিশুপার্ক করা হয়েছে কেন? জবাবে জিয়াউর রহমান বলেন, মুসলমানদের পরাজয়ের কোনো চিহ্ন রাখতে নেই। সেজন্য তিনি সেখানে শিশুপার্ক করেছেন। অর্থাৎ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়কে মুসলমান বা ইসলামের পরাজয় হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ’

মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা জানি সেই ঐতিহাসিক স্থানে এখন শিশুপার্ক আছে। আরেকটু পিছিয়ে ওই জায়গায়টি বাদ দিয়ে নতুন শিশুপার্ক হবে। পরের অংশে করা শিশুপার্কে বিভিন্ন রাইড হবে। আমরা সেখানে শিশুদের আনবো, যাতে এসেই চলে না যায়। এমন সিস্টেম হবে যাতে শিশুরা সবকিছু ঘুরে দেখে।  

‘শিশুরা ঘোরার পাশাপাশি দেশের ইতিহাসও যাতে দেখতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হবে। ইতিহাস জাগ্রত করার পরিকল্পনা নিয়ে শিশুপার্ক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন কী নাম দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, নতুন করে কোনো নাম রাখা হয়নি, শহীদ জিয়া বাদ দিয়ে এখন শুধু ‘শিশুপার্ক’।  

মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় বিদেশি বন্ধুদের সংবর্ধনায় দেওয়া ক্রেস্টে স্বর্ণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছি। কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধি মোতাবেক আমাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আমরা অনেক আগেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে তাগিদপত্র দিয়েছি। কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা তাদের ওয়েবসইটে দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা যেখানেই যাই সেখানে একটি বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ি। কি হলো তা মানুষের জানার অধিকার আছে।  

মুক্তিযোদ্ধা তালিকার বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, সরকারের এই মেয়াদেই মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে। না পারলে অন্তত যেটুকু আমাদের বিবেচনায় আছে সেটুকু প্রকাশ করবো। তালিকা প্রকাশ করার আগে একটি আইনও করতে হবে প্রমাণ হিসেবে। কারণ কেউ বাদ পড়লে আমি তার প্রতি অবিচার করতে পারি না। সহজেই যাতে কেউ তালিকাভুক্ত হতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটি শেষ হলে আট ধরনের বারকোড দিয়ে সনদ তৈরি করা হবে। দেশে টাকা জাল হলে এই সনদ জাল করা সম্ভব হবে না। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এই সনদ তৈরি করা হবে।  

মন্ত্রী বলেন আরও , ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী একযোগে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত প্রতীকী ব্লাকআউট অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে যে যেখানে যে অবস্থায় থাকবে, সেভাবে এই কর্মসূচিতে অংশ নেবে। এজন্য রাত ৯টার আগেই মসজিদ, মন্দির ও শহর-বাজারে মাইকে কর্মসূচির বিষয়ে প্রচার করা হবে। কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের ঘুমন্ত নারী-পুরষ ও শিশুদের উপর যে বর্বর হামলা করেছিল তার সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮/আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।