ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নীরবে আকুল চোখে ফেলিতেছ বৃথা শোকে...

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৮
নীরবে আকুল চোখে ফেলিতেছ বৃথা শোকে... এই কফিনে প্রিয়জন শুয়ে আছে নিথর হয়ে, আঁকড়ে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন এক স্বজন। ছবি: জিএম মুজিবুর

ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাঠমান্ডু) থেকে: প্লেনে ওঠার আগে কেউ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ‘বিদায় আমার দেশ পাঁচ দিনের জন্য, এভারেস্টের দেশের ডাক শুনতে পাচ্ছি।’ কেউ লিখেছিলেন ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশে উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’ আবার কারও পোস্টে ঝরেছিল দারুণ উচ্ছ্বাস, ‘তৃতীয় হানিমুন।...নেপালের কাঠমান্ডু যাচ্ছি।’

মরদেহ নিয়ে আসা হচ্ছে দূতাবাস প্রাঙ্গণে।  ছবি: জিএম মুজিবুরকে জানতো এমন উচ্ছ্বাসের বঙ্গোপসাগরীয় ঢেউ পরিণত হবে হিমালয়সম শোকে? প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমিতে যাওয়া মানুষগুলো ফেরত আসবে নীরব-নিথর কফিনবন্দি হয়ে?

এই ক’দিন আগের উচ্ছ্বসিত মুখগুলো এখন নীরবে শুয়ে কফিনে কফিনে।                     <div class=

ছবি: জিএম মুজিবুর" src="http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Condolence-Scene-220180319143654.jpg" style="width:100%" />
কাঠমাণ্ডুর পাহাড়ঘেরা বিপজ্জনক বিমানবন্দর ত্রিভুবনে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা এমনই এক শোকাভিভূত বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশকে। প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে এই প্রাণোচ্ছল মুখগুলোর আকস্মিক মৃত্যু মানতে পারছে না গোটা জাতি, শোকের ভার বইতে পারছেন না তাদের স্বজনরাও।  
মুখ চেপেও কান্না থামাতে পারছিলেন না এক স্বজন।  ছবি: জিএম মুজিবুর
ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ যখন কফিনবন্দি করে সোমবার (১৯ মার্চ) নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনা হয়, তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তাদের স্বজনরা। গত ১২ মার্চের দুর্ঘটনার পরদিনই ১৩ মার্চ স্বজনদের নেপালে নিয়ে যায় দুর্ঘটনাকবলিত এয়ারলাইন্স এইউএস-বাংলার কর্তৃপক্ষ। স্বজন এসেছে, তবে কফিনবন্দি হয়ে, এই শোক সইবেন স্বজন কেমন করে? ছবি: জিএম মুজিবুরনামাজে জানাজার আগে প্রিয়জনের মরদেহবাহী কফিন দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাখা হলে তা আঁকড়ে ধরে গুমরে কেঁদে ওঠেন স্বজনরা। কেউ কেউ প্রিয় মুখখানির নিথর মরদেহবাহী কফিনের দিকে তাকিয়ে কান্না চাপাতে মুখ চেপে ধরছিলেন বারবার।

এ শোক বহিবার দাও শকতি।  ছবি: জিএম মুজিবুর
দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মোট ২৬ বাংলাদেশি। এদের মধ্যে শনাক্ত করে দেশে আনা হচ্ছে ২৩ জনের মরদেহ, শনাক্ত প্রক্রিয়ায় রয়ে গেছে আরও তিন জনের মরদেহ। স্বজনের কফিনের সামনে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক স্বজন।  ছবি: জিএম মুজিবুরবাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ প্লেনে যাদের মরদেহ নিয়ে আসা হচ্ছে, তারা হলেন- উম্মে সালমা, আঁখি মনি, বেগম নুরুন্নাহার ও শারমিন আক্তার, নাজিয়া আফরিন ও এফ এইচ প্রিয়ক, -বিলকিস আরা, আখতারা বেগম, মো. রকিবুল হাসান, মো. হাসান ইমাম, মিনহাজ বিন নাসির, তামাররা প্রিয়ন্ময়ী, মো. মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহারা তানভীন শশী রেজা, অনিরুদ্ধ জামান, রফিক উজ জামান এবং পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ, খাজা সাইফুল্লাহ, ফয়সাল, সানজিদা ও নুরুজ্জামান। দূতাবাস প্রাঙ্গণে নিহতদের নামাজে জানাজা।  ছবি: জিএম মুজিবুরযাদের মরদেহ থেকে যাচ্ছে, তারা হলেন- পিয়াস রায়, নজরুল ইসলাম ও আলিফুজ্জামান। ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিহতদের মরদেহ, সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকায়।  ছবি: জিএম মুজিবুরবিকেলে মরদেহগুলো ঢাকায় পৌঁছালে আর্মি স্টেডিয়ামে তাদের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা হবে। সেখানে তাদের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানাজার পর এই ২৩ জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।  

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ প্লেনে নিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ।  ছবি: জিএম মুজিবুর
নিহতদের যে স্বজনদের ইউএস-বাংলা নেপালে নিয়ে এসেছিল, তাদের এদিনই বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৮
জিএমএম/এইচএ/

** স্বজনরা ইউএস-বাংলায়, মরদেহ গেলো কার্গোতে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।