ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা চায় বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৭
দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা চায় বাংলাদেশ

সংসদ ভবন থেকে: দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চায়। দেশের সব মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে মাছ-মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক।

সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গত আট বছরে মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরেন তিনি।



আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশে একটি ডেইরি বোর্ড প্রতিষ্ঠাসহ নীতি সহায়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।  

এ লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ চারটি পর্যন্ত গরু কেনার জন্য জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মোট ১৭৫ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতাধীন ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২১ মাসে, অর্থাৎ বিগত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই ঋণ দেওয়া হয়।

সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, মৎস্য সম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় ১৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩৯৭ কোটি এক লাখ টাকা। একইসঙ্গে মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের আওতায় দুটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর মধ্যে সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা জোরদার ও অবকাঠামো উন্নয়নে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং ঝিনুক ও শামুক চাষ বাড়াতে ১১ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।  

গোলাম দস্তগীর গাজীর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, মৎস্যখাতে ক্ষুদ্রঋণ নির্দেশিকা-২০১১ এর আওতায় ৫৫ হাজার ৫৯৯ জনকে ৩৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয়েছে।  

নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে ছায়েদুল হক জানান, জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মাছ উৎপাদন বাড়াতে চার বছর (২০১৫-১৯) মেয়াদী প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর আওতায় ইতিমধ্যে ৪৩ জেলার ১৭৫টি পুকুর/দিঘী, ৩২টি খাল/বিল পুনঃখনন করে চাষের উপযোগী করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ পেয়েছে তিন হাজার ২৭৫ সুফলভোগী। এছাড়া সংস্কারকৃত জলাশয়ে দুইশ পাইপ কালভার্ট স্থাপন করা হয়েছে।
 
একই সংসদ সদস্যের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ বাড়াতে ২৯ জেলার ৬৩ জেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এর আওতায় ৯০৯টি প্রদর্শনী খামার স্থাপন করা হয়েছে, প্রশিক্ষ দেওয়া হয়েছে ছয় হাজার একশ চাষিকে।  

নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রাণী রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে দেশের বিমান, সমুদ্র ও স্থল বন্দর এলাকায় মোট ২৪টি কোয়ারেন্টাইন স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব স্টেশনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, পিকআপ ও মোটর সাইকেল ক্রয় করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ২২টি মিনি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি পর্যায়ের ৮৪টি হ্যাচারির সুবিধাসহ ১৩৬টি মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার এবং বেসরকারি পর্যায়ের ৯৫২টি মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পোল্ট্রি খামারের সংখ্যা ৪৫টি এবং বেসরকারি রেজিস্টার্ড পোল্ট্রিখামারের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬২৭টি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডেইরি খামারের সংখ্যা আটটি এবং বেসরকারি রেজিস্টার্ড ডেইরি খামারের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৪৯টি।
 
তিনি জানান, বর্তমান সরকার দেশে পোল্ট্রি ও ডেইরি খামারের সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া খামারগুলোকে লাভজনক করতে এগুলোর উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার আওতায় দেশের তিন হাজার ৮৮০টি কৃত্রিম প্রজনন উপকেন্দ্র ও পয়েণ্ট পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৭
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ