ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মানবিক বিপর্যয়ের মুখে উখিয়া-টেকনাফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
মানবিক বিপর্যয়ের মুখে উখিয়া-টেকনাফ

ঢাকা: বাংলাদেশে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ, উখিয়া, শাহপরীর দ্বীপ প্রভৃতি এলাকায় রাখাইন রাজ্য থেকে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ (বামাসপ)।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনটি বিষয়টি জানায়।
 
এতে বলা হয়, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা আগমনের ফলে এসব অঞ্চলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে স্থানীয়রা যেমন উৎকণ্ঠায়, তেমন প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়ের জন্য আগত রোহিঙ্গারাও মানবেতর জীবনযাপন করছে। মানবিক বিবেচনায় এ সব সহায়-সম্বলহীন অসহায় মানুষগুলোকে সাময়িক আশ্রয় দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করে সরকার যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে তা বিশ্ব দরবারে প্রশংসার দাবি রাখে। রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে।
 
বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ-বামাসপ এর প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল অধিকারী যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
 
এতে আরও জানানো হয়, রোহিঙ্গারা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য সমস্যায় করুণ পরিস্থিতির মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষিপ্তভাবে মানবিক সহায়তার হাত না বাড়িয়ে জেলা পর্যায়ে একটি নির্দিষ্ট ত্রাণ ও তহবিল সেন্টার চালু করা হলে সেখানে সবাই যে যার মতো ত্রাণ রেখে গেলে সেগুলো পরিকল্পনা মাফিক দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারে।
 
শিশু, নারী ও বয়স্ক লোকদের দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সৃষ্টি করতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ না করে সহনশীলতার সঙ্গে এসব মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা বিবেচনা করে স্থানীয়দের পাশে থাকতে হবে।
 
বামাসপ মনে করছে, রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে অস্বীকার করার মিয়ারমারের কোনো অধিকার নেই। তাদের মিয়ানমার সরকারকেই নিরাপত্তা দিতে হবে। যাতে নিজেদের দেশে তারা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে অবিলম্বে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে রাজি করাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বড়াতে হবে।
 
নোবেল পুরস্কার জয়ী অং সান সুচির ভূমিকা মানবতা ও বিশ্ব শান্তির বিরোধী। তার আচরণ মনোকষ্টের সঙ্গে ধিক্কার জানায় বামাসপ। রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যে অসামরিকীকরণ করে নিরাপদ আকাশ ও ভূমির ব্যবস্থা করে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তাদের নিজভূমিতে নিরাপদে সম্মান ও অধিকারের সঙ্গে বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
 
মানবিক কারণে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের যথাসম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি কূটনৈতিক পর্যায়ে চাপ বৃদ্ধিসহ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতিসংঘসহ বিশ্ব মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জোরালো ভূমিকা রাখতে বামাসপ জোরালো আহবান জানাচ্ছে।    

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
আরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।