বলছি বুড়িগঙ্গার কথা। শীত ও গ্রীষ্মকালে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি নোংরা ও দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে যায়, বর্ষা মৌসুমে বুড়িগঙ্গা কানায় কানায় ভরে যায়।
ফল বিক্রেতা কাশেম থাকের কেরানীগঞ্জে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বর্ষাকালে বুড়িগঙ্গার পানি অল্প স্বচ্ছ থাকে। তবে পানি কমতে শুরু করলেই আবার নোংরা হয়ে উঠবে। এ সময়টায় নতুন পানি আসে। তাই দুর্গন্ধও কিছুটা কমে।
সদরঘাটে দুপুর গড়ালেই লঞ্চগুলোর ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। আর এখানটা ময়লাতেও পরিপূর্ণ। লঞ্চ থেকে যাত্রীদের ফেলা ময়লা এবং বর্জ্য পানিকে ঘোলা করে রেখেছে। এখানে ছোট লঞ্চগুলো চলা শুরু করলেই ফেনা উঠছে পানি থেকে।
ঘাটের কাছেই পানিতে গোসল করছেন কয়েকজন কিশোর। বাবার নামে একজন জানান, আমরা ঘাটেই থাকি। এই সময়টায় পানি কিছুটা পরিষ্কার থাকে বলে গোসল করা সম্ভব হয়। অন্য সময় এখানে নামলে দম বন্ধ হয়ে মারা যেতে হবে। লালবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় নদীর পানি অনেকটাই পরিষ্কার। ছোট নৌকায় নদী পার হচ্ছেন যাত্রীরা। এখানে নদী ঘিরেই জীবন গড়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম ষাটোর্ধ্ব। তিনি বলেন, তিন দিন আগেও বৃষ্টি হয়েছে। পানিতে এখন নদী টইটুম্বুর। অন্য সময় এখান দিয়ে নদী পার হতে গেলে দুর্গন্ধে নাক বন্ধ করে রাখতে হয়। এখন এ দুর্গন্ধ নেই। তবে বর্ষার পানি চলে গেলে আবারো নোংরা রুপে চলে যায় বুড়িগঙ্গা।
তিনি বলেন, ঢাকার দক্ষিণ পশ্চিমে এ নদী বয়ে গেছে। বুড়িগঙ্গার অবস্থাটাই বেশি খারাপ। তুরাগ বা ধলেশ্বরীর অবস্থা কিন্তু এতো বাজে না। কেরানীগঞ্জের ওখানে তুরাগে গেলে দেখা যাবে মানুষ মাছও ধরছে। বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ে অতিরিক্ত শিল্প কারখানার ফলেই নদীর অবস্থা এতোটা বিপর্যস্ত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়াও রয়েছে অতিরিক্ত মানুষের বসবাস। ঢাকাকে ঘিরে রাখা অন্য নদীগুলোর ওপর এতো চাপ নেই।
এক সময় এই নদীতে দূরন্ত শৈশব কেটেছে। মাছ ধরে, গোসল করে, রোদে ঝাঁপ দিয়ে বুড়িগঙ্গাকে আরো আপন করে নিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এমএন/এএটি/