ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদের আগে মহাসড়কে খোঁড়াখুঁড়ি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
ঈদের আগে মহাসড়কে খোঁড়াখুঁড়ি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মহাসড়ক ঘুরে: ঢাকা-বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার মধ্যে রয়েছে অসংখ্য মরণ বাঁক। এসবের মধ্যে ১৫টি বাঁককে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে হাতে নেওয়া হয়েছে দুই লেন করার প্রকল্প। ২০১৫ সালের মে মাসে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

সে থেকে দুই লেনের কাজ হয়েই আসছে। এর মধ্যে কোরবানির ঈদ গত হয়ে গেছে।

আরেকটি ঈদ আসন্ন। প্রকল্প থেকে পাঁচটি বাঁক বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ যেন শেষই হচ্ছে না। বরং ঈদের আগে মহাসড়কের এসব স্থানে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে।

স্কেবেটর (ব্যাকো) দিয়ে মহাসড়কের মাঝ বরাবর খোঁড়া হচ্ছে। খোঁড়া স্থানের ভেতর দিয়ে আইল্যান্ড বসানো হবে। এ খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। দু’পাশ দিয়ে থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে।

রাতের জন্য স্থানগুলো মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ আকার ধারণ করে আছে। এছাড়া ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মহাসড়কে ততই যানবাহনের চাপ বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টদের ভূমিকায় চরম দায়িত্বহীনতার প্রশ্ন উঠেছে।

রোববার (১৮ জুন) মহাসড়কের বগুড়ার উত্তরের শিবগঞ্জ ও দক্ষিণের শেরপুর উপজেলার মধ্যে অবস্থিত স্থানগুলো ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের ঘোগাব্রিজ, মির্জাপুর, নয়মাইলসহ পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে ঈদের আগ মুহূর্তে এসে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। মহাসড়কের মাঝ বরাবর স্কেবেটর দিয়ে কাটা হয়েছে। কাটা স্থানের দু’পাশ দিয়ে খুঁটি দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছে লাল কাপড়। যানবাহন থেমে থেমে পার করা হচ্ছে। এতে চরম যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাজের সামগ্রী মহাসড়কের মাঝে ও পাশ দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে।

শফিকুল ইসলাম, মুনজিল হোসেন, ফরিদ উদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, একেকদিন একেক বাঁকে কাজ করা হচ্ছে। কোনো বাঁকের কাজ একবারে শেষ না করে অন্যটি যাওয়া হচ্ছে। এতে করে সংশ্লিষ্ট বাঁক এলাকায় চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকায় দুর্ঘটনায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছেমতো এসব কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন এসব ব্যক্তিরা।    
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহাসড়কের বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার মোট পনেরটি বাঁককে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে দুই লেন করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। গত কোরবানি ঈদের প্রায় দু’মাস আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব বাঁকে কাজ শুরু করে। ওইসব স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি করে। বালু ও খোয়া দিয়ে স্থানগুলো পূরণের কাজও গুটিয়ে ফেলা হয়। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমআবার নকশায় ক্রটি দেখা দেয়। ঈদের আগে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সংশোধনের জন্য নকশা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়। নকশা সংশোধিত হয়ে আসে। ১৫টির মধ্যে পাঁচটি বাঁক দুই লেন করা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বগুড়ায় দু’টি ও গাইবান্ধায় তিনটি।

চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে এসে এসব বাঁকে আবারও কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই লেন কাজ শেষ করা হয়। কিন্তু মহাসড়কের মাঝে আইল্যান্ডের কাজ বাদ রাখা হয়। এখন সে আইল্যান্ড দেওয়ার কাজ চলছে। তবে ঈদের আগে সংশ্লিষ্টরা এ কাজ শেষ করতে পারবে কী-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগে কাজ শেষ করতে মাঠে থেকে আমি নিজে বিষয়গুলো তদারকি করছি। তাই ঈদের আগেই এসব কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি জনদুর্ভোগের কথাও স্বীকার করেন সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
এমবিএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।