ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আবুসহ চার জঙ্গির দাফন সম্পন্ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
আবুসহ চার জঙ্গির দাফন সম্পন্ন শিবনগর জঙ্গি আস্তানা

শিবনগর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ): চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগরের জঙ্গি আস্তানায় নিহত রফিকুল ইসলাম আবুসহ চারজন জঙ্গির দাফন করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) ভোররাতে শিবগঞ্জ উপজেলার ফকিরপাড়া গোরস্থানে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে তাদের দাফন করা হয়। দাফনের সময় আবু’র পরিবারের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।

এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে রফিকুল ইসলাম আবুসহ চার জঙ্গির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তবে বাকী তিন জঙ্গির পরিচয় শনাক্ত করতে না পারায় তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
 
এদিকে, জঙ্গি আস্তানায় গুলি বিস্ফোরণের ঘটনায় শনিবার সকালে শিবগঞ্জ থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামালা দায়ের করা হয়েছে।

শিবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুস সালাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আবু ও নিহত অজ্ঞাত পরিচয় অপর তিন জঙ্গিসহ আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়ারেছ আলী মিয়া শনিবার সকালে বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। আবুর মরদেহ ছাড়া বাকীদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগরে জঙ্গি আস্তানায় নিহত চার জঙ্গির মধ্যে আবু ছাড়া বাকীদের পরিচয় জানতে তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরিচয় জানতে প্রচেষ্টা চলছে শিগগিরই তাদের শনাক্ত করা যাবে।
জঙ্গি আস্তানা থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও একটি সুইসাইড ভেস্ট উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া সেখানে বিস্ফোরক মিলেছে। তাই সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের নমুনা সংগ্রহের পর জঙ্গি বাড়িটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সেখানে এখনও ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। প্রয়োজনে আবারও উদ্ধার কাজ চলবে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতেই ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ভেতরে থাকা বোমা নিষ্ক্রিয় করে চলে গেছে। আত্মঘাতী বোমায় নিহত চারজনের পরনেই ছিল জিনসের প্যান্ট ও কালো গেঞ্জি। দুজনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাই ঘটনার পর আবু ছাড়া অন্যদের চেহারা চেনা যায়নি।

এদিকে, ফুলসানা বেগমের ছোট ছেলে সবুরের স্ত্রী রুনা বেগম জানিয়েছেন, তার শাশুড়ি এখনও অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। কথা বলতে পারছেন না। তার শ্বশুর ও স্বামী বাইরে কাজে গেছেন। তাই বাড়ির দায়িত্ব এখন তার ওপর। তবে আবুর মরদেহ না নিলেও তারা আবুর দুই মেয়েকে নিজেদের জিম্মায় নিতে চান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলন, নয় বছর আগে বিয়ে করেন তার ভাশুর আবু। তার পরই জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মূলত শ্বশুর ও স্ত্রী সুমাইয়ার প্ররোচণায় আবু জঙ্গি হয়েছেন বলেও দাবি করেন তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রুনা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য আবুর স্ত্রী সুমাইয়া ইসলামকে (৩৫) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার পাঁচ বছরের মেয়ে সুরাইয়া ইসলাম সাজেদাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের আমবাগানের ভেতরের একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে বাড়িটি ঘেরাও করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও জেলা পুলিশ।

দু’দিন ধরে ঘিরে রেখে বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়। অপারেশন 'ঈগল হান্ট' শেষে চার জঙ্গি নিহত হওয়ার কথা জানায় পুলিশ। তবে ওই বাড়ি থেকে আবুর স্ত্রী ও তার শিশুকন্যাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
এসএস/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ