ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ময়মনসিংহের আলোর পাঠশালায় দু’দিন তালা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
ময়মনসিংহের আলোর পাঠশালায় দু’দিন তালা! ময়মনসিংহ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ‘আলোর পাঠশালা‘ ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ। সীমানা প্রাচীরে সাঁটানো নোটিশ, প্রবেশ দরজায়ও ঝুলছিল তালা।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) ময়মনসিংহ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারে সরেজমিনে গেলে ছুটির দিন শুক্রবার হলেও বৃহস্পতিবারও বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পাঠকরা। তাদের ভাষায়, ‘আলোর পাঠশালায় সপ্তাহে দু’দিন তালা, মানা যায় না!’  

নাইটগার্ড আব্দুর রহিম প্রবেশ দরজা খুলে দিয়ে জানান,  শনিবার থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে এ গণগ্রন্থাগার।



তবে আধুনিক গণগ্রন্থাগারটির বাইরের পরিবেশটা বেশ মনোরম। কলাপসিবল গেটের চারপাশে ফুলের টব। পাঠকক্ষের সামনে স্টিকারে লেখা- ‘বই পড়িলে আলোকিত হই, না বই পড়িলে অন্ধকারে রই’।
ময়মনসিংহ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ‘আলোর পাঠশালা‘ ছবি: অনিক খান
এক সময় নগরীর ছোট বাজার এলাকায় ভাড়া ভবনে ছিল ময়মনসিংহ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার। আধুনিক পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপনে ২০০৬ সালের এপ্রিলে একনেকে প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রায় ৬ বছর আগে প্রায় ৩৩ শতাংশ জমিতে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে বর্তমান গণগ্রন্থাগারটি।

সার্কিট হাউজ মাঠের পশ্চিম প্রান্তে খোলামেলা পরিসরের গ্রন্থাগারটি এখন মুক্তবুদ্ধির চর্চা আর কবি-লেখকদের মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে।

গ্রন্থাগারের নিচতলায় রয়েছে দু’টি পাঠকক্ষ- একটি বই ও অন্যটি পত্রিকা পাঠের জন্য। এর পশ্চিমে লাইব্রেরিয়ান সালাহউদ্দিনের কক্ষ।

গণগ্রন্থাগারের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর রেজাউল হক মোবাইল ফোনে জানান, সাহিত্য সাময়িকী, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা ও ইতিহাস বিষয়ক অনেক দুর্লভ ও মূল্যবান বই রয়েছে এখানে। গ্রন্থাগারে। মোট বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫৭ হাজার আর সদস্য সংখ্যা ৮৬৬ জন।
ময়মনসিংহ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ‘আলোর পাঠশালা‘ ছবি: অনিক খান
শিশুদের জন্য সদস্য চাঁদা ২শ’ টাকা, শিক্ষার্থীদের ৩শ’ টাকা এবং সাধারণ সদস্যদের চাঁদা ৫শ’ টাকা। বাড়িতে নিয়ে বই পড়তে জামানত বাবদ সদস্যদের দিতে হয় ২শ’ টাকা।

এ গণগ্রন্থাগারে রাখা হয় প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, যুগান্তর, সমকাল, ইত্তেফাকসহ ১২টি দৈনিক। তবে স্থানীয় পত্রিকাগুলো রাখা হয় না।

বন্ধ সরকারি গণগ্রন্থাগারের সামনে জ্ঞানপিপাসু কয়েকজন পাঠক বলেন, ‘সপ্তাহের যে দু’দিন এ সরকারি গণগ্রন্থাগার খোলা রাখা দরকার, সে দু’দিনই বন্ধ থাকে। বাকি দিনগুলোতে অনেকটা অফিস করার মতো এখানে আসা-যাওয়া করেন বইপ্রেমীরা’।
ময়মনসিংহ জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ‘আলোর পাঠশালা‘ ছবি: অনিক খান
বই পড়ুয়া ফ্যাশন ডিজাইনার রাসেল আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘পাঠাগারে মুক্তবুদ্ধি ও লেখালেখির চর্চা হয়। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঘরের কোণে বন্দি রেখে কম্পিউটার-মোবাইল ফোন নির্ভর হয়ে পড়েছে’।

‘সপ্তাহের দু’দিন ছুটি না রেখে পাবলিক লাইব্রেরি খুলে দেওয়া হলে পড়ুয়াদের হাতের ছোঁয়ায় বইগুলো প্রাণ ফিরে পেতো’।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকারি নিয়মেই সপ্তাহে দু’দিন সরকারি গণগ্রন্থাগারগুলো বন্ধ থাকে। তবে ওই দু’দিন খোলা রাখা যায় কি-না, তা চিন্তা-ভাবনা করা হবে’।

আরও খবর...
** ‘জনবল ও অর্থ সংকটে’ বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার
** খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের দুর্দশা চরমে
** বরিশাল গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষও বেহাল!
** গরুর অভ্যর্থনা মৌলভীবাজার গণগ্রন্থাগারে!
** ফেনীর পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে জম্পেশ আড্ডা
** মানিকগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগার কুকুরের বিচরণক্ষেত্র!
** সপ্তাহে ৩ দিনই ছুটি দিনাজপুর পাবলিক লাইব্রেরিতে!‍
** জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে বই আছে, পাঠক নেই!
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
এমএএএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad