ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দাভোস (সুইজারল্যান্ড) থেকে: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পের অপরিমেয় অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কলকারখানায় শ্রমিকদের অধিকার, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সুইজারল্যাণ্ডের দাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় ‘নতুন পানি অর্থনীতির রূপায়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

উপস্থাপক ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী এন্ড্রু স্টিয়ার বলেন, বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিকে ২৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাওয়ার উচ্চকাঙ্খা পূরণে বর্জ্য পানি ট্রিটমেন্ট ও পানি ব্যবহার দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন।

২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কী করছেন, প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক ও বস্ত্র রফতানিকারক দেশ। এ সেক্টরে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন শ্রমিক কাজ করে, যাদের ৮০ শতাংশ নারী। দেশের মোট রফতানির ৮৩ শতাংশ আসে এ শিল্প থেকে।

তিনি বলেন, মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, নিয়ম, চর্চা এবং শ্রমিক-মালিক সুসর্ম্পকের বিচারে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ উচ্চতর মান অর্জন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মূল মজুরি ৭৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ব ব্র্যান্ড ও রিটেলারদের মাধ্যমে তিন হাজার ৭শ ৮০টি কারখানা মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। কারখানাগুলো আর্ন্তজাতিক ব্র্যান্ড ও রিটেলারদের সঙ্গে নিয়ে এখন আর্ন্তজাতিক মান নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

প্রত্যেকটি কারখানায় পেশাদার নিরাপত্তা কমিটি রয়েছে, সেখানে শ্রমিক-মালিক এক সঙ্গে কাজ করে, যোগ করেন তিনি।  

সরকারের শিল্প কারখানা স্থাপনের আগে বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ইটিপি প্রতিষ্ঠা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, বড় আবাসনগুলোতে ইটিপি বসানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সরকার কারখানাগুলোকে ‘গো গ্রিন’ করতে সহযোগিতা করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এলইইডি সার্টিফাইড ৩৮টি কারখানা রয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ১০ গ্রিন কারখানার মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছে ৭টি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্স গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশের লক্ষ্য শতভাগ বর্জ্য পানি শোধন এবং পানি ব্যবহার দক্ষতা অর্জন।

তিনি বলেন, সরকার বর্জ্য পানি শোধনে অবকাঠামো নির্মাণে বড় ধরনের অর্থায়ন, প্রণোদনা, পুনর্ব্যবহার, পানির দক্ষ ব্যবহার, পানি ব্যবহারে পদ্ধতিগত মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠা, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন, বেসরকারি ও সিভিল সোসাইটির অংশ নেওয়া বাড়াতে সরকার কাজ করছে।  

শেখ হাসিনা বলেন, পানি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলের সদস্য হিসেবে আমি ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্স উদ্ভাবনী কাঠামোকে সামনে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের বড় কোনো সমস্যা নয়। যেহেতু এখানে বৃষ্টির মৌসুমে প্রচুর পানি থাকে। কিন্তু পানি সংরক্ষণ করতে হবে।

তিনি বলেন, তার সরকার সারাদেশের নদীগুলোতে খননের মাধ্যমে নাব্যতা বাড়িয়ে নদীর স্বাভাবিক গতি ঠিক রাখতে কাজ করছে।

বাংলাদেশে প্রায় শতভাগ নিরাপদ খাবার পানি ও স্যানিটেশনের সুবিধা অর্জনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সুবিধা থেকে কেউ বাদ যাবে না।

দেশের কৃষি সেক্টরকে টেকসই করতে খরা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু শস্য জাত উদ্ভাবনের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এমইউএম/এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।