ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সুপ্রিম কোর্ট ভবনের প্রস্তাবনা সংশোধনের পরামর্শ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
সুপ্রিম কোর্ট ভবনের প্রস্তাবনা সংশোধনের পরামর্শ সুপ্রীম কোর্টের বর্তমান ভবন। ফাইল ফটো

ঢাকা:  সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবিত ২০তলা প্রশাসনিক ভবনের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশোধন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সভাপতিত্বে গত ২ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু আলোচনায় নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। ফলে অনুমোদন না দিয়ে একনেক সভা থেকে প্রকল্পটি ফিরিয়ে দিয়ে ডিপিপি ঠিক করে নিয়ে আসতে বলা হয়।

এ প্রসঙ্গে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের কোনো জায়গায় প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হলে তা ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত ভবনের নকশা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের অন্যান্য ভবনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সেটা যেমন দেখতে হবে, তেমনি ২০তলা উচ্চতার ভবন নির্মাণ করা সম্ভব কিনা তাও বুঝতে হবে।


 
প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ওখানে ওই উচ্চতার ভবন সিভিল এভিয়েশনের প্লেন উড্ডয়নের জন্য এয়ার ফ্যানেলের বাইরে কিনা সে তথ্যও প্রকল্প প্রস্তাবে সন্নিবেশ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক দফতরগুলো নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হলে আগের জায়গা কিভাবে ব্যবহার হবে ডিপিপিতে তারও বিবরণ থাকা আবশ্যক।
 
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির স্বার্থে বিচার বিভাগের জন্য আরো এজলাসের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলেও একনেক সভায় জানান প্রধানমন্ত্রী।
 
প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন না দেয়ার যুক্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন,  সড়ক ভবনের চারটি ভবন জমিসহ সুপ্রিম কোর্টের ব্যবহারের জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে। সেসব ভবন বর্তমানে কারা ব্যবহার করছে, কি কি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বা ব্যবহারের পরিকল্পনা যদি থাকে তার বিস্তারিত বিবরণ থাকা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কেও সম্পৃক্ত রাখা দরকার।
 
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিধান রয়েছে। আলোচ্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে সম্ভাব্যতা যাচাই না করা হয়ে থাকলে তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করেন।
 
২০ তলা ভবনের প্রস্তাবিত প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর শূন্য দশমিক ৯৫ একর জমিতে ২০তলা ভিত্তির উপরে ওই ভবন নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো।
 
প্রস্তাবের নথি থেকে জানা যায়, ভবনের মোট আয়তন ৪৯ হাজার ৪৫০ দশমিক ৭১ বর্গ মিটার। থাকবে ১২শ’ রানিং মিটার কম্পাউন্ড ড্রেন, তিন হাজার বর্গমিটার আরসিসি রোড কাম ফুটপাথ। ভবনটি ঘেরা থাকবে ৫০০ রানিং মিটার সীমানা দেয়ালে। ভবন চত্বরে থাকবে দুই লাখ গ্যালন ধারণ ক্ষমতার ভূগর্ভস্থ জলাধার। থাকবে কার, ডাবলডেকার, মটরসাইকেল গ্যারেজ।
 
আরো থাকবে ৪০০ আসনের একটি কনফারেন্স রুম, দু’টি ক্যাফেটেরিয়া, একটি সুইমিংপুল, একটি হেলিপ্যাড, ১৮২টি চেম্বার, লিগ্যাল এইড অফিস, মেডিক্যাল সেন্টার, ডে-কেয়ার সেন্টার, লাইব্রেরি, জিমনেশিয়াম ইত্যাদি।
 
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান আবুল বাকের মো. তৌহিদ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ২০তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়েছিলো। তবে তা অনুমোদন হয়নি। এ ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছে একনেক সভা। এ সবের আলোকেই প্রকল্পের ডিপিপি আবারও তৈরি করতে হবে।
 
একনেক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুনভাবে ডিপিপি তৈরি করবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।   এরপরে আবারও একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে।
 
এ প্রসঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের  অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন-১) এসএম আরিফ-উর-রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তারা ফিরিয়ে দিয়েছে, এটা কমন ব্যাপার। ডিপিপি তৈরি করতে ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবে এটাও স্বাভাবিক। এটা একটা কমন প্রসেস। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় যেভাবে চায় সেভাবে আবারও ডিপিপি তৈরি করে প্রকল্পটি পাঠানো হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
এমআইএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।