ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৃষ্টিতে বিঘ্নিত ঈদের কেনাকাটা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
বৃষ্টিতে বিঘ্নিত ঈদের কেনাকাটা অলস সময় পার করছেন পোশাক ও প্রসাধনী বিপণিবিতাগুলোর বিক্রেতারা। ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আষাঢ়’ কবিতায় বৃষ্টিমুখর আষাঢ-দিনের বিড়ম্বনার কথা, টানা বারিবর্ষণের অত্যাচারের কথা লিখেছিলেন। আষাঢ়দিনে ঘরে বাইরে বের না হবার পরামর্শও দিয়েছিলেন কবি:

নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।

ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।


বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর,
আউশের ক্ষেত জলে ভরভর,
কালি-মাখা মেঘে ওপারে আঁধার ঘনায়েছে দেখ্ চাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে। ।

আষাঢ়ের আগে থেকেই চলছিল বৃষ্টি,ঢল ও জলাবদ্ধতার অত্যাচার। আষাঢ় মাস আসবার পর বৃষ্টি এবার যেন আরও জেঁকে বসেছে। আকাশজুড়ে মেঘ আর মেঘ শুধু। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি; কখনো আবার সবকিছু ছাপিয়ে একাকার করে ডুবিয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছে সব মুষলধারে। এ ক’দিনের বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগর চট্টগ্রামের অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। অন্য অনেক শহরেও জলাবদ্ধতার দুর্দশা চরমে। বৃষ্টির এই দস্যুপনা এমন এক সময়ে যখন মানুষ ঈদের কেনাকাটার জন্য মুখিয়ে আছে। আর ব্যবসায়ীরাও ঈদ সামনে রেখে নিয়েছেন ব্যাপক প্রস্তুতি। কিন্তু বৃষ্টি এসে রীতিমতো বাগড়া বসিয়েছে।
ঈদের এখনো সপ্তাহখানেক বাকি। একদিকে চলছে চিকুনগুনিয়া নামের নতুন এক জ্বরের প্রাদুর্ভাব। যার ফলে জ্বরের পাশাপাশি চলছে দীর্ঘমেয়াদী শরীর-ব্যথা। কাবু করে দিচ্ছে ভুক্তভোগীকে।

অপরদিকে বর্ষার বৃষ্টির ফোঁটা মাথায় পড়ে হচ্ছে জ্বর ও সর্দি-কাশি। তাই ঈদের আগে কোনো অসুস্থতায় কাবু হতে চাইছেন না কেউ। অযাচিত অসুস্থতা এড়াতে রাজধানীবাসী ও অন্যান্য শহরবসীরা পারতপক্ষে ঝুঁকি না নেবারই পক্ষপাতী। তারা নিতান্ত বাধ্য না হলে বাসায় থাকাকেই নিরাপদ মনে করেছেন। এমনটাই মনে করছেন ব্যবসায়ীদের অনেকে।
বৃষ্টির কারণে ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিপণিবিতাগুলোর বিক্রেতারা।  ছবি: দীপু মালাকার
সোমবার(১৯ জুন) রাজধানীর উত্তরার রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, রাজউক রাজীব কমার্শিয়াল শপিং মল, নর্থ টাওয়ারসহ কয়েকটি শপিং সেন্টার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতার অভাবে অলস সময় পার করছেন পোশাক, জুয়েলারি ও প্রসাধনী বিপণীবিতানগুলোর বিক্রেতারা।

উত্তরার অভিজাত শপিং মল নর্থ টাওয়ারের নুবনান, দর্জিবাড়ি, ক্যাটস আই ও ইনটেন্সসহ বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতা ছিল হাতে গোনা কয়েকজন।

রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের এ.কে ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী নাজমুল আহসান। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ঈদের আগ মুহূর্তের এই সময়টা ব্যবসাপাতির জন্য এক পয়েন্ট। বেচাবিক্রির জন্য এ সময়টা যথোপযোগী। সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় কোনো ক্রেতা নেই। জানি না সামনের দিনগুলো কেমন যাবে। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে ব্যবসায় ধস নামবে।
বৃষ্টির কারণে ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিপণিবিতাগুলোর বিক্রেতারা।  ছবি: দীপু মালাকার
সায়েদাবাদ থেকে উত্তরার নর্থ টাওয়ার শপিং মলে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাঈন উদ্দিন আরিফ। বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন শার্ট ও পাঞ্জাবি কিনতে।

আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, সকালে যখন বাসা থেকে বের হই তখন আকাশ পরিষ্কারই ছিল। এখানে আসতে না আসতেই বৃষ্টি শুরু। মার্কেট ঘুরে যে কেনাকাটা করবো তারও উপায় নেই। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে কেউ কেনাকাটা করতে ‍আসতে পারে নি। শুধু একটা পাঞ্জাবি কিনতে পেরেছি। দেখি, পছন্দমত কেনাকাটা না হলে আবার হয়তো আসতে হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
এএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।