ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভোটের-কথা

বগুড়া-৩: এমপি বারো, ওরা বলে পনেরো!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৪ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৭
বগুড়া-৩: এমপি বারো, ওরা বলে পনেরো! এমপি বারো, ওরা বলে পনেরো!

বগুড়া থেকে ফিরে: এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগ-তিনি স্কুল শিক্ষক নিয়োগে একটি পদের বিপরীতে একাধিক ‘ডিও লেটার’ দিয়ে টাকা নিয়েছেন। জবাবে এমপি নিজেই বলেছেন, ‘আমি বারো করলে; ওরা পনেরো বলবেই।’

বগুড়া-৩ (আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া) আসনের জাতীয় পার্টির এমপি নুরুল ইসলাম তালুকদারের বিরুদ্ধে শুধু ডিও লেটার বিক্রি নয়, রয়েছে প্রকল্প কেনাবেচার বিস্তর অভিযোগ। এমপির ভাই-আত্মীয় পরিচয়ে উপজেলায় লুটপাট চালানো হয়েছে-এমনও অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই।

এ আসনে এখন আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ব্যাপক বিজয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে আর জাতীয় পার্টি নয়, নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে খাটতে চান তৃণমূলের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এর আগে বর্তমান এমপি নুরুলকে ‘জনবিচ্ছিন্ন’ আখ্যা দিয়ে তাকে এলাকায় একাধিকবার অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তারা।

এসব কারণে বিগত কয়েকমাস আদমদিঘী উপজেলায় যেতে পারেননি এমপি। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ- আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে একজন যুবলীগ নেতা খুন হওয়ার পর আসামিদের এমপি হোস্টেলে নিয়ে আশ্রয় দিয়েছেন নুরুল ইসলাম।

এমপি নুরুল এ অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে বলেন, বাদী পক্ষকে নিয়ে কিছু দিন আগেও আমি একটি রাস্তা উদ্বোধন করেছি।

সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে খুব অল্প ভোটে হেরেছিলেন রাশেদুল ইসলাম রাজা। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘অন্তর্দ্বন্দ্বে খুনের ঘটনা ঘটলেও এমপি খুনিদের আশ্রয়দাতা। এ কারণে তাকে এলাকায় নিষিদ্ধ করেছিলাম। এলাকায় তাকে আর দেখা যায়নি।

আদমদিঘী উপজেলা সদরের বাজারে কাঠমিস্ত্রি মোকাম্মেল বাংলানিউজকে বলেন, এমপিকে শেষ কবে এখানে দেখেছিলাম তা মনে নেই।

আরেকটি দোকানে দোকানদার পারভেজ বলেন, এমপির ছায়াও দেখিনি আমি। দোকানদার পারভেজ বলেন, এমপির ছায়াও দেখিনি আমিগত ৮ জানুয়ারি খুন হন সান্তাহার ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ ২ জন।  এই শফিকুল হত্যার আসামিদের আশ্রয় দিয়েছেন এমপি –এ অভিযোগ করেন শ্রমীক লীগ নেতা রাজা।

এমপি নুরুল ইসলামের কাছে এ অভিযোগ শোনানোর পর তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এসব বলবেই। আগামী নির্বাচনে প্রাথী হওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী আমি।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান খান সেলিম বলেন, এমপির কোন প্রকল্পের ২০ ভাগ কাজও হয়নি। এক লাখ টাকার কোন প্রকল্প নিতে হলে তার ছেলেকে দিতে হবে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার। আবার ৫০ হাজারের অর্ধেক টাকার কাজ হবে। ’
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দু’দিন আগে এমপির ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে দুলু নামে একজন রাস্তার পাশের সরকারি গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলো। পুলিশ ও বন বিভাগ সেগুলো উদ্ধার করেছে। এই দুলু মাদক ও ইয়াবা বিক্রি করে।

এদিকে, আদমদীঘিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা চান আগামীতে তাদের প্রার্থী হবেন উপজেলা আওযামী লীগ সভাপতি আনসার আলী মৃধা।  মৃধার পক্ষে, এরই মধ্যে অসংখ্য পোস্টার সাঁটানো দেখা গেছে। মৃধা গত নির্বাচনে নেত্রীর নির্দেশে প্রার্থী হননি। তবে এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে বিএনপি প্রার্থীর ভোটের কাছাকাছি ভোট পেয়েছিলেন। তাকে এখানে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আর দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পছন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সেলিম। তিনি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা। বিএনপি-জামায়াতের বার বার হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি।  
এই দুই প্রার্থীর নাম উপজেলা জুড়ে শোনা গেছে। যাকে কেন্দ্র মনোনয়ন দেবেন তিনিই প্রার্থী হবেন বলে দু’জনই জানিয়েছেন।
মিজানুর রহমান এলাকায় অবস্থান করে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।  আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থী ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে এলাকায় আরও জোরালোভাবে নামবেন বলেও জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৭
এসএ/এএটি/জেডএম

**স্বপনে পুড়বে আওয়ামী লীগের কপাল!

**নওগাঁ সদরে দোদুল্যমান আওয়ামী লীগ-বিএনপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad