ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিন বানালেন আগরতলার রতন কুমার

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২০
স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিন বানালেন আগরতলার রতন কুমার স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিনের সামনে ইঞ্জিনিয়ার রতন কুমার দাস। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): বিশ্বজুড়ে দিন দিন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে একটি অত্যাধুনিক স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিন উদ্ভাবন করেছেন ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার দক্ষিণ জয়নগর এলাকার বাসিন্দা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রতন কুমার দাস।

ইঞ্জিনিয়ার রতন কুমার দাস বাংলানিউজকে জানান, তার বানানো ওই মেশিনটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে সক্ষম।

তিনি জানান, তার স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিনের টানেলে যখন কোনো লোক প্রবেশ করবেন তখন মেশিনটি নিজে থেকে সক্রিয় হবে।

সাত সেকেন্ড ধরে ওষুধ স্প্রে করতে থাকবে। ফলে টানেলের ভেতর যাওয়া লোক সম্পূর্ণভাবে যেকোনো ধরনের জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবেন। অন্য সব স্যানিটাইজার টানেলের সঙ্গে তার তৈরি এই টানেলের অনেকগুলো পার্থক্য রয়েছে। বাজারে পাওয়া বাকি টানেলগুলো থেকে অনেক বেশি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন তার তৈরি টানেলটি বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রথমত এখন যেসব স্যানিটাইজার টানেল পাওয়া যায় এগুলো পরিচালনা করার জন্য একজন লোক নিযুক্ত করতে হয়। যখন কোনো ব্যক্তি টানেলের মধ্য দিয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ স্যানিটাইজ হতে চান তখন অন্য ব্যক্তিকে সুইচ টিপে টানেলের স্যানিটাইজার মেশিনকে চালু করতে হয়। কিন্তু তার তৈরি টানেলটিতে অত্যাধুনিক সেন্সর লাগানো থাকায় কোনো মানুষের ভেতর প্রবেশ করা মাত্রই নিজে থেকেই মেশিনটি চালু হয়ে যায় এবং ৭ সেকেন্ড ধরে স্প্রে করতে থাকবে। চাইলে এই স্প্রে করার সময় বাড়ানো এবং কমানো সম্ভব বলেও জানান তিনি।

তার তৈরি মেশিনটির দ্বিতীয় সুবিধা হলো এটি থেকে স্যানিটাইজার স্প্রে করা হয় পানির উচ্চ চাপের পাশাপাশি বায়বীয় চাপের মাধ্যমে কাজ করে। ফলে এই মেশিন থেকে যে কেমিক্যালগুলো বের হয়, এগুলো কুয়াশার মতো ছড়িয়ে পড়ে মানুষের শরীরে। তাই জামা কাপড়সহ হাতে থাকা কাগজপত্র পানিতে ভিজবে না। অথচ বর্তমানে বাজারে যেসব স্যানিটাইজেশন টানেল রয়েছে এগুলোতে শুধুমাত্র উচ্চচাপে কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিকে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। ফলে যখন কেউ এসব টানেলের মধ্যে এগিয়ে স্যানিটাইজ হন তখন তাদের জামা কাপড়ে একটা স্যাঁতস্যাঁতে ভাব অনুভূত হয়।

মেশিনটি বানাতে কতদিন সময় লেগেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রায় সাতদিন সময় লেগেছে। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার রুপি। মেশিনটি সম্পূর্ণভাবে তার মস্তিষ্কপ্রসূত তাই তিনি এর তৈরি যন্ত্রাংশ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো কিছু বলছেন না।

তার আরও দাবি, এই মেশিনটি কোনো প্রতিষ্ঠান স্থাপন করলে এর নিয়মিত পরিচর্যা কম করতে হবে। কারণ এই মেশিন থেকে কুয়াশার মতো কেমিক্যাল অন্য মেশিনের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ কেমিক্যালের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া একজনকে স্যানিটাইজ করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেশিন কি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে বিদ্যুৎ কম খরচ হবে অথচ বাজারে প্রচলিত মেশিনগুলোকে পরিচালনা করার জন্য একজন লোকের প্রয়োজন হয় এক্ষেত্রে তাও লাগবে না। সবমিলিয়ে তার তৈরি অত্যাধুনিক মেশিনটি বেশি সুবিধাযুক্ত।

এখন দেখার বিষয় ইঞ্জিনিয়ার রতন কুমার দাসের তৈরি মেশিন কিনতে ত্রিপুরার সরকার-বেসরকারি সংস্থা আগ্রহ দেখান কিনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২০
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।