ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

ভারতজুড়ে এনআরসি পরিকল্পনায় ত্রিপুরায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
ভারতজুড়ে এনআরসি পরিকল্পনায় ত্রিপুরায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ লোকসভায় বলেছেন, দেশজুড়ে নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) চালু করা হবে। তার এ মন্তব্যে ভারতজুড়ে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এ বক্তব্যের সমর্থন করলেও অনেকেই এর ঘোর বিরোধিতা করছেন।

অমিত শাহ’র মন্তব্য ঘিরে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলেও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছে।

 

সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর অমিত শাহের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিজেপি সরকারের এ সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি। বিজেপি ধর্মের ভিত্তিতে দেশের মধ্যে রাজনীতি করার খেলায় মেতেছে। তাদের এ ঘৃণ্য রাজনীতির কারণে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা আজ বড় প্রশ্নের সম্মুখীন। এভাবে একটি বিশেষ ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনীতি করার ফলে ভারতের দীর্ঘদিনের কৃষ্টি-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একসঙ্গে বসবাসের যে পরিবেশ রয়েছে তা বিঘ্নিত হবে।

পবিত্র কর আরও বলেন, ভারতের বর্তমান বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ। দেশ ক্রমশ আর্থিক মন্দার দিকে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতেই বিজেপি এমন রাজনীতির খেলায় মেতেছে। আমরা কোনো ভাবেই বিজেপির এ রাজনীতি মানবো না, এবং এর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুলব।

ত্রিপুরা রাজ্যের অপর বিরোধী দল কংগ্রেসও অমিত শাহর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছে। রাজ্যের কংগ্রেস’র সহ-সভাপতি তাপস দে বাংলানিউজকে জানান, তারা প্রথম থেকেই এনআরসি’র বিরোধিতা করে আসছে। যেখানে দেশে ভোটার তালিকা আছে, সেখানে এনআরসি’র প্রয়োজনীয়তা নেই। তাদের দল ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। এর বিপরীতে বিজেপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে।  

এদিকে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতারা আগে ত্রিপুরায় এনআরসি’র বিরুদ্ধে থাকলেও অমিত শাহ’র মন্তব্যের পর নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছে।  

রাজ্যের বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য জানান, এনআরসি ইস্যুতে তারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দেবেন তা মনবেন।  

এছাড়া রাজ্যের ছাত্র সংগঠন ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফেডারেশন অমিত শাহর মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে।  

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুনীল দেববর্মা বাংলানিউজকে জানান, তারা প্রথম থেকেই দেশব্যাপী এনআরসি চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। অবশেষে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশ্বাস দেওয়ায় তাকে ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে ভারত সরকারের কাছে আবেদন নিউ সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিলটি যেন প্রত্যাহার করা হয়। তা নাহলে এনআরসির কোনো গুরুত্ব থাকবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯ 
এসসিএন/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।