ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

রেশন বন্ধ, ৪ ব্রু জনজাতির মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৯
রেশন বন্ধ, ৪ ব্রু জনজাতির মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ

আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর জেলায় সাতটি শিবিরে অবস্থান করছেন প্রায় ৩৭ হাজার ব্রু জনজাতির মানুষ। গত এক মাস আগে সেখানে রেশন বন্ধ করে দিয়েছে ভারত সরকার। এর কারণে ৪ ব্রু জনজাতির মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে সীমান্তে ব্রু জনজাতির মানুষেরা বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) থেকে ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্ত সড়ক অবরোধ করে রাখলে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা।

বুধবার (০৬ নভেম্বর) দেখা যায়, ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তের পথ অবরোধের কারণে ভোগান্তি পড়েছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, ১৯৯৭ সালে মিজোরাম রাজ্যে সংঘর্ষের জেরে প্রায় ৩৭ হাজার ব্রু জনজাতির মানুষ ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর জেলায় সাতটি শিবিরে অবস্থান করছেন।

তাদের ত্রিপুরা সরকার এবং মিজোরাম সরকারের যৌথ সিদ্ধান্তক্রমে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিকবার আবেদন জানালেও নানা কারণে ব্রু জনজাতির মানুষেরা ফিরছেন না বলে অভিযোগ। এ কারণে গত একমাস ধরে ভারত সরকার তাদের রেশন সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে।

রেশন সরবরাহ বন্ধ করার কারণে এখন পর্যন্ত চারজন ব্রু জনজাতি অংশের মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। পুনরায় রেশন সরবরাহের দাবিতে ৩১ অক্টোবর থেকে সড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা।

তাদের দাবি, সরকার পুনরায় রেশন সরবরাহ শুরু করলে তারা ফিরে যাওয়ার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করবে।

এদিকে ব্রু জনজাতির মানুষদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্যের জনজাতি অংশের মানুষের ঘোষিত রাজা তথা ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন। তিনি বলেন, মিজোরাম সরকার যদি ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থানরত মিজোরাম থেকে আসা ব্রু জনজাতি অংশের মানুষকে ফিরিয়ে নিতে না চায় তবে ত্রিপুরা রাজ্যে জমি কিনে তাদের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া হবে।

আগরতলা থেকে প্রায় ২১৭ কিমি দূরে মিজোরাম এবং ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী আশা পাড়া এলাকায় ৭দিন ধরে পথ অবরোধ করে বসে থাকা ব্রু জনজাতির মানুষদের বুধবার (০৬ নভেম্বর) এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

তিনি বলেন, ভারতের সংবিধানে উল্লেখ আছে কোনো মানুষকে তার খাদ্য থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তারা যদি বিদেশি নাগরিক হয়ে থাকেন এবং ভারতে অবস্থান করেন তবে তাদের খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। ব্রু জনজাতির মানুষ পরিস্থিতি শিকার হয়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে এসেছেন। এই অবস্থায় ভারত সরকার তাদের খাবার সরবরাহ বন্ধ করেছে তা উচিত নয়।

‘সরকার যেন তাদের আবার খাবার সরবরাহ করে এই জন্য ত্রিপুরা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করা হবে। ত্রিপুরা সরকার এবং মিজোরাম সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হবে। যারা যারা নিজ ইচ্ছায় মিজোরাম রাজ্যে ফিরে যেতে চায় তাদের যেন সুষ্ঠুভাবে নিয়ে যাওয়া হয়। আগেও ব্রু জনজাতির মানুষকে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আগামী দিনেও তাদের আরও খাবার-দাবার কিনে দেওয়া হবে। ’

চার জনের মৃত্যুর পর এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষোভে ফুঁসছেন ব্রু জনজাতির মানুষ। অপরদিকে পরিস্থিতি যেন খারাপ না হয় এর জন্য সীমান্ত এলাকায় প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
এসসিএন/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।