ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

সুস্থভাবে বাঁচার দিশা দেখাচ্ছে ত্রিপুরার জৈবগ্রাম

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯
সুস্থভাবে বাঁচার দিশা দেখাচ্ছে ত্রিপুরার জৈবগ্রাম বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছেন জৈবগ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা ফসল খেয়ে একদিকে যেমন মানুষের শরীরে নানা ধরনের রোগব্যাধি হচ্ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশও। একারণে রাসায়নিক সার-কীটনাশকের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো ও কৃষকদের জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। এরমধ্যে বড় পদক্ষেপ হলো- একটি গ্রামকে জৈবগ্রাম হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে।

রাজ্যের পশ্চিম জেলার একটি গ্রাম ব্রজেন্দ্রনগর। জৈবগ্রাম ঘোষণা করা এ এলাকার দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ দফতরের অধীনে জৈবপ্রযুক্তি বিভাগ।

এতে আর্থিক সহায়তা করছে ভারত সরকারের খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান সংস্থার ত্রিপুরা শাখা।

জৈবগ্রাম তৈরির পরিকল্পনা যার হাত ধরে, তার নাম অঞ্জন সেনগুপ্ত। সম্প্রতি জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের এ জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।  

অঞ্জন সেনগুপ্ত জানান, তার স্বপ্নের প্রকল্প জৈবগ্রাম ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। বর্তমানে তিনি তিনটি জৈবগ্রাম নিয়ে কাজ করছেন। এর মধ্য অন্যতম ব্রজেন্দ্রনগর। এ গ্রামে ৩৫টি পরিবারের মোট ৫৭ জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। তাদের বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এলইডি বাল্ব, ফ্যান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বছরে দু’বার জমিতে দেওয়ার জন্য জৈব সার, কীটনাশক, স্প্রে মেশিনসহ অন্য উপকরণ দেওয়া হচ্ছে।  

প্রতি পরিবারকে দু’টি করে উন্নত প্রজাতির ছাগল, ১৫টি পরিবারকে মাশরুম বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ চাষের সামগ্রী, ১২টি পরিবারকে একটি করে মৌমাছিসহ বাক্স, মধু সংগ্রহের উপকরণ ও আটটি পরিবার যাদের গরু আছে- তাদের গোবর থেকে ব্যায়োগ্যাস তৈরির উপকরণ দেওয়া হয়েছে।

মাশরুম-মৌমাছি চাষ করে সাবলম্বী হয়েছে পরিবারগুলো।  ছবি: বাংলানিউজ

জানা যায়, মাশরুম বিক্রি করে প্রতি মাসে প্রায় আড়াই হাজার ও মধু বিক্রি করে প্রতিটি পরিবারের আয় হচ্ছে দুই হাজার রুপি। গোবর থেকে উৎপাদিত বায়োগ্যাস ব্যবহারের ফলে রান্নায় গ্যাসের সিলিন্ডারের প্রয়োজন পড়ছে না। দৈনিক প্রায় ১৬ লিটার বায়োগ্যাসের বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলো চাষের কাজে সার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।  

এছাড়া, পরিবারগুলোকে অতিরিক্ত আয়ের জন্য মুরগির ছানা ও মাছের পোনা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে গ্রামের মানুষ উৎসাহভরে এসব জৈবপ্রযুক্তি গ্রহণ করেছেন বলেও জানান জৈবপ্রকৌশলী অঞ্জন সেনগুপ্ত।

তার তদারকিতে থাকা আরও দু’টি জৈবগ্রাম হচ্ছে সিপাহিজলা জেলার মধুপুর ও পশ্চিম জেলার ইছামোয়া। কিছুদিন আগে এ দু’টিকেও জৈবগ্রাম ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামবাসী শিগগিরই এ থেকে সুবিধা পাওয়া শুরু করবেন বলে জানান তিনি।  

ত্রিপুরার অন্তত ১০০টি গ্রামকে জৈবগ্রাম হিসেবে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৯
এসসিএন/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।