ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

শীত না এলেও গরম পোশাক নিয়ে শহরে হাজির ভুটানিজরা

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
শীত না এলেও গরম পোশাক নিয়ে শহরে হাজির ভুটানিজরা বাম থেকে ভুটানী মার্কেট ও মার্কেটে আসা এক নারী পোশাক দেখছেন। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেছিলেন ‘এসেছে শরৎ হীমের পরশ লেগেছে হাওয়ার পরে...। কিন্তু আধুনিক নগর সভ্যতা, উষ্ণায়ন এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য আজ অনেকটাই অসঙ্গতিপূর্ণ। 

শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত চলে এসেছে কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলাসহ তার আশপাশে শীতের দেখা নেই। আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুসারে তাপমাত্রার পারদ এখনো ৩২ ডিগ্রি থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত ওঠেছে।

তাই এই এলাকায় এখনো পুরোদমে গরম রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে শীতের অনুভূতি পেতে নভেম্বর শেষ হবে।  
 
শহরে শীতের দেখা না মিললেও এরই মধ্যে গরম জামা কাপড়ের পসরা নিয়ে চলে এসেছেন ভুটানের ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছরের মতো এবছরও তারা রাজধানীর শকুন্তলা রোডে অস্থায়ী শেড তৈরি করে চালু করেছেন মার্কেট। এদের পূর্বপূরুষরা সবাই এক সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটানের বাসিন্দা হলেও তাদের কেউ এখন ভারতের হিমাচল প্রদেশ, দার্জিলিং বা ব্যাঙ্গালুরুর স্থায়ী বাসিন্দা এরপর তারা ভুটানিজ নামে পরিচিত এবং নিজেকে ভুটানি হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন বলে বাংলানিউজকে জানান। তবে কিছু ব্যবসায়ী ভুটান থেকেও এসেছেন। তারা ভুটিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।

রোববার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে আগরতলার ভুটানি মার্কেটে গিয়ে দেখা গেলো দোকানিরা শূন্য থেকে বড় সব বয়সী পুরুষ ও নারীর শীতের নানা ধরনের গরম জামা কাপড় সাজিয়ে রেখেছেন।  

টিনলে সুনজুম নামে এক নারী ব্যবসায়ী জানান, গত ১০ বছর ধরে শীতের মৌসুমে আগরতলায় ব্যবসা করতে আসছেন। এ বছর দোকান শুরু করেছেন মানুষও আসছেন তবে ব্যবসা এখনো তেমনভাবে শুরু হয়নি। গত বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি শীত পড়তে শুরু করেছিলো তখন ব্যবসাও ভালো হয়েছিলো। তাই এবছরও আশা করছেন জাঁকিয়ে শীত নামলে ব্যবসা ভালো হবে।  

ভুটানী মার্কেটে দোকানে বসে আছেন বিক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজতেঞ্জিং কালদেন জানান, গত বছর ব্যবসা ভালো হয়েছিলো, এ বছর কেমন হবে তা বলতে পারছেন না তবে আগের বছরগুলোর কথা মাথায় রেখে আশা করছেন এ বছরও ব্যবসা ভালো হবে।  

গত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের পোশাকের দাম বেড়েছে কিনা- এর উত্তরে তিনি জানান জ্বালানি তেলের দাম ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির বিষয়টি হিসেব করে পণ্যের দাম সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তা খুব বেশি নয় বলেও জানান তিনি। কারণ হিসেবে তিনি জানান তারা তিন মাস এখানে ব্যবসা করবেন এই হিসেব করে আসেন। বিক্রি করতে আনা পণ্য তারা ফিরিয়ে নিতে চান না  কারণ তাতেও আলাদা খরচ আছে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে তারা পণ্যের দাম নির্ধারণ করেন।
 
ভুটানি মার্কেট চালু হয়েছে শুনে পরমা দেববর্মা নামে এক নারী এসেছেন সেখানে।  

তিনি জানান, ভুটানি মার্কেটে খুব সুন্দর সুন্দর জিনিস পাওয়া যায়। গত বছরও এই বাজার থেকে তিনি পোশাক কিনেছিলেন। এবছরও দেখতে এসেছেন, পছন্দ হলে কিনবেন।  

আরো এক ক্রেতা শঙ্কর চন্দ্র দেব জানান, এই মার্কেটে এক জায়গার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পোশাক দেখতে পাওয়া যায়। কম দামে মোটামুটি ভালো পোশাক পাওয়া যায় তাই তিনি প্রতি বছর এখানে আসেন। সব মিলিয়ে জাঁকিয়ে শীত শুরুর জন্য এবং ক্রেতাদের ভিড়ের অপেক্ষায় পসরা সাজিয়ে অপেক্ষা করছেন বিক্রেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৮
এসসিএন/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।