ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ট্রাইব্যুনাল

ফেনীর ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৯
ফেনীর ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ মো. আবু ইউসুফ, তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তজু ও নুর মোহাম্মদ ওরফে নুর আহমদ।

ঢাকা: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ফেনীর তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এটি তদন্ত সংস্থার ৭০ তম প্রতিবেদন।

বৃহস্পতিবার  (৩০ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক মো. হান্নান খান।

তিন আসামির মধ্যে একজন বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালক।

তিন আসামি হলেন- ফেনী সদরের মজলিশপুরের তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তজু (৬৭), বরইয়া এলাকার মো. আবু ইউসুফ (৭১) ও উত্তর গোবিন্দপুর এলাকার নুর মোহাম্মদ ওরফে নুর আহমদ (৭৩)।

তিনজনের মধ্যে তোফাজ্জল ও ইউসুফ পলাতক। নুর মোহাম্মদকে বর্তমান ঠিকানা নীলফামারী থেকে চলতি বছরের ২০ মে গ্রেফতার করা হয়।

নথি থেকে জানা যায়, তোফাজ্জল ১৯৭১ সালের আগে জামায়াতের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রসংঘের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ফেনী সদরের রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি শিল্পপতি ও এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালক ছিলেন। আবু ইউসুফ ও নুর মোহাম্মদ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতকর্মী হিসেবে ফেনী সদরের রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। বর্তমানে আবু ইউসুফ ও নুর মোহাম্মদ জামায়াতের সঙ্গে জড়িত।

২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ফেনী সদর থানার ফকির হাট বাজার এলাকায় আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধ করেন তারা।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোট দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এক. ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল রাজাকার তোফাজ্জলসহ ৭ থেকে ৮ জন সশস্ত্র রাজাকার ফেনী সদরের ফকির হাট বাজারে আবুল হোসেনের দোকানে আক্রমণ করেন। তোফাজ্জল তার হাতে থাকা রাইফেল দিয়ে উত্তর ধলিয়ার গোলাম রাব্বানীকে গুলি করে আহত করে ও আবুল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেন। আসামিরা ফকিরহাট বাজারে ১০ থেকে ১৫টি দোকান লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করেন। তারপর তোফাজ্জল আবুল হোসেনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার দোকানের জলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করেন।

দুই. ১৯৭১ সালের ১০ আগস্ট রাত ১০টার দিকে রাজাকার আবু ইউসুফসহ ৫ থেকে ৬জন সশস্ত্র রাজাকার উত্তর গোবিন্দপুরের আব্দুর রউফ মেম্বারের বাড়িতে লুটপাট করেন। রাজাকার তোফাজ্জল, ইউসুফ, নুর মোহাম্মদসহ অন্য রাজাকাররা উত্তর গোবিন্দপুরের নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালি ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক শামছুল হক, আব্দুল হক, মুজিবুল হক (বর্তমানে মৃত) ও আব্দুর রউফকে (বর্তমানে মৃত)  নিজ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে অমানবিক নির্যাতন করেন। একইদিন রাত একটার দিকে রাজাকার তোফাজ্জল, রাজাকার আবু ইউসুফ, রাজাকার নুর মোহাম্মদসহ ৪/৫ জন সশস্ত্র রাজাকার উত্তর গোবিন্দপুরের আব্দুল ওহাবকে আটক করেন। পরে রাজাকার তোফাজ্জলের নির্দেশে রাজাকার ইউসুফ তাকে গুলি করে হত্যা করেন। এছাড়া আটকদের কালিদহ বড়দাহ প্রসন্ন রায় জমিদার বাড়ি রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আটক রেখে তাদের অমানুষিক নির্যাতন করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৯
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ট্রাইব্যুনাল এর সর্বশেষ