ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ট্রাভেলার্স নোটবুক

মেঘ এসে ছুঁয়ে যায় নীলাম্বরির কোলে

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
মেঘ এসে ছুঁয়ে যায় নীলাম্বরির কোলে পাহাড়ের কোলে নীলাম্বরি রিসোর্ট। ছবি: আসিফ আজিজ

বান্দরবান: নীল আকাশে নীল চাঁদোয়া, তার নিচে সবুজে ঘেরা নীলঘর। তারও নিচে সাদা মেঘের ভেলা। নীলাচলের পাহাড়চূড়া। সেখান থেকে নেমে যাওয়া ঢালে ঝুলে আছে নীল নীল ঘর। ঘরের খোলা বারান্দায় সকাল কিংবা সাঁঝে মেঘ ছুঁয়ে যায় শরীর-মনজুড়ে। 

এটাই নীলাম্বরি। বান্দরবানের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্পট নীলাচলের একটি অনন্যসাধারণ রিসোর্ট।

জেলা প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত হয় এটি।  

মেঘে ঢাকা নীলাম্বরি।                                          ছবি: আসিফ আজিজ

বান্দরবান সদর থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরের হাজার ফুট উচ্চতায় নীলাচল। জেলা প্রশাসনের পর্যটন নিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে আরও মোহনীয় হয়ে উঠছে জনপ্রিয় এ স্পটটি। নীলগিরির পর সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভিড় জমান এখানে। শহরের কাছাকাছি হওয়ায় যাতায়াতেও সুবিধা বেশি।  

শুরুর দিকে অনন্য সুন্দর এ জায়গাটিতে থাকার ব্যবস্থা না থাকায় আফসোসে ভুগতেন পর্যটকরা। এখন সেটিও পূরণ হয়েছে। কয়েক বছর ধরে নীলাচল পাহাড়ের একটি ঢালে তৈরি হয়েছে তিনটি দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট। রুম রয়েছে ছয়টি। ইজারায় চলছে রিসোর্টগুলো।  

নীলাচলই একমাত্র পাহাড় যেখান থেকে দাঁড়িয়ে পুরো বান্দরবান শহর পাখির চোখে দেখা যায়। আশপাশের ভিউও চমৎকার। প্রশাসন পর্যাপ্ত বসার জায়গা, শিশুদের জন্য খেলার ব্যবস্থাসহ কয়েকটি সুদৃশ্য ভিউ পয়েন্ট তৈরি করে দিয়েছে।

আর মেঘ দেখার জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা পুরো বান্দরবানে খুব কম আছে। বিশেষ করে বর্ষা ও শরতে সত্যিকারের মেঘের সমুদ্র দেখতে হলে তাকে অবশ্যই আসতে হবে নীলাচলে।  

পাহাড়ের কোলে নীলাম্বরি রিসোর্ট।  ছবি: আসিফ আজিজ

আর নীলাম্বরি রিসোর্ট হতে পারে অসাধারণ সে দৃশ্য উপভোগের মোক্ষম জায়গা। এ রিসোর্ট থেকে পাহাড়ে ভোরের সূর্যোদয় উপভোগ করতে পারবেন। সূর্যাস্তও তাই। আচমকা এক ঝাপটা শীতল মেঘ রিসোর্টে এসেই ভিজিয়ে দেবে আপনাকে। প্রতিটি রিসোর্টে রুম রয়েছে দু’টি করে। প্রতিটি রুমের সঙ্গে রয়েছে অ্যাটাচ বাথ ও বারান্দা। বারান্দায় বসেও সৌন্দর্যের ডালি খুলে বসা পাহাড় দেখতে পারবেন।  

বিদ্যুৎ, ঠাণ্ডা-গরম পানি, সার্বক্ষণিক রুম সার্ভিস, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিত্যসঙ্গী এ রিসোর্টে। একসময় রাতে থাকার ব্যবস্থা থাকলেও পর্যটকদের খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হতো। এখন সে অসুবিধাও নেই। রিসোর্টের ঠিক ওপরেই রয়েছে উন্নতমানের রেস্টুরেন্ট। দোতলাবিশিষ্ট রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার খেতে খেতেই দেখতে পারবেন পাহাড়ের সৌন্দর্য। তবে খাবারের জন্য অবশ্যই আগে অর্ডার করতে হবে।

নীলাম্বরিতে প্রিয়জনের সঙ্গে থাকতে প্রতিরাতের জন্য ভাড়া গুনতে হবে ৩ হাজার টাকা। রিসোর্টের দু’টি রুম একসঙ্গে নিলে আলোচনাসাপেক্ষে কিছু কম হতে পারে। তবে থাকতে হলে প্রি-বুকিং দিয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ সারাবছরই এখানে থাকে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের আনাগোনা। বুকিং করতে যোগাযোগ করুন: সাইদুল-০১৫৫১৪৪৪০০০।

সাজানো-গোছানো নীলাম্বরি রিসোর্টের কক্ষ।  ছবি: আসিফ আজিজ

গ্রীষ্ম, শীত, বর্ষা- পর্যটকরা এখন কোনো ঋতু মানেন না। বেড়ানোটাই মুখ্য। তাই শহরের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলতে প্রিয়জনের সঙ্গে ক’টা দিন কাটিয়ে আসতে পারেন নীলাচলের নীলাম্বরি থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
এএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।